মোটরসাইকেল শুধু একটি বাহন নয়, অনেকের কাছে এটি একটি আবেগ। নিয়মিত ব্যবহার এবং ধুলাবালি জমে মোটরসাইকেলের সৌন্দর্য যেমন কমে যায়, তেমনি এতে তেলাপোকা, মরিচা এবং যন্ত্রাংশের ক্ষয়ও দেখা দেয়। তাই মোটরসাইকেল পরিষ্কার রাখা অত্যন্ত জরুরি। তবে সঠিক উপায়ে পরিষ্কার না করলে ক্ষতির আশঙ্কাও থেকে যায়।
নিচে মোটরসাইকেল পরিষ্কারের সঠিক উপায় ও কিছু কার্যকর টিপস তুলে ধরা হলো—
বিজ্ঞাপন
১. সময় ও স্থান নির্বাচন করুন
মোটরসাইকেল পরিষ্কারের জন্য ছায়াযুক্ত এবং সমতল জায়গা বেছে নিন। রোদে পরিষ্কার করলে পানি দ্রুত শুকিয়ে যায় এবং দাগ পড়ে।

২. ময়লা ঝেড়ে ফেলুন
প্রথমে একটি শুকনো ব্রাশ বা কাপড় দিয়ে বাইকের উপরিভাগে জমে থাকা ধুলাবালি হালকা হাতে ঝেড়ে ফেলুন। এতে পানি লাগালে কাদা হয়ে গায়ে লেগে থাকবে না।
৩. হালকা পানিতে ভিজিয়ে দিন
সারফেস ওয়াশ করার আগে বাইকটিকে হালকা পানি দিয়ে ভিজিয়ে নিন। খুব বেশি জোরে পানি ছুড়বেন না, বিশেষ করে ইঞ্জিন, ব্যাটারি, এক্সজস্ট বা ইলেকট্রিক অংশে।
৪. সঠিক ক্লিনার ব্যবহার করুন
ডিটারজেন্ট বা শক্তিশালী সাবান নয়, বাইক পরিষ্কার করার জন্য বিশেষায়িত বাইক শ্যাম্পু বা মাইল্ড কার শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। স্পঞ্জ বা মাইক্রোফাইবার কাপড় দিয়ে ধীরে ধীরে ঘষে ময়লা তুলে ফেলুন।

৫. চাকা ও চেইন আলাদাভাবে পরিষ্কার করুন
চাকা ও চেইনে কাদা বেশি জমে। ব্রাশ ব্যবহার করে আলাদাভাবে এগুলো পরিষ্কার করুন। তবে চেইনে সরাসরি পানি দেওয়া যাবে না। বরং চেইন ক্লিনার ও ব্রাশ ব্যবহার করে ময়লা তোলার পর চেইন লুব্রিকেন্ট ব্যবহার করুন।
৬. পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন
সব জায়গা ভালোভাবে ঘষার পর পরিষ্কার পানি দিয়ে বাইকটি ধুয়ে ফেলুন। খেয়াল রাখবেন, ইঞ্জিন বা ইলেকট্রিক অংশে অতিরিক্ত পানি যাতে না ঢোকে।
৭. শুকিয়ে নিন ও পলিশ করুন
সারফেস ধোয়ার পর একটি মাইক্রোফাইবার তোয়ালে দিয়ে ভালোভাবে মুছে ফেলুন। এরপর বাইকের বডিতে ওয়াক্স বা পলিশ ব্যবহার করলে এটি চকচকে ও পানি-ধুলা প্রতিরোধী হবে।
৮. নিয়মিত পরিচর্যা করুন
সপ্তাহে অন্তত একবার ধুলা ঝাড়ুন এবং মাসে অন্তত একবার পুরো বাইক ধুয়ে পরিষ্কার করুন। বর্ষাকালে মাটি-কাদা বেশি জমে, তখন পরিচর্যার ফ্রিকোয়েন্সি আরও বাড়ানো উচিত।

এসব ভুল করা যাবে না
প্রেশার ওয়াশার দিয়ে স্প্রে নয় – ইঞ্জিন বা ব্যাটারি নষ্ট হতে পারে।
বাজারের শক্ত সাবান নয় – রঙের ক্ষতি করে।
আরও পড়ুন: বর্ডারক্রস মোটরসাইকেল কী, এগুলো কেন কেনা উচিত নয়?
চেইনে পানি নয় – মরিচা ধরার ঝুঁকি থাকে।
সঠিক নিয়মে মোটরসাইকেল পরিষ্কার করলে এটি শুধু সুন্দর দেখায় না, বরং দীর্ঘস্থায়ীও হয়। পাশাপাশি যন্ত্রাংশ ঠিকভাবে কাজ করে এবং রক্ষণাবেক্ষণের খরচ কমে। তাই সময় বের করে নিজের বাইকের যত্ন নিন, এটি প্রতিদান দেবে দীর্ঘদিন ধরে।
এজেড

