শহর থেকে গ্রাম- সর্বত্রই বাইক একটি জনপ্রিয় যানবাহন। সময় বাঁচানো, ট্র্যাফিক এড়িয়ে চলা এবং জ্বালানি সাশ্রয়ের জন্য অনেকেই বাইক ব্যবহার করছেন। কিন্তু একা নয়, বাইকে যাত্রা হয়ত আরও বেশি হয় ডাবল রাইডিংয়ের মাধ্যমেই, অর্থাৎ চালক ছাড়াও একজন আরোহী পেছনে বসেন। তবে ডাবল রাইডিং যদি সচেতনভাবে না করা হয়, তবে তা হতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনার কারণ।
তাই বাইকে ডাবল রাইডিং নিরাপদে করতে কিছু সতর্কতা জানা ও মানা অত্যন্ত জরুরি।
বিজ্ঞাপন
ডাবল রাইডিং নিরাপদে করার ৮টি করণীয়
১. উভয়ের জন্য হেলমেট ব্যবহার বাধ্যতামূলক করুন
বাইকের চালকের মতো পেছনের আরোহীর জন্যও হেলমেট পরা জরুরি। দুর্ঘটনার সময় সবচেয়ে বেশি আঘাত আসে মাথায়, আর তাই উভয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভালো মানের হেলমেট আবশ্যক।

বিজ্ঞাপন
২. আরোহী যেন ঠিকভাবে বসে থাকেন তা নিশ্চিত করুন
পেছনের আরোহী যেন সোজাভাবে বসেন ও চালকের পেছনে হালকা ভর দিয়ে থাকেন।
পা যেন পা-রেস্টে থাকে, বাতাসে ঝুলে না থাকে।
কখনোই হঠাৎ করে নড়াচড়া করবেন না—চালক ব্যালান্স হারাতে পারেন।
৩. ওজনের ভারসাম্য রক্ষা করুন
আরোহীর ওজন বেশি হলে মোটরসাইকেলের ভারসাম্য দ্রুত নষ্ট হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ব্রেক, মোড় ও গতিতে বাড়তি সতর্কতা নিতে হবে।

৪. আচমকা ব্রেক/ঘুরে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন
ডাবল রাইডিংয়ে বাইক নিয়ন্ত্রণ একটু বেশি সতর্কতার দাবি রাখে। হঠাৎ ব্রেক বা বাঁক নিলে পেছনের যাত্রী পড়ে যেতে পারেন বা গতি হারাতে পারেন।
৫. সিটের পরিমাণ ও গ্রিপ পরীক্ষা করুন
বাইকের সিট যদি ছোট হয়, ডাবল রাইডিং অনুপযুক্ত।
অনেক বাইকে গ্র্যাব রেল থাকে না, এতে আরোহী ঠিকভাবে বসতে পারেন না।
নিরাপদ রাইডের জন্য পর্যাপ্ত সিট স্পেস ও গ্রিপ থাকা জরুরি।
৬. উচ্চ গতিতে ডাবল রাইডিং পরিহার করুন
ডাবল রাইডিংয়ে বাইকের গতি ৪০–৬০ কিমি/ঘণ্টার মধ্যে রাখা নিরাপদ। উচ্চ গতিতে ব্রেক করলে উভয়ের জন্যই বিপদ।

৭. ট্রাফিক আইন মেনে চলুন
রাস্তা পারাপারে নিয়ম মেনে চলুন।
রং সিগন্যাল বা ওভারটেক করার সময় সচেতন থাকুন।
যাত্রী ওঠা/নামানোর সময় বাইক সম্পূর্ণ থামিয়ে রাখুন।
৮. আরোহীর অতিরিক্ত ব্যাগ, শপিং ব্যাগ বা ছাতা ঝুলিয়ে বসা এড়ান
এতে ভারসাম্য বিঘ্নিত হতে পারে এবং পিছনের চাকা বা এক্সেলারে জড়িয়ে যেতে পারে, যা দুর্ঘটনার কারণ।
যে কাজগুলো করবেন না ডাবল রাইডিংয়ে
আরোহীকে বাইকের পাশে ঝুঁকে বসতে দেওয়া
পেছনে শিশু বসালে তাকে চালকের পেছনে না ধরিয়ে রাখা
ফোনে কথা বলতে বলতে চালানো
আরোহীকে জুতা ছাড়া বা ঢিলেঢালা পোশাকে বসানো
আরও পড়ুন: মোটরসাইকেলের ব্যাটারি ডাউন হলে ইঞ্জিন স্টার্ট দেওয়ার উপায়
পরিশেষে কিছু পরামর্শ
বাইকে সর্বোচ্চ ২ জন চলার অনুমতি রয়েছে।
বাইকের ওজন ধারণক্ষমতা জেনে তবেই যাত্রী বসান।
দীর্ঘ দূরত্বে ডাবল রাইড করলে মাঝে মাঝে বিশ্রাম নিন।
রাতের যাত্রায় প্রতিফলক পোশাক ব্যবহার করুন।
ডাবল রাইডিং শুধু আরাম বা সুবিধার বিষয় নয়—এতে জড়িত নিরাপত্তা, নিয়ন্ত্রণ এবং আইন মেনে চলার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। একটু সচেতনতা আপনার ও আপনার আরোহীর জীবন বাঁচাতে পারে। তাই প্রতিটি বাইক চালকের দায়িত্ব, ডাবল রাইডিংয়ে নিরাপত্তার সব দিক নিশ্চিত করা।
এজেড

