শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ঢাকা

মোটরসাইকেলের গিয়ার পরিবর্তনের নিয়ম

অটোমোবাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫ মার্চ ২০২৩, ০৮:৩৮ পিএম

শেয়ার করুন:

মোটরসাইকেলের গিয়ার পরিবর্তনের নিয়ম

সড়কপথে যানজট এখন নিত্যসঙ্গী। তাই ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় সময় নষ্ট করতে হয়। এ থেকে কিছুটা পরিত্রাণ পেতে মোটরসাইকেলের বিকল্প নেই। আকারে ছোট হওয়ায় দুই চাকার এই বাহন যানজটের ফাঁকফোকর দিয়ে চলাচল করতে পারে। এতে তুলনামূলক দ্রুততম সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানো যায়। তাই মোটরসাইকেল বেছে নেন অনেকেই। কিন্তু নতুন মোটরসাইকেল চলকের ক্ষেত্রে শুরুতে বেশকিছু সমস্যায় পড়তে হয়। কারণ, বাইক চালানোর সময় একসঙ্গে অনেকগুলো কাজ করতে হয়। সেই সমস্যাগুলোর মধ্যে গিয়ার পরিবর্তন অন্যতম। প্রাথমিক অবস্থায় এই কাজটি বেশ কঠিন মনে হয়। কিন্তু এ সম্পর্কে পরিষ্কার ধারনা ও অনুশীলন করার পর এটি বেশ সহজ মনে হবে। চলুন জেনে নিই মোটরসাইকেলের গিয়ার পরিবর্তনের নিয়ম।

bike-gear-shifterমোটরসাইকেলের গিয়ার পরিবর্তনের নিয়ম জানার আগে কয়েকটি বিষয় জানতে হবে।


বিজ্ঞাপন


থ্রোটল

মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন থ্রোটল এর সাহায্যে চালু করা হয়।

ক্লাচ

ক্লাচ মূলত ইঞ্জিন নিয়ন্ত্রণ করে। এটি ধীরে ধীরে ছাড়তে থাকলে মোটরসাইকেল চলতে শুরু করে। আবার এটি চেপে ধরলে ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়।


বিজ্ঞাপন


গিয়ার শিফটার

গিয়ার শিফটার দিয়ে প্রয়োজন অনুযায়ী গিয়ার বাড়ান বা কমান যায়।

bike-gear-shifterগিয়ার পরিবর্তনের প্যাটার্ন

৫ম গিয়ার
৪র্থ গিয়ার
৩য় গিয়ার
২য় গিয়ার
নিরপেক্ষ (Neutral)
১ম গিয়ার

অধিকাংশ বাইক নির্মাতাপ্রতিষ্ঠান এই গিয়ার প্যাটার্ন অনুসরণ করে থাকে। আর যদি অন্য কোনো গিয়ার প্যাটার্ন থাকে তবে সেটির সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে। তবে ১৫০ সিসির অধিকাংশ বাইকেই এই গিয়ার প্যাটার্ন ব্যবহার করে থাকে।

প্রথম গিয়ার পরিবর্তন করবেন যেভাবে

বাইকের ক্লাচটা নিজের দিকে টেনে ধরুন। বাইক যে গিয়ারেই থাকুক না কেন, গিয়ার পরিবর্তন করুন। থ্রোটল চালু করে ইঞ্জিনকে সামনে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি দিন। থ্রোটল বাড়াবার সঙ্গে সঙ্গে ধীরে ধীরে ক্লাচ ছাড়তে থাকুন। থ্রোটল ও ক্লাচ আস্তে আস্তে ছাড়ুন। দুটি কাজই যেন একইসঙ্গে এবং একই সময়ে হয়। তাহলে বাইকটি আস্তে আস্তে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। বাইকটি যখন চলতে শুরু করবে তখন গতি বাড়াতে থ্রোটল বাড়াতে থাকুন এবং বাইক অতিরিক্ত শব্দ করার সাথে সাথে ২য় গিয়ারটি পরিবর্তন করুন। খুব দ্রুত কিংবা দেরিতে গিয়ার পরিবর্তন করবেন না।

bike-gear-shifterপরবর্তী গিয়ারগুলো ক্ষেত্রে যা করবেন

প্রথম গিয়ারের পর পরবর্তী গিয়ারগুলো পরিবর্তনের নির্দিষ্ট কোনো নিয়ম নেই। এটি বুঝে করতে হবে। ইঞ্জিনের শব্দ যখন অতিরিক্ত বেড়ে যাচ্ছে, তখন আস্তে আস্তে গিয়ার পরিবর্তন করবেন। প্রতিটি গিয়ারের একটি পয়েন্ট আছে। এরপর বাইকের পিকআপ বাড়ালেও বাইক সেই গিয়ারে তার থেকে বেশি গতি তুলতে পারে না বা ইঞ্জিন আরও বেশি শক্তি কিংবা টর্ক উৎপন্ন করতে পারে না।

বাইকটি যদি গিয়ারের সেই লেভেলে চলে যায়, তাহলে বাইকের গিয়ার পরিবর্তন করে দিতে হবে। তখনও যদি গিয়ার পরিবর্তন না করেন তাহলে তা আপনার বাইকের ভেতরের যন্ত্রপাতির ক্ষতির কারণ হতে পারে। এক্ষেত্রে বুঝতে হবে ইঞ্জিনের এই লেভেলটা আসলে কখন আসে যখন এক্সেলেরেট করার পরও ইঞ্জিন আর শক্তি উৎপন্ন করতে পারে না।

তবে খুব দ্রুত গিয়ার পরিবর্তন করা ঠিক নয়। এর ফলে ইঞ্জিনের কার্যক্ষমতা কমে যেতে পারে। যদি ইঞ্জিনের সর্বোচ্চ লেভেলে যাবার অনেক আগেই গিয়ার পরিবর্তন করেন তাহলে একসময়ে দেখা যাবে ইঞ্জিনের মারাত্মক ক্ষতি হয়ে গেছে। তাই সময় বুঝে গিয়ার পরিবর্তন করতে হবে। এক্ষেত্রে বারবার অনুশীলনের কোনো বিকল্প নেই।

গিয়ার সহজে পরিবর্তন করবেন যেভাবে

প্রথমবার গিয়ার পরিবর্তন করতে গিয়ে সমস্যায় পড়েন প্রায় সকলেই। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায়, ক্লাচ দ্রুত ছেড়ে দেবার ফলে বাইকের স্টার্ট বন্ধ হয়ে যায়। যদি ক্রমাগতভাবে থ্রোটল বাড়াতে থাকেন, তখন বাইকের সামনের চাকা উঁচু হয়ে বাইককে জোরে ঝাঁকি মারতে পারে। তাই গিয়ার পরিবর্তন করার সময় সবসময়ই ক্লাচ ও থ্রোটল একইসাথে ছাড়ার চেষ্টা করুন।

bike-gear-shifterডাউনশিফট করবেন যেভাবে

গিয়ার ডাউনশিফটের সময় ক্লাচটি প্রথমে চেপে ধরুন এবং যে গিয়ারে যেতে চাইছেন সেই গিয়ারে শিফট করুন। এই সময় খেয়াল রাখবেন যেন থ্রোটল এর পরিমাণও গিয়ার অনুযায়ী কম থাকে। অর্থাৎ যে গিয়ারে শিফট করছেন সেই গিয়ারে সর্বোচ্চ যতটুকু থ্রোটল প্রয়োজন ততটুকু ধরুন। এরপর আস্তে আস্তে ক্লাচ ছাড়ুন। তবে ক্লাচ টেনে ধরে রাখা অবস্থায় ব্রেক করবেন না। কারণ, বাইক যখন লো গিয়ারে চলে যায় তখন খুব স্বাভাবিকভাবে ইঞ্জিনের গতি সেই গিয়ারের লেভেলে চলে আসে। তখন একটি অটোমেটিক ব্রেকিং হয়ে যায় সেটাকে ইঞ্জিন ব্রেকিংও বলা হয়।

বাইক পার্কিং করবেন যেভাবে

বাইক পার্কিং করার সময় বাইকটি নিউট্রাল করে ফেলুন। কারণ, বাইকটি অন্য কোনো গিয়ারে থাকলে একটু লাফ দিতে পারে। তাই বাইক নিউট্রাল করে পার্ক করাই ভালো। এরপর, আপনি যেখানে বাইকটি রাখবেন সেখানে ভালভাবে রেখে দিন। তারপর এটার ১ম গিয়ার শিফট করিয়ে রাখুন। তাহলে বাইকের চাকা নড়াচড়া করার কোনো অপশন থাকবে না। তাই, এই পদ্ধতি কাজে লাগাতে পারেন।

এভাবে চেষ্টা করলে মোটরসাইকেলের গিয়ার পরিবর্তন করতে পারবেন সহজেই। তবে শুধু জানলেই হবে না, চর্চাও করতে হবে। অনুশীলনের মাধ্যমে সহজেই গিয়ার পরিবর্তনে অভ্যস্ত হয়ে যাবেন।

এমএইচটি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর