দুই চাকার যানবাহনের জগতে বড় সুখবর এনেছে হিরো মোটোকর্প। জনপ্রিয় অ্যাডভেঞ্চার মোটরসাইকেল হিরো এক্সপালস ২১০ এখন আগের তুলনায় অনেকটাই সাশ্রয়ী দামে পাওয়া যাচ্ছে। সম্প্রতি ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ৩৫০ সিসির নিচের মোটরসাইকেলের ওপর পণ্য ও পরিষেবা কর (জিএসটি) ২৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৮ শতাংশ করেছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে হিরোর এই জনপ্রিয় বাইকটির দাম উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে।
দাম কমেছে প্রায় ১৪ হাজার রুপি
হিরো এক্সপালস ২১০ বর্তমানে দুইটি সংস্করণে পাওয়া যাচ্ছে— বেস এবং টপ ভ্যারিয়েন্ট। আগের দাম ছিল যথাক্রমে ১ লাখ ৭৬ হাজার রুপি এবং ১ লাখ ৮৬ হাজার রুপি। নতুন জিএসটি হ্রাসের পর বেস ভ্যারিয়েন্টের দাম নেমে এসেছে ১ লাখ ৬২ হাজার রুপি, আর টপ ভ্যারিয়েন্টের দাম কমে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৭১ হাজার রুপি (এক্স-শোরুম)। অর্থাৎ ক্রেতারা এখন আগের তুলনায় প্রায় ১৪ হাজার রুপি পর্যন্ত কম খরচে বাইকটি কিনতে পারবেন।
শক্তিশালী ইঞ্জিন ও উন্নত পারফরম্যান্স
হিরো এক্সপালস ২১০-এ ব্যবহার করা হয়েছে করিজমা এক্সএমআর মডেল থেকে নেওয়া ২১০ সিসি তরল-শীতল ডিওএইচসি ইঞ্জিন। এটি সর্বোচ্চ ২৪ দশমিক ২ ব্রেক হর্স পাওয়ার (বিএইচপি) শক্তি উৎপন্ন করে ৯ হাজার ২৫০ আরপিএমে এবং ২০ দশমিক ৭ নিউটন মিটার টর্ক দেয় ৭ হাজার ২৫০ আরপিএমে। ইঞ্জিনটির সঙ্গে রয়েছে ছয়-গিয়ার ট্রান্সমিশন, যা শহর ও মহাসড়ক— উভয় রাইডেই মসৃণ গতিবিধি ও আরামদায়ক অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করে।
উন্নত চ্যাসিস ও সাসপেনশন
হিরো এক্সপালস ২১০-এর কাঠামোতে ব্যবহৃত হয়েছে শক্তিশালী স্টিল সেমি-ডাবল ক্র্যাডল ফ্রেম, যা স্থিতিশীলতা ও ভারসাম্য বজায় রাখে। সামনের চাকায় টেলিস্কোপিক ফর্ক এবং পেছনে লিংকড মনোশক সাসপেনশন যুক্ত করা হয়েছে, যার ফলে রুক্ষ বা অসমান রাস্তাতেও বাইকটি সহজে নিয়ন্ত্রণে থাকে।
১৬৮ কেজি ওজনের এই বাইকটিতে সামনে ও পেছনে উভয় দিকে ডিস্ক ব্রেক দেওয়া হয়েছে। এর সঙ্গে রয়েছে তিনটি এবিএস (অ্যান্টি-লক ব্রেকিং সিস্টেম) মোড— রোড, অফ-রোড ও র্যালি। ফলে রাইডাররা বিভিন্ন পরিস্থিতিতে সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তা পান।

আধুনিক ডিজাইন ও ব্যবহারিক সুবিধা
হিরো এক্সপালস ২১০-এ ১৩ লিটার ধারণক্ষমতার জ্বালানি ট্যাঙ্ক রয়েছে, যা দীর্ঘ যাত্রায় ঘন ঘন রিফুয়েলিংয়ের প্রয়োজন কমিয়ে দেয়। বাইকটির ডিজাইন রাগড হলেও দেখতে আধুনিক, যা এক্সপালস সিরিজের স্বাক্ষর বহন করে। শক্তিশালী বিল্ড কোয়ালিটি এবং উন্নত রাইডিং ডায়নামিক্সের কারণে এটি অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীদের কাছে বিশেষ আকর্ষণীয়।
প্রতিদ্বন্দ্বী মডেল
বাজারে হিরো এক্সপালস ২১০-এর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হলো কাওয়াসাকি কেএলএক্স ২৩0। তবে প্রযুক্তি, ফিচার ও পারফরম্যান্সের দিক থেকে হিরো এক্সপালস ২১০ অনেক বেশি উন্নত ও আধুনিক বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন: টিভিএস অ্যাপাচি মোটরসাইকেলের দাম কমল
সারসংক্ষেপ
নতুন জিএসটি হ্রাসের ফলে হিরো এক্সপালস ২১০ এখন আরও সাশ্রয়ী, পাশাপাশি এর উন্নত ইঞ্জিন, আধুনিক নকশা ও শক্তিশালী পারফরম্যান্সের কারণে অ্যাডভেঞ্চার সেগমেন্টে এটি হয়ে উঠেছে এক অনন্য বিকল্প। যারা দীর্ঘপথে ভরসাযোগ্য পারফরম্যান্স ও দারুণ রাইডিং অভিজ্ঞতা চান, তাদের জন্য হিরো এক্সপালস ২১০ নিঃসন্দেহে একটি ‘দামের তুলনায় সেরা’ মোটরসাইকেল।
এজেড

