প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে হাজার হাজার মোটরসাইকেলে ইঞ্জিন ওয়েল পরিবর্তন করা হচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, সেই পুরনো তেল বা ওয়েস্ট অয়েলের কী হচ্ছে? সচেতনতা না থাকায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই তেল ফেলে দেওয়া হচ্ছে খোলা জায়গায়, ড্রেনে বা মাটিতে—যা পরিবেশের জন্য চরম হুমকিস্বরূপ।
বিজ্ঞাপন
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পুরনো ইঞ্জিন ওয়েলে থাকে বিষাক্ত কার্বন, ধাতব কণা ও রাসায়নিক পদার্থ যা পানির স্তর ও মাটিকে মারাত্মকভাবে দূষিত করে। মাত্র এক লিটার ব্যবহৃত ইঞ্জিন ওয়েল ১০ লাখ লিটার পানিকে দূষণ করতে পারে বলে জানায় পরিবেশ অধিদপ্তর।
এ ধরনের তেল যদি খোলা ড্রেন, নদী বা পুকুরে ফেলা হয়, তাহলে তা জলজ প্রাণী এবং কৃষিজমির জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হয়ে ওঠে।
কী করবেন পুরনো ইঞ্জিন ওয়েল নিয়ে?
বিজ্ঞাপন
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, মোটরসাইকেল বা যেকোনো যানবাহনের ইঞ্জিন ওয়েল পরিবর্তনের পর সেই তেল সঠিকভাবে একটি বন্ধ কন্টেইনারে সংরক্ষণ করতে হবে এবং স্থানীয় কোনো রিসাইক্লিং সেন্টার, গ্যারেজ বা ওয়ার্কশপে জমা দিতে হবে। অনেক স্বনামধন্য সার্ভিস সেন্টারই এখন পুরনো ওয়েল রিসাইক্লিংয়ের উদ্যোগ নিচ্ছে।
সড়ক পরিবহন বিশেষজ্ঞ মিজানুর রহমান জানান, দেশের বড় শহরগুলোতে পুরনো ইঞ্জিন ওয়েল ব্যবস্থাপনায় এখনো একটি সংগঠিত ব্যবস্থা নেই। তবে সচেতনতা বাড়লে গ্যারেজ বা ফুয়েল স্টেশনগুলোই এ কাজটি করতে পারে।
কী করবেন না?
ড্রেনে বা মাটিতে ফেলবেন না
নদী, খাল বা পুকুরে ফেলা একদম নিষিদ্ধ
গেট বা লোহার জিনিসে পুরনো তেল দিয়ে লুব্রিকেশনের চেষ্টা বিপজ্জনক
এটি শুধুমাত্র পরিবেশ নয়, নিজস্ব যন্ত্রাংশেরও ক্ষতি করতে পারে।
সহজ সমাধান:
পুরনো তেল রাখুন সিল বন্ধ বোতলে
স্থানীয় গ্যারেজ বা সার্ভিস সেন্টারে জমা দিন
সম্ভব হলে রিসাইক্লিংয়ের জন্য নির্দিষ্ট সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করুন
আরও পড়ুন: অকটেন বুস্টার কি মোটরসাইকেলের মাইলেজ বাড়ায়?
যত সহজে মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন ওয়েল বদলানো যায়, ঠিক ততটাই গুরুত্বপূর্ণ সেটির ব্যবস্থাপনা। পরিবেশ রক্ষা ও স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে প্রয়োজন সচেতনতা ও সঠিক উদ্যোগ। না হলে নীরবে কিন্তু স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে আমাদের প্রিয় প্রকৃতি।
এজেড