সাশ্রয়ী দামে মেলে তাই সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ি ও বাইকের কদর রয়েছে। কিন্তু এই কথা বৈদ্যুতিক বাহনের ক্ষেত্রে খাটে না। কেউই পয়সা বাঁচাতে ব্যাটারিচালিত সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ি ও বাইক কিনতে চান না। এমন চিত্র বিশ্বজুড়ে। মূলত একটি বৈদ্যুতিক গাড়ি ও বাইকের প্রধান দুইটি উপাদান। একটি মোটর, অন্যটি ব্যাটারি। এর মধ্যে রিকন্ডিশন বা সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ির ব্যাটারি কন্ডিশন খুব একটা ভালো থাকে না। ফলে কেউই আর সেকেন্ড হ্যান্ড ইলেকট্রিক গাড়ি, বাইক কিংবা স্কুটার কিনতে আগ্রহী হন না।
হাইব্রিড গাড়ি জীবাশ্ম জ্বালানিতে চলার সময় তার ব্যাটারি চার্জ হয়ে যায়, আলাদা করে চার্জ দিতে হয় না। সেই কারণেই বৈদ্যুতিক গাড়ির তুলনায় হাইব্রিড গাড়িতে ব্যাটারি ক্ষয় তুলনায় কম হওয়ায় সেকেন্ড হ্যান্ড বাজারে হাইব্রিডের কদর বেশি। ফলে বাজারে ক্রমেই নতুন বৈদ্যুতিক গাড়ির তুলনায় হাইব্রিড গাড়ির চাহিদা বাড়ছে। যা মারুতি এবং টয়োটার মতো হাইব্রিড গাড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলির বিক্রির পরিসংখ্যান থেকেই স্পষ্ট।
বিজ্ঞাপন
সেকেন্ড হ্যান্ড বাজারে বৈদ্যুতিক গাড়ির কদর না থাকার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বিশেষজ্ঞরা জানান, এর একটা বড় কারণ হলো বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারি লাইফ নির্ধারণ করা খুব একটা সহজ নয়। গাড়ির দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, নতুন বৈদ্যুতিক গাড়ির দামের প্রায় অর্ধেক হচ্ছে তার ব্যাটারির দাম। পুরোনো গাড়ির বডি বা চ্যাসিস-এর কতটা ক্ষয় হয়েছে বা মান কমেছে তা চিরাচরিত ইঞ্জিন চালিত গাড়ির ক্ষেত্রে যে ভাবে নির্ধারণ করা হয় সেই প্রক্রিয়া মেনেই ঠিক করা যায়।
যেকোনও মেকানিক সেটা নির্ধারণ করতে পারবেন। কিন্তু, বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারি কী অবস্থায় রয়েছে তা নির্ধারণ করতে যে যন্ত্রাংশের প্রয়োজন এবং যে প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হয় তা যথেষ্ট টেকনিক্যাল, মহার্ঘ এবং বর্তমানে সহজলভ্য নয়।
বিজ্ঞাপন
বৈদ্যুতিক গাড়ি ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারী সংস্থা ব্লুম ভেঞ্চার্সের পার্টনার অপ্রীত আগরওয়াল বলেন, 'চিরাচরিত ইঞ্জিনের ক্ষেত্রে চ্যাসিসের ডেপ্রিসিয়েশন মূল্য যে ভাবে নির্ধারণ করা হয়, বৈদ্যুতিক গাড়ির ক্ষেত্রেও সেই একই প্রক্রিয়া কাজ করে। কিন্তু, ব্যাটারির সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া মুশকিল।'
আরও পড়ুন: শাওমি এই প্রথম ইলেকট্রিক গাড়ি আনল, দাম হাতের নাগালে
এর ফলে বিপ কার্ট, ড্রুম, স্পিনি এবং ক্রেডআর-এর মতো সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ি বিক্রির প্ল্যাটফর্মে খুব অল্প বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রির জন্য নথিভুক্ত হচ্ছে। তাও কখনো-সখনো। বিপ কার্ট এবং স্পিনিতে কোনও সেকেন্ড হ্যান্ড বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রির জন্য দেওয়া হয়নি। অত্যন্ত কম চাহিদা এবং সরবরাহ এর কারণ।
দীর্ঘ ব্যবহারের কারণে ব্যাটারির কর্মক্ষমতা, ডিসচার্জ ক্ষমতা এবং গুণমান কমে যায়। যা গাড়ির মাইলেজ এবং পাওয়ার আউটপুটের উপর প্রভাব ফেলে। কাজেই বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারির কমে যাওয়া ক্ষমতা নির্ধারণের চাইতেও তা কেমন চলছে তা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। চিরাচরিত ইঞ্জিনের তুলনায় তো বটেই।
আগরওয়াল বলেন, 'ইলেকট্রো-কেমিক্যাল বিক্রিয়ার কারণে চার্জিং রেট ও কোয়ালিটি থেকে ডিসচার্জের রেট এবং গুণমান, যা গাড়ির ব্যবহারের উপর নির্ভরশীল, তা ব্যাটারি কতটা ভালো আছে তা বুঝতে কাজে লাগে।'
এজেড