মোটরসাইকেল চালকদের জন্য একটি সাধারণ কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো— ফুয়েল ট্যাংকে কতটুকু জ্বালানি ভরলে মোটরসাইকেলের পারফরম্যান্স ভালো থাকবে এবং নিরাপদ থাকবে? অনেকেই ভাবেন পুরো ট্যাংক পূর্ণ করে নেওয়াই ভালো, তবে বাস্তবে বিষয়টি এতটা সরল নয়।
মোটরসাইকেলের ট্যাংক ধারণক্ষমতা
প্রতিটি মোটরসাইকেলের ফুয়েল ট্যাংক আলাদা হয়। সাধারণত:
কমিউটার বাইক (১০০–১২৫ সিসি): ১০–১৫ লিটার
স্পোর্টস বাইক বা হাই পারফরম্যান্স বাইক: ১২–২০ লিটার পর্যন্ত ধারণক্ষমতা থাকে।
তবে এর সবটুকু জায়গা জ্বালানির জন্য নয়। কারিগরি দিক থেকে, কিছুটা ফাঁকা জায়গা থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বিজ্ঞাপন

পুরোপুরি ট্যাংক পূর্ণ না করাই ভালো কেন?
১. তাপমাত্রা ও সম্প্রসারণ:
তাপের কারণে জ্বালানি সম্প্রসারিত হয়। পুরো ট্যাংক ভর্তি থাকলে সম্প্রসারণের কোনো জায়গা থাকে না, ফলে জ্বালানি চাপ সৃষ্টি করে ট্যাংক বা ফুয়েল ক্যাপ থেকে লিক করতে পারে।
জ্বালানির প্রবাহ বিঘ্নিত হতে পারে:
অতিরিক্ত ভরা থাকলে বাইকের কার্বুরেটর বা ইনজেকশন সিস্টেমে চাপ পড়ে এবং কার্যকারিতা কমে যেতে পারে।
ওভারফ্লো ও পরিবেশ দূষণ:
পুরোপুরি ট্যাংক ভর্তি করলে কিছুটা ফুয়েল বাইরে গড়িয়ে পড়তে পারে, যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর ও দাহ্য পদার্থ হিসেবে বিপজ্জনক।
আরও পড়ুন: মোটরসাইকেলের ফুয়েল ট্যাংকে মরিচা ধরে কেন?
ট্যাংকের ভেতরে ভেন্টিলেশন প্রয়োজন:
জ্বালানির উপরে কিছুটা খালি জায়গা থাকলে ট্যাংকে বাতাস চলাচল করতে পারে, যা জ্বালানির স্বাভাবিক ব্যবহার নিশ্চিত করে।
তাহলে কতটুকু জ্বালানি ভরবেন?
৭৫% থেকে ৮৫% পর্যন্ত ট্যাংক ভরা সবচেয়ে নিরাপদ ও কার্যকর।
উদাহরণস্বরূপ, যদি বাইকের ট্যাংক ১২ লিটার ধারণক্ষমতা সম্পন্ন হয়, তাহলে ৯–১০ লিটারের বেশি জ্বালানি না ভরাই ভালো।
ভ্রমণের সময় বা দূরপাল্লার রাইডে ট্যাংকের ৯০% পর্যন্ত ভরতে পারেন, তবে তখনও ওভারফ্লো থেকে সতর্ক থাকতে হবে।

অতিরিক্ত পরামর্শ:
ফুয়েল স্টেশন থেকে জ্বালানি নেওয়ার সময় বাইক যেন দাঁড়িয়ে থাকে, কারণ কাত হয়ে থাকলে ট্যাংকের একপাশে বেশি জ্বালানি জমে যেতে পারে।
রাতে জ্বালানি না ভরাই ভালো, বিশেষ করে যদি বাইক খোলা জায়গায় থাকে, কারণ তাপমাত্রার পরিবর্তনে গ্যাস সম্প্রসারণের কারণে লিক হতে পারে।
সবসময় জ্বালানি ক্যাপ ভালোভাবে বন্ধ করুন এবং লিক বা গন্ধ থাকলে মেকানিক দেখান।
মোটরসাইকেলের ফুয়েল ট্যাংকে পুরোপুরি জ্বালানি না ভরে ৭৫–৮৫ শতাংশ পর্যন্ত ভরাই উত্তম। এতে যেমন বাইকের কর্মক্ষমতা ঠিক থাকে, তেমনি দুর্ঘটনার ঝুঁকিও কমে। জ্বালানি ভরার সময় সামান্য সচেতনতাই আপনাকে বাঁচাতে পারে বড় ধরনের ক্ষতি থেকে।
এজেড

