কীসের ভিত্তিতে নিবন্ধন পাচ্ছে এনসিপিসহ ৩ দল, যা বললেন ইসি সচিব

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্ক্সবাদী) ও বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টিকে নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কীসের ভিত্তিতে দল তিনটি নিবন্ধন পাচ্ছে, তা নিয়ে কথা বলেছেন ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।

মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশন ভবনে ব্রিফিং করেন ইসির এই কর্মকর্তা।

ব্রিফিংয়ে আখতার আহমেদের কাছে সাংবাদিকদের প্রশ্ন ছিল, তিনটা দল কি তাদের দলীয় কার্যালয় হিসাব করে নিবন্ধন পাচ্ছে কি না এবং দুই ধাপে তাদের কতগুলো কার্যালয়ের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে? 

তবে এই প্রশ্নের সরাসরি কোনো জবাব দেননি ইসি সচিব। তিনি বলেন, ‘আপনাদের (সাংবাদিকদের) মৌলিক যে প্রশ্নটা ছিল, কয়টা দল রাজনৈতিক হবে এবং ক্রাইটেরিয়া যেগুলো ছিল, সেগুলো নিয়ে এই তিনটা দল কোয়ালিফাই করেছে।’

আখতার আহমেদ বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে যেটা বলা হয়েছিল, ১০০টা উপজেলা লেভেলে এবং ২২টা জেলা লেভেলে তো আইদার অব টু সেটিসফাইড না করলে দেওয়া হচ্ছে না। এখানে আবার কোর্টেরও সিদ্ধান্ত আছে, কিছুটা লিনিয়েন্টলি দেখার ব্যবস্থা বলা হচ্ছে। সেই বিবেচনায় আইদার অব ট্রেকে কোয়ালিফাই করেছেন। নূন্যতম সামান্য যদি কিছু শর্টফ্রম থেকে থাকে উপজেলা লেভেলে বা জেলা লেভেলে, তাহলে সেটাকে বিবেচনায় নিয়েই সহনশীলভাবে নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কতগুলা সংখ্যাগত, যদি কয়টা কয়টা এটা বলেন, আমি এই মুহূর্তে  বলতে পারছি না। পরে বলতে পারব।’

ইসি সচিব জানান, ‘আমরা ১৪৩টা আবেদন পেয়েছিলাম। তার মধ্য থেকে প্রাথমিক বাছাইয়ের পরে ২২টা রাজনৈতিক দলের ব্যাপারে মাঠ পর্যায়ে তদন্তের জন্য পাঠিয়েছিলাম। মাঠ পর্যায় থেকে যে তথ্য পাওয়া গেছে, তার ধারাবাহিকতায় আমরা সাতটা রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের কথা বলেছি যে, না তারা কোয়ালিফাই করে না।’

তিনি বলেন, ‘একটা রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, তাদের ব্যাপারে হাইকোর্টের দায়কৃত একটা আবেদন রায় প্রাপ্তির পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বাকি যে সাতটা দলের ক্ষেত্রে আমরা বলেছি, না তারা কোয়ালিফাই করে না, মিনিমাম রিকোয়ারমেন্ট ফুলফিল করে না। এর ধারাবাহিকতা পুনঃতদন্ত করে কমিশন যে সিদ্ধান্তে এসেছে, সেটা আমি বলছি যে, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের ধারাবাহিকতায় এবং অংশগ্রহণে অতীত নির্বাচন সংক্রান্ত ধারাবাহিকতায় তিনটা দল প্রাথমিকভাবে বিবেচিত হয়েছিল জাতীয় জনতা পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (শাহ জাহান সিরাজ) এবং বাংলাদেশ জাতীয় লীগ।

আখতার আহমেদ বলেন, ‘পরবর্তীতে অদিকতর যাচাই-বাচাইয়ে লক্ষ্য করা গেছে যে, তাদের কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা নাই। সে জন্য এই তিনটাকেও বাতিল করা হচ্ছে। আর যে দলগুলো ছিল তার মধ্যে থেকে আম জনতার দল, বাংলাদেশ জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি, ভাষানী জনশক্তি পার্টি, বাংলাদেশ বেকার মুক্তি পরিষদ,  জনতার দল, মৌলিক বাংলা, জনতার পার্টি, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টি- এই আটটা দলের সঠিকতা না পাওয়ায় নামঞ্জুর করা হয়েছে।’ 

তিনি বলেন, ‘আমরা তিনটা দলের সঠিকতা পেয়েছি এবং সে তিনটা দল হচ্ছে- বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী),  বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টি এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।  এই তিনটা দলের ব্যাপারে নতুন প্রার্থিতা নিবন্ধনের বিষয়ে কমিশন মনে করেছে যে, রাজনৈতিক দল হিসেবে তারা নিবন্ধন পেতে পারে। তাদের ব্যাপারে আগামীকাল (বুধবার) পত্রিকায় আমরা বিজ্ঞপ্তি দেব অভিমতের জন্য এবং ১২ তারিখের ভেতরে এই অভিমতের  সময়সীমা নির্ধারণ করে দিচ্ছি। এই নির্ধারিত সময় সময়ের মধ্যে যে তথ্য পাওয়া যাবে, সেটা পর্যালোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’ 

তিনটা দলের প্রতীকের বিষয়ে জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, ‘এখনো পর্যন্ত আমার যেটা জানা আছে, এনসিপি চেয়েছিল শাপলা কলি, আরেকটা দল চেয়েছে কাচি এবং আরেকটা দল তাদের প্রতীক পরিবর্তনের জন্য অনুরোধ করেছে। সেজন্য এখন প্রতীকটা বলিনি। আরেকটা দল যেহেতু চেয়েছে, সেটা আমি দেখিনি। সেটা যদি প্রাপ্যতা থেকে, তাহলে সেটাসহ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে।’ 

চূড়ান্ত গেজেট কবে প্রকাশ হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা ১২ তারিখ পর্যন্ত সময়সীমার ভেতরে আমরা দাবি বা অভিমত পাব। ১২ তারিখের পরে দুই একটা দিন তো লাগবে। যদি কোনো সমস্যা না থাকে তাহলে ১৪ থেকে ১৫ তারিখের ভেতরে হয়ে যাবে।’

অন্যদিকে জাতীয় লীগের ব্যাপারে জানতে চাইলে ইসির এই কর্মকর্তা বলেন, ‘দলটির ধারাবাহিকতা পাওয়া যায়নি।’

এমএইচএইচ/এএইচ