সিপ্লেন বা নৌবিমান পানি থেকে টেকঅফ করতে পারে। একইভাবে পানিতে ল্যান্ডিং করতেও সক্ষম। সমুদ্র, নদী কিংবা হাওর এলাকায় এই বিমান সহজেই চলাচল করতে পারে। যেখানে বিমানবন্দর নেই কিন্তু জলাশয় আছে সেখানে স্বাচ্ছন্দ্যে সিপ্লেন উড্ডয়ন ও অবতরণে সক্ষম। বন্যা দুর্গত এলাকায় উদ্ধার কাজে অংশ নেওয়ার জন্য সিপ্লেনকে আদর্শ বিমান বলা যায়।
ক্র্যাশ ল্যান্ডিংয়ের জন্য কখনো পানিতে ল্যান্ড করে বিমান। কিন্তু সেটা আপদকালীন সময়ে। কিছু কিছু বিমান স্বাভাবিকভাবেই পানিতে ওঠা-নামা করতে পারে। এসব বিমানকে বলা হয় সিপ্লেন বা নৌ বিমান।
বিজ্ঞাপন
নৌবিমান হচ্ছে পানি নামা এবং পানি থেকে বায়ুতে আরোহণ করে উড়তে সক্ষম এমন বিমান বা উড়োজাহাজ। এ বিমান গুলো স্হলবিমান গুলোর প্রযুক্তি থেকে তৈরি। পানিতে উঠা-নামা করতে এবং ভেসে থাকতে বিমানের চাকার বদলে প্লব (ভেলার মত) ব্যবহার করা হয়।
প্লবগুলো বায়ু ও ওজনের (পানি) ভারসাম্য রাখে ভেসে থাকার মূল ভূমিকা রাখে। এগুলো পানির পৃষ্ঠটান, ঢেউ ও বায়ু প্রবাহের সঙ্গে ভারসাম্য রেখে পানিতে নামা এবং হাইড্রো-ডায়নামিক উত্তোলন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বায়ুতে আরোহণের মূল ভূমিকায় থাকে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে হেলিকপ্টার আবিষ্কার ও উন্নত করণ এবং স্হল বিমান খাত আধুনিকায়নের কারণে নৌবিমান গুলোর চাহিদা কমতে থাকে। বর্তমান বিভিন্ন দুর্যোগকালীন সময়ে, দ্বীপে ত্রাণ ও যাত্রী বহন, সমুদ্রে অভিযান ও আমোদ-প্রমোদে নৌবিমান ব্যবহার করা হয়।[
সি প্লেন দুই ধরনের হয়। প্লববিমান ও উড়ন্ততরী। এছাড়াও প্লবের ধরন বা সংখ্যার ভিত্তিতেও এগুলো ধরন নির্ধারিত করা হয়। কোন কোন নৌবিমানে দুটি প্লব, কোন কোন বিমানে একটি প্লব থাকে।
বিজ্ঞাপন
উড়ন্ততরীগুলোতে দুইপাশে দুইটি প্লব থাকে কিন্তু বিমানের ভারসাম্য রক্ষা, ওজনের চাপ ও পানির উপর ভেসে থাকতে বিমানের দেহ পানির সাথে সংযোগ হয় । এটি প্লবের মত ভূমিকায় থাকে। কিছু কিছু নৌবিমান উভচর তথা স্থল ও জল উভয়ে উঠা-নামার প্রযুক্তি সংযুক্ত থাকে, এগুলোকে উভচরবিমান বলা হয়।
ফরাসি বিমান নকশার আলফোনস ফেনাউড সর্বপ্রথম নৌবিমানের নকশা প্রণয়ন করেন। নকশাটি নৌকার প্লব সক্ষম অংশের সাথে বিমানের দেহ ও পাখির ডানার মত ডানা সংযুক্ত করে এবং প্লব অংশটি চাকার মত বিমানের অভ্যন্তরে রাখার প্রযুক্তি। এটির বাস্তব রূপদান করা হয়নি।
অতীতে বাংলাদেশেও সিপ্লেনের ব্যবহার দেখা গেছে।
এজেড