মোটরসাইকেলচালকদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো মোটরসাইকেলের রিজার্ভ ট্যাংকে কতটা জ্বালানি থাকে এবং সেটা কতদূর পর্যন্ত চালানো সম্ভব। অনেকেই ভাবেন রিজার্ভ মানেই এক-দুই কিলোমিটারের জন্য জ্বালানি, কিন্তু আসলে বিষয়টা আরও একটু বিস্তারিতভাবে বোঝা দরকার।
রিজার্ভ ট্যাংক কী?
প্রতিটি মোটরসাইকেলের জ্বালানি ট্যাংকে নির্দিষ্ট একটি অংশ থাকে যা 'রিজার্ভ' হিসেবে সংরক্ষিত থাকে। মূল ট্যাংকের জ্বালানি ফুরিয়ে গেলে এই রিজার্ভ অংশে থাকা জ্বালানির সাহায্যে বাইক কিছুটা দূর চালানো যায়।
এটি মূলত চালককে সময় দেয় যাতে সে কাছাকাছি কোনো ফুয়েল পাম্পে গিয়ে ট্যাংক আবার ভরতে পারেন।

রিজার্ভে কত লিটার জ্বালানি থাকে?
বিভিন্ন কোম্পানির বাইক ও মডেল অনুযায়ী রিজার্ভ ট্যাংকে জ্বালানির পরিমাণ ভিন্ন হয়। তবে সাধারণত যা দেখা যায়—
বাইকের ধরন অনুযায়ী রিজার্ভ জ্বালানি পরিমাণ
১০০–১২৫ সিসি বাইক ১.০ থেকে ১.৫ লিটার
১৫০–২০০ সিসি বাইক ১.৫ থেকে ২.০ লিটার
২০০ সিসির ওপরে ২.০ লিটারের কাছাকাছি বা বেশি

এছাড়া কিছু বাইকে ইলেকট্রনিক ফুয়েল ইঞ্জেকশন (ইএফআই) ব্যবস্থায় রিজার্ভ ফাংশন নেই, সেখানে বাইকে তেল কমে গেলে ফুয়েল লাইট বা ওয়ার্নিং চলে আসে।
রিজার্ভে কত কিমি চালানো যায়?
বাইক যদি প্রতি লিটার ৪০–৫০ কিমি মাইলেজ দেয়, তাহলে:
১ লিটার রিজার্ভ জ্বালানিতে চালানো যাবে প্রায় ৪০–৫০ কিমি
১.৫ লিটার রিজার্ভে যাবে ৬০–৭৫ কিমি
২ লিটার রিজার্ভে ৮০–১০০ কিমি পর্যন্ত যেতে পারেন (মডেল ও চালানোর ধরনভেদে)
তবে সতর্কতা হিসেবে বলা যায় রিজার্ভ কি চালু করার সঙ্গে সঙ্গেই তেল ভরুন। কারণ অনেক সময় রাস্তায় ফুয়েল পাম্প না পেলে সমস্যা হতে পারে।

অতিরিক্ত রিজার্ভে চালালে ক্ষতি হতে পারে?
হ্যা। দীর্ঘ সময় রিজার্ভে চালালে—
ইঞ্জিনে ময়লা তেল প্রবেশ করতে পারে, কারণ নিচে জমে থাকা অবাঞ্ছিত পদার্থ পাম্প হয়ে যেতে পারে।
ফুয়েল পাম্প ও কার্বুরেটরের ক্ষতি হতে পারে।
জরুরি অবস্থায় হঠাৎ বাইক বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে।
তাই ফুয়েল রিজার্ভে আসার পরপরই দ্রুত তেল ভরানো ভালো।
আরও পড়ুন: বর্ডারক্রস মোটরসাইকেল কী, এগুলো কেন কেনা উচিত নয়?
রিজার্ভ ট্যাংক জরুরি সিচুয়েশনের জন্য একটি সেফটি ব্যাকআপ। এটি ভুলে না গিয়ে সঠিকভাবে ব্যবহার করলে আপনি বিপদে পড়ার আগে নিরাপদে তেল ভরতে পারবেন। তবে এটি কোনো স্থায়ী সমাধান নয়—প্রতিবারই রিজার্ভে পড়ার পর তেল ভরুন এবং পূর্ণ ট্যাংক রাখার চেষ্টা করুন।
এজেড

