বাংলাদেশে মোটরসাইকেল ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। অনেকেই বাইক কেনার আগে কিংবা ব্যবহার শুরুর কিছুদিন পরেই জানতে চান—‘আমার বাইক আসলে কত কিলোমিটার মাইলেজ দিচ্ছে?’ কেননা, মোটরসাইকেল কেনার সময় মাইলেজ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিবেচ্য বিষয় হলেও বাস্তব ব্যবহারে সেটা কিছুটা ভিন্ন হতে পারে।
তবে খুশির খবর হলো, আপনি খুব সহজেই নিজেই ঘরে বসেই বা রাস্তায় চালিয়ে আপনার বাইকের আসল মাইলেজ নির্ণয় করতে পারেন। এজন্য দরকার শুধু কিছু পর্যবেক্ষণ আর সামান্য হিসাব।
বিজ্ঞাপন
নিচে উল্লেখ ধরা হলো মোটরসাইকেলের মাইলেজ নির্ণয়ের দুইটি জনপ্রিয় ও সহজ পদ্ধতি:

ফুল ট্যাংক পদ্ধতি
এই পদ্ধতিটি সবচেয়ে সহজ ও নির্ভরযোগ্য। প্রথমে বাইকের ট্যাংকে পেট্রোল একদম মুখ পর্যন্ত ভরতে হবে। তারপর বাইকের ওডোমিটার রিডিং (যেখানে মোট কিলোমিটার লেখা থাকে) লিখে রাখতে হবে।
বিজ্ঞাপন
এরপর বাইক চালিয়ে ৮০–১০০ কিমি দূরত্ব অতিক্রম করুন। পরে আবার ট্যাংক পূর্ণ করুন এবং এবার কত লিটার পেট্রোল লাগল, তা লিখে নিন। এরপর সহজ একটি হিসাব:
মাইলেজ = মোট চালানো কিমি ÷ খরচ হওয়া লিটার
যেমন, আপনি যদি ১০০ কিমি চালানোর পর ২.৭ লিটার পেট্রোল দিয়ে ট্যাংক পূর্ণ করেন, তাহলে বাইকের মাইলেজ দাঁড়ায়:
১০০ ÷ ২.৭ = ৩৭.০৪ কিমি/লিটার

রিজার্ভ পদ্ধতি
এই পদ্ধতিতে প্রথমে আপনার বাইক রিজার্ভ মোডে আনতে হবে (অর্থাৎ ট্যাংকে খুব অল্প পরিমাণ পেট্রল থাকবে)। এরপর নির্দিষ্ট পরিমাণ—ধরুন ১ বা ২ লিটার পেট্রল দিয়ে বাইক চালাতে হবে যতক্ষণ না এটি আবার রিজার্ভে চলে আসে।
এই পুরো সময়টিতে আপনি কত কিলোমিটার চালিয়েছেন, তা লিখে রাখুন। এরপর মাইলেজ হিসাব করুন আগের মতো করেই।
মাইলেজ = চালানো কিমি ÷ ফুয়েল পরিমাণ
যেমন: ২ লিটার পেট্রলে যদি চালান ৭৪ কিমি, তাহলে মাইলেজ = ৭৪ ÷ ২ = ৩৭ কিমি/লিটার
আরও পড়ুন: মোটরসাইকেলের হেডলাইটের আপার ডিপারের সঠিক ব্যবহার জানেন কি?
কিছু সতর্কতা
বাইক চালানোর সময় চেষ্টা করুন একা চালাতে। অতিরিক্ত ওজন বা যাত্রী থাকলে মাইলেজ কমে যেতে পারে।
টায়ারে যথাযথ বাতাস আছে কি না, তা পরখ করে নিন।
শহরে ও হাইওয়েতে চালালে মাইলেজের তারতম্য হতে পারে—তাই একাধিক বার মেপে গড় হিসাব নেওয়াই উত্তম।
বাইক কোম্পানির দেওয়া মাইলেজ অনেক সময় বাস্তবে মিল নাও খেতে পারে। তাই নিজের বাইকের পারফরম্যান্স জানার জন্য সঠিকভাবে মাইলেজ টেস্ট করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এতে করে আপনি বুঝতে পারবেন বাইকের ইঞ্জিন ঠিকমতো চলছে কি না, কিংবা আপনার চালানোর অভ্যাস কতটা অর্থনৈতিক।
নিজের বাইকের প্রতি সচেতনতা ও যত্নই পারে দীর্ঘদিন ভালো পারফরম্যান্স নিশ্চিত করতে।
এজেড

