আকাশযান যখন চলমান অবস্থায় থাকে তখন প্রতিটি মুহূর্ত কাটাতে হয় সচেতনভাবে। তবুও কখনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। বিমানে গোলযোগ দেখা দিতে পারে কিংবা আগুন লেগে যেতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে শূন্য অবস্থানে একজন পাইলট কীভাবে নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন?
আকাশে ভ্রমণকালীন দুর্ঘটনার সময় পাইলট যে উপায়ে নিজেকে রক্ষা করেন তাকে বলা হয় ‘ইজেকশন সিট সিস্টেম’। এই পদ্ধতিতে বিমানের সিটটিকে বিশেষভাবে তৈরি করা হয়। কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে কিংবা পাইলট ও ক্রুরা যদি বুঝতে পারেন বিমানটি বিধ্বস্ত হতে যাচ্ছে- তখন তারা বিমান ছেড়ে শূন্যে বেরিয়ে আসেন। এরপর প্যারাসুটের সাহায্যে ধীরে ধীরে মাটিতে নামেন।
বিজ্ঞাপন

হয়তো ভাবছেন বিমান ছেড়ে লাফ কী করে দেয়? আসলে বিমান ছেড়ে বেরিয়ে আসার জন্য তাদের লাফ দিতে হয় না। যুদ্ধবিমানের পাইলট ও ক্রুদের সিটগুলো এই ব্যবস্থার জন্য উপযোগী করেই তৈরি করা হয়। বিপদ দেখলে তারা সিটের পাশে থাকা ইজেকশন হ্যান্ডেল টান দেন। এতে প্রথমে বিমানের ছাদের অংশটি উড়ে যায়। এরপর চেয়ারটি পাইলট বা ক্রুকে নিয়ে ছিটকে বের হয়ে যায় বিমান থেকে।
চেয়ারটিকে বিমানের বাইরে বের করার জন্য রকেটের শক্তি ব্যবহার করা হয়। পাইলটকে নিয়ে বিমান থেকে কয়েক মিটার দূরে চলে যাওয়ার পর চেয়ারটি নিচে পড়ে যায় এবং একটি ইমারজেন্সি ছোট প্যারাসুট খুলে যায়। এতে গতি কমার ফলে পাইলট তার মেইন প্যারাসুট খোলার সুযোগ পেয়ে যান।

বিজ্ঞাপন
এই ইজেকশনের কাজটি খুব দ্রুত গতিতে হয়। কখনো সেটি শব্দের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি গতিতে সম্পন্ন হয়। ফলে পাইলট বা ক্রুদের আহত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তবুও বাঁচার শেষ চেষ্টা হিসেবে কাজটি করতেই হয় তাদের।
মনে করা হচ্ছে, চট্টগ্রামের দুর্ঘটনায় বিধ্বস্ত হওয়া বিমানের পাইলট এবং একজন ক্রু এভাবেই রক্ষা পেয়েছেন। ২০১৯ সালে পাকিস্তানে হামলা চালাতে গিয়ে বিমান ধ্বংস হলেও ভারতীয় পাইলট অভিনন্দন এই পদ্ধতি ব্যবহার করে রক্ষা পেয়েছিলেন।

তবে এই সিস্টেম কেবল যুদ্ধবিমান (ফাইটার, বোম্বার বা অ্যাটাক এয়ারক্রাফটেই) থাকে। যাত্রীবাহী বিমানের পাইলটদের জন্য এমন সিস্টেম নেই। তারা চাইলেও যাত্রীদের দুর্ঘটনার মাঝে রেখে ঝাঁপ দিতে পারেন না।
তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট

