অনেকেই কখনোই বিমানে চড়েননি। তাদের মনে বিমান নিয়ে ভীতি রয়েছে। আবার কেউ কেউ বিমানে চড়ার মুহূর্ত থেকে ভীতি কাজ করে। বিশেষ করে বিমান টেক অফ ও ল্যান্ড করার সময় যাত্রীদের অনেকেই চেয়ারের হাতল শক্ত করে দুইহাতে আঁকড়ে ধরেন। তখন তাদের হৃৎকম্প বেড়ে যায়।
বোয়িংয়ের জরিপ অনুযায়ী, অনেকেরই বিমানভীতি রয়েছে। ১৭ শতাংশ আমেরিকানদের এই ভীতি কাজ করে। যদিও এই ভীতি পুরোই অমূলক।
বিজ্ঞাপন
টেক অফ বা উড্ডয়ন নিয়ে ভীতি কাটানো সম্ভব। বিভিন্ন পন্থায় ভয় কাটানো যেতে পারে। কয়েকজন সাইকিয়াট্রিস্টের পরামর্শক্রমে ভয় কাটানোর কিছু উপায় জানানো হলো।
শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম
এমন অনেকে রয়েছেন যারা উড্ডয়নে ভয় পান। হয়তো তারা আগে কখনোই বিমানে উঠেনি বা আগে তাদের কোনো নেতিবাচক অভিজ্ঞতা রয়েছে।
ইউনিভার্সিটি অব ভার্মন্টের ক্লিনিকেল সাইকোলজিস্ট ম্যাথিউ প্রাইস বলছিলেন, ‘কেন একজন মানুষ এধরনের ভীতিতে আক্রান্ত হবেন এই নিয়ে একটা ব্যাখ্যাও নেই। তবে, এই নিয়ে বহু কারণ রয়েছে।’
বিজ্ঞাপন
এটা হয়তো বিমান বিধ্বস্ত হওয়া সম্পর্কে জানা বা বিমানে উঠলে বদ্ধ একটা পরিবেশে বন্দী থাকার জন্যেও হতে পারে’। বলেন এই মনোবিদ।
কারণ যাইহোক, উড্ডয়ন নিয়ে ভীতি যেহেতু অনেকেরই রয়েছে তাই ভীতি কাটানোর উপায় হিসেব শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়ামের কথা বলেছেন তিনি।
থেরাপি
উড্ডয়নের সময় অনেকে কানে হেডফোন গুঁজে রাখেন, কেউ দুশ্চিন্তা প্রতিরোধী ওষুধ নেন আবার কেউ ধ্যানের মাধ্যমে ঘুমিয়ে পড়ার চেষ্টা করেন। কেউ-কেউ অবশ্য অ্যালকোহলও পান করেন।
কিন্তু ভীতির মাত্রা যদি এতই বেশি হয় যে, ভয়ে আপনি একেবারে জড়োসড়ো হয়ে পড়েছেন, বিমানে উড্ডয়নই করছেন না তাহলে আপনার জন্য কিছু থেরাপি রয়েছে।
মানুষের উড্ডয়নের ভীতি দূর করবার জন্য হিপনোথেরাপি, সাইকোথেরাপি বা কগনিটিভ বিহেভিয়ারাল থেরাপি ব্যাবহার করা হয়।
ভীতির মুখোমুখি
ভীতিকে জয় করার ব্যাপারে বিশেষজ্ঞরা যে পরামর্শটি দেন সেটি হচ্ছে, যে বিষয়টিকে আপনি ভয় করেন সেই কাজটিই করার মাধ্যমে ভয় কাটানোর চেষ্টা করা।
উড্ডয়নের ক্ষেত্রেও একই পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
প্রশিক্ষণ
ভীতি কাটানোর জন্য নানান পদ্ধতির মধ্যে একটি হচ্ছে বিশেষ কোর্সে ভর্তি হওয়া। যেমন-'ফ্লায়িং উইদাউট ফিয়ার' বা নির্ভয়ে উড্ডয়ন নামে একটি কোর্স রয়েছে ভার্জিন আটলান্টিকে।
এই কোর্সে প্রশিক্ষিত পাইলট আপনার নানাবিধ প্রশ্নের উত্তর দেবেন, কেন আপনি ভয় পান বা কেন ভয় পাওয়া যৌক্তিক নয় সে বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য তারা তুলে ধরবেন।
এছাড়া যারা অযৌক্তিকভাবে চিন্তা করতে থাকেন যে, 'এই বুঝি প্লেন ক্র্যাশ হতে চললো' - তাদেরকে এই প্রশিক্ষণের প্রথম সেশনে দুশ্চিন্তা নিয়ন্ত্রনের কলা-কৌশল শেখানো হয়।
ভার্চুয়াল রিয়েলিটি বা ভিআর এর মাধ্যমে এই প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। কারণ বাস্তবের বিমানের মতই এখানে অনুভূতি হয় কিন্তু সত্যিকারের বিমানের চেয়ে এখানে খরচ কম।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা প্রায়শই বলেন যে, বিমান দুর্ঘটনার চেয়ে গাড়ি দুর্ঘটনা বা সড়ক দূর্ঘটনায় আমাদের মৃত্যুর আশঙ্কা বেশি।
এজেড