জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
০২ নভেম্বর ২০২৫, ০৬:১১ পিএম
নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রে বাক্স ছিনতাই হবে কি না শঙ্কা হয় বলে মন্তব্য করেছেন ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশের (আপ বাংলাদেশ) আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ।
তিনি বলেন, কী করলে পরে বাংলাদেশ রাষ্ট্র জনগণের হবে, এ আলোচনা রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে নেই। বরং তারা বলছেন, এই সংস্কার আমি চাই এটাই জনগণের; এই সংস্কার আমি চাই না, এটাই জনগণের।
রোববার (০২ নভেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে ‘স্বল্প আস্থার সমাজে সংস্কার ও নির্বাচনী ঐক্যের রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।
আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ৩৬ জুলাইয়ের মধ্য দিয়ে আমরা যখন এই শাসন কাঠামোকে প্রত্যাখ্যান করলাম, তারপর আশা করেছিলাম বাংলাদেশে নতুন সূচনা হবে। দেশের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন হবে। জনগণের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে একটি অংশগ্রহণমূলক রাষ্ট্র পাবো। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলো যখন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সংস্কার নিয়ে আলাপ-আলোচনা শুরু করলেন, উনারা শুধু ভাবলেন কী করে রাষ্ট্রের এই দুর্বলতা কাজে লাগিয়ে ক্ষমতার চেয়ারে বসা যায়।
তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে এখনো শঙ্কা হয়- নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রে বাক্স ছিনতাই হবে কি না, যারা দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতি করতে পছন্দ করে এমন কেউ ক্ষমতায় যাবেন কি না। এসব শঙ্কা থেকে যাওয়াই তো আমাদের জন্য ব্যর্থতার সংকেত দেয়। অথচ আমরা একটি বৈষম্যহীন ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্র চেয়েছি।
অনুষ্ঠানে এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, রাষ্ট্র এখন সংকটে। সবকিছু গুছিয়ে আনার পরে এখন সংকট ঘনীভূত হয়েছে তিনটা জায়গায়। গণভোট আগে না, একসঙ্গে; নোট অব ডিসেন্টার কী হবে আর আগামী দিনের নির্বাচনটা কিসের নির্বাচন।
সরকারের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, কয়েকটা দলের মন জুগিয়ে চলার রাজনীতির চিন্তা-নীতিটা বাদ দেন। যদি এটা বাদ না দেন, তাহলে আপনারা যে একটা সুযোগ পেয়েছেন, সেই সুযোগ হাতছাড়া করার দায়ে আপনারা চিরস্থায়ীভাবে বাংলাদেশের মানুষের কাছে দায়ী থাকবেন।
আলোচনা সভায় উপস্থিত তরুণদের উদ্দেশে মজিবুর রহমান বলেন, ওরাও রাস্তা বন্ধ করতে চায়। কারণ, কথা তো সত্য, রাস্তা বন্ধ না করলে দাবি আদায় হচ্ছে না। উপদেষ্টারা এদের সঙ্গে বসে কথা বলার সময় পায় না। রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে তাদের সঙ্গে কথা বলে। কদিন পর উপদেষ্টাদের রাস্তায় রাস্তায় হাঁটতে হবে।
মঞ্জু বলেন, তথাকথিত দায়িত্ব নেওয়ার কালচার আমাদের রাজনীতি কলুষিত করেছে। এবি পার্টি শক্তিশালী হলে তার লোকেরা পাবলিক টয়লেট ইজারা নেবে না এমন গ্যারান্টি নেই। এই সংস্কৃতি বদলানোর জন্যই নতুন রাজনীতি দরকার। নতুন রাজনীতি দাঁড়াতে না পারার কারণ খোঁজার আহ্বান জানান তিনি।
জনগণের কথা না শোনায় উপদেষ্টাদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আপনাদের কিছুদিন পর জনগণের কাতারে আসতে হবে। এক-দুটি রাজনৈতিক দলের মন জুগিয়ে চললে জুলাই শহীদ এবং আহতদের কাছে আজীবন ভিলেন হিসেবে অভিশাপ পেতে হবে।
এ ছাড়াও বক্তব্য দেন জেএসডি সাধারণ সম্পাদক শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ হাসিব উদ্দিন হোসেন, এবি পার্টির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) অধ্যাপক আব্দুল ওহাব মিনার, আপ বাংলাদেশের সদস্য সচিব আরেফিন মো. হিজবুল্লাহ, এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার জোবায়ের আহমদ ভুঁইয়া, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দিদার ভুইয়া, আপ বাংলাদেশের প্রধান সংগঠক নাঈম আহমাদ প্রমুখ।
টিএই/এএস