মোটরসাইকেল চালকদের অনেকেই ছোটখাটো সার্ভিসিং নিজেই করতে আগ্রহী। এতে যেমন টাকা বাঁচে, তেমনি নিজের বাইকের যত্নও ভালোভাবে নেওয়া যায়। তবে সার্ভিসিং মানেই জটিল মেরামত নয়—নিয়মিত পরিচর্যা ও কিছু সাধারণ ধাপ অনুসরণ করলেই বাইকের আয়ু ও পারফরম্যান্স ভালো রাখা যায়। চলুন জেনে নিই সহজ ৫টি ধাপ যা আপনি ঘরেই করতে পারেন:
১. বাইক ধোয়া ও পরিস্কার রাখা
বিজ্ঞাপন
প্রথম ধাপই হলো বাইককে সবসময় পরিষ্কার রাখা। ধুলা-ময়লা, কাদা বা তৈলাক্ত অংশ পরিষ্কার না থাকলে ইঞ্জিন ও যন্ত্রাংশে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
যা করবেন:
প্রতিদিন না হলেও সপ্তাহে অন্তত ১ বার ধুয়ে নিন।
হালকা সাবান ও নরম কাপড় ব্যবহার করুন।
বিজ্ঞাপন
ইঞ্জিন অংশে পানি ঢালবেন না, বরং ভেজা কাপড় দিয়ে মুছে নিন।
২. ইঞ্জিন অয়েল পরীক্ষা ও পরিবর্তন
ইঞ্জিন অয়েল বাইকের প্রাণ। সময়মতো অয়েল না বদলালে ইঞ্জিনে ক্ষতি হতে পারে।
যা করবেন:
প্রতি ২০০০-৩০০০ কিমি পর পর ইঞ্জিন অয়েল বদলান (মডেল অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে)।
বাইকের ম্যানুয়াল অনুযায়ী সঠিক অয়েল ব্যবহার করুন।
অয়েলের রঙ কালচে হলে বুঝবেন পরিবর্তনের সময় হয়েছে।
৩. এয়ার ফিল্টার পরিষ্কার করা
বাইকের এয়ার ফিল্টার ময়লা হলে ইঞ্জিনে ঠিকমতো বাতাস পৌঁছায় না, ফলে ফুয়েল খরচ বাড়ে এবং গতি কমে।

যা করবেন:
প্রতি ২-৩ মাস পর পর খুলে পরিষ্কার করুন।
ধুলা বেশি হলে মাঝে মাঝেই ব্লোয়ার বা ব্রাশ দিয়ে ময়লা ঝেড়ে ফেলুন।
অতিরিক্ত নোংরা বা পুরনো হলে নতুন এয়ার ফিল্টার লাগান।
৪. চেইন পরিষ্কার ও তেল দেওয়া
চেইন ময়লা ও শুষ্ক হয়ে গেলে শব্দ করে, গতি কমে যায় এবং দ্রুত ক্ষয় হয়।
যা করবেন:
১০০০ কিমি পর পর চেইন পরিষ্কার করুন।
চেইন পরিষ্কারের স্প্রে বা কেরোসিন ব্যবহার করতে পারেন।
পরিষ্কারের পর উপযুক্ত চেইন লুব (তেল) লাগান।
৫. ব্রেক ও টায়ার পরীক্ষা
নিরাপদ চালনার জন্য ব্রেক ও টায়ার দুটিই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো নিয়মিত পরীক্ষা করা দরকার।
যা করবেন:
ব্রেক প্যাড বা ব্রেক শু ঘষা খাচ্ছে কিনা দেখুন।
টায়ারে ফাটল বা অতিরিক্ত ক্ষয় হয়েছে কিনা লক্ষ্য করুন।
টায়ারের বাতাসের চাপ ঠিক আছে কি না নিয়মিত চেক করুন।
আরও পড়ুন: মোটরসাইকেলে লুকিং গ্লাস কেন জরুরি
বাড়তি কিছু টিপস:
ব্যাটারির কানেকশনগুলো ঠিক আছে কি না দেখুন।
হেডলাইট, সিগন্যাল লাইট ঠিকভাবে কাজ করছে কি না যাচাই করুন।
সব বোল্ট ও নাট টাইট আছে কি না খেয়াল করুন।
নিজের বাইকের ছোটখাটো সার্ভিসিং নিজেই করলে আপনি যেমন বাইকের সঙ্গে আরও পরিচিত হবেন, তেমনি হঠাৎ যেকোনো সমস্যা হলে ঘাবড়ে না গিয়ে দ্রুত সমাধান করতে পারবেন। অবশ্য জটিল বা বড় কোনো সমস্যায় অবশ্যই বিশেষজ্ঞ মেকানিকের সাহায্য নিতে ভুলবেন না।
এজেড

