অন্যান্য যানবাহনের মতো বিমানেও জানালা থাকে। কিন্তু সেই জানালা খোলা যায় না। বাসে যেমন জানালা খুলে মাথা গলিয়ে দেওয়া যায়। বিমানে সেই সুযোগ নেই। কিন্তু কারণ কী?
এর পেছনে বৈজ্ঞানিক যুক্তি রয়েছে। মহাকর্ষের কারণে, বায়ুর অণুগুলো ভূমির কাছাকাছি ঘনীভূত থাকে। আপনি যত উপরে উঠবেন, বাতাস পাতলা হয়ে যাবে। তাই উড্ডয়নের পূর্বে বিমানের কেবিনকে চাপ দিতে হয় যাতে আমাদের অক্সিজেনের অভাব না হয়।
যুক্তিসঙ্গত তাপমাত্রা থাকার জন্য তাদের চাপে থাকতে হবে, কারণ নিম্ন-চাপের বায়ু শীতল। আপনি যখন ৩৫ হাজার ফুট ওপরে থাকবেন, তখন বাইরের তাপমাত্রা নেগেটিভ ৬০ ফারেনহাইট।
বিজ্ঞাপন
সুতরাং আপনি যদি একটি জানালা খোলেন, কেবিনের সমস্ত সংকুচিত বাতাস দ্রুত বেরিয়ে যাবে, আপনি চাপ হারাবেন। বিমানের সবাই মারা যাবেন। আর এই কারণেই আপনি প্লেনে জানালা খুলতে পারবেন না।
বিমানের জানালা নিয়ে আর একটি বিষয় জানুন, বিমানের জানালা গোলাকার হয়। এর কারণ বাতাসের চাপ। জানালা গোলাকার হলে জানালার উপরে বায়ুর চাপ সমান ভাবে ছড়িয়ে পড়ে। তাতে জানালা ভেঙে গিয়ে দুর্ঘটনার সম্ভাবনাও থাকে না। তাই বিমানের জানালা সব সময় গোলাকার হয়।
এছাড়াও বিমানের জানালায় ছোট্ট একটি ছিদ্র থাকে। এটাকে বলা হয় ব্লিড হোল। কেবিনের ভেতরে বায়ুচাপের পরিবর্তন নিয়ন্ত্রণ করার জন্য জানালায় ছোট ছিদ্র রাখা হয়।
বিমান ভ্রমণের অভিজ্ঞতা যাদের রয়েছে তারা হয়তো খেয়াল করেছেন বিমান উড্ডয়ন কিংবা অবতরণের সময় জানালার পর্দা বা শেড তুলে রাখা হয়। অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে, কেন এই কাজটি করা হয়? কেউবা ভাবেন যাত্রীদের সতর্ক করতেই হয়তো জানালা পর্দা তুলে রাখা হয়।
বিজ্ঞাপন
উড্ডয়ন আর অবতরণের সময় বিমানের জানালার পর্দা খোলার বিষয়টি কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর পেছনে জড়িয়ে রয়েছে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয়টি।

গোলযোগপূর্ণ মুহূর্তে যাত্রীদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য এবং বিমান খালি করার জন্য মাত্র ৯০ সেকেন্ড সময় পাওয়া যায়। এই সময়ের প্রতিটি সেকেন্ডই মূল্যবান। এই অল্প সময়ের মধ্যেই যেন যাত্রীদের প্রস্তুত করা যায় এবং উদ্ধারকারীরা যেন জানালা দিয়ে বিমানের ভেতরের অবস্থান দেখতে পারেন, সেজন্যই উড্ডয়ন ও অবতরণের সময় বিমানের জানালার পর্দা খোলা রাখা হয়।
এজেড

