পবিত্র শবে বরাতের ছুটি আজ। বন্ধ অফিস-আদালত, নেই কাজের ব্যস্ততা। তাই অবসর কাজে লাগাতে বইমেলায় নেমেছে মানুষের স্রোত। সাধারণত বইমেলা শুরুর পর থেকে সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্র ও শনিবারের অপেক্ষায় থাকেন প্রকাশকরা। কারণ, এই দিনগুলোতে সপরিবারে বইপ্রেমীরা ছুটে আসেন প্রাণের মেলায়। এদিন দুপুর গড়াতেই বইমেলা যেন এক ভিন্ন এক রূপ নিয়েছে। দর্শনার্থী ও পাঠক সমাগমে মেলা হয়ে উঠেছে উৎসবমুখর।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেল হতে বইমেলায় প্রবেশের গেটগুলো দিয়ে বিভিন্ন বয়সী মানুষের ঢল নামে। বরাবরের মতো এবারও মেলার মূল প্রাঙ্গণ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিস্তৃত প্রান্তরেই ভিড় দেখা যায় বেশি। আর কিছু অংশ প্রবেশ করে মেলার বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে, যেখানে রয়েছে বাংলা একাডেমিসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের স্টল ও প্যাভিলিয়ন। বইপ্রেমীদের এমনই উতলে ওঠা ঢেউয়ে ভিন্ন এক রূপ পেল একুশের চেতনা জড়িত প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমির প্রাঙ্গণ এবং স্বাধীনতার স্মৃতিবিজড়িত সোহরাওয়ার্দী উদ্যান প্রাঙ্গণ।
বিজ্ঞাপন
বই মেলার বিভিন্ন প্যাভিলিয়ন ও স্টল ঘুরে দেখা যায়, বইপ্রেমীদের সামাল দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছিলেন স্টল ও প্যাভিলিয়নে কর্মরতরা। যদিও বই কেনার থেকে দর্শনার্থীদের ভিড় বেশি, তারপরও তাদের চোখেমুখে ছিল তৃপ্তি। কর্মব্যস্ততার এই দিনে বিভিন্ন প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মীদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলছেন, মোটামুটি বিক্রি ভালো হচ্ছে। দুই দিন আগেও আমরা বিক্রি কম ছিল। এখন ভালো ক্রেতা আসছে।
মেলায় ভিড়ের সাথে দর্শনার্থীদেরও যেন বাড়ছে উচ্ছ্বাস। বই কিনতে আসা নাইম বলেন, মেলায় ভিড় বাড়লেও ভালোই লাগছে। ভিড় না থাকলে কেমন ফ্যাকাসে লাগে। এখনও বই কিনিনি, দেখতেছি। পছন্দমত কিনব।
আরেক দর্শনার্থী রাখি বলেন, আজকে ধরে দুই দিন মেলায় আসলাম। শুরুর দিকে একদিন আসছিলাম। তখন এত ভিড় ছিল না। আজকে জমজমাট মনে হচ্ছে। দুইটা বই কিনেছি। আরও কেনার ইচ্ছা আছে।
বিজ্ঞাপন
রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান: নতুন বাংলাদেশ নির্মাণ’ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে ১ ফেব্রুয়ারি বইমেলার উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এবারের বইমেলায় অন্যতম আকর্ষণ জুলাই চত্বর। মেলায় বাড়ানো হয়েছে স্টলের সংখ্যা। মেলায় অংশ নিচ্ছে ৭০৮টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ৬৩৫।
এবার বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ৯৯টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৬০৯টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। মোট ৩৭টি প্যাভিলিয়নের ৩৬টিই রয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ১টি। মেলা ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। রাত সাড়ে ৮টার পর নতুন করে কেউ মেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে পারবেন না। ছুটির দিন বইমেলা চলবে বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। একুশে ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে মেলা সকাল ৮টায় থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে।
টিএই/এমএইচটি