নিজস্ব প্রতিবেদক
৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১০:৩৩ পিএম
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, বাল্যবিবাহ রোধ করতে না পারলে গ্রামীণ নারীরা শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারবেন না। এজন্য জাতীয় পরিকল্পনা থাকা উচিত। মূল কথা হলো— নারীদের সম্মানের সঙ্গে বাঁচতে হবে।
উপদেষ্টা আজ বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বিকালে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন আয়োজিত আন্তর্জাতিক গ্রামীণ নারী দিবস–২০২৫ উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে এসব বলেন। বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘জলবায়ু অভিযোজনে গ্রামীণ নারী’ -শীর্ষক জাতীয় সেমিনারে তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন।
উপদেষ্টা বলেন, গ্রামীণ নারীরা হাঁস, মুরগি, গরু ও ছাগল পালন করে এক দিকে যেমন অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন, অন্যদিকে ডিম, দুধ ও মাংস সরবরাহের মাধ্যমে পুষ্টির যোগান নিশ্চিত করছেন। তাই দেশের পুষ্টি ও অর্থনীতিতে গ্রামীণ নারীদের অবদান অপরিসীম।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, মাইক্রো লেভেলে পুষ্টির অধিকাংশ অবদানই গ্রামীণ নারীদের। যদি তারা এসব প্রাণী পালন না করতেন, বাংলাদেশ কখনই খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারত না। তাই গ্রামীণ নারীদের বাদ দিয়ে দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। তিনি বলেন, নারীরা ঠিকই আছেন, কিন্তু তাদের সামনে আনা হয় না। এমন নয় যে নারীরা নেই — বরং তাদের অবদানকে দৃশ্যমান করার প্রয়োজন রয়েছে। আমরা যদি নারীদের সামান্য উৎসাহ ও সহায়তা দিতে পারি, তবে তাদের ভূমিকা আরও দৃশ্যমান হয়ে উঠবে।
জেলেদের প্রাপ্য মজুরি প্রসঙ্গে মৎস্য উপদেষ্টা বলেন, দাদন প্রক্রিয়ার কারণে আমাদের জেলেরা ন্যায্য মজুরি পায় না। এটি এখন একটি গুরুতর সমস্যা। দাদন প্রথার অবসান জরুরি, এজন্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ ব্যাংক প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, জেলে পরিবারের নারীদের স্বীকৃতি দেওয়াও সমানভাবে জরুরি।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরিচালক ড. মো. হযরত আলী, সিভিক এনগেজমেন্ট ফান্ডের উপদলনেতা ক্যাথারিনা কোয়েনিগ, সুইডেন দূতাবাসের গণতন্ত্র, মানবাধিকার, আইনের শাসন ও লিঙ্গসমতার সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার রেহানা খান এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাংলাদেশে নিযুক্ত প্রতিনিধি দলের প্রোগ্রাম ম্যানেজার মেহের নিগার ভূঁইয়া ।
স্বাগত বক্তব্য দেন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের প্রকল্প কর্মকর্তা (ক্যাম্পেইন ও যোগাযোগ) তাজওয়ার মাহমিদ।
বক্তারা বলেন, কৃষি উৎপাদন ও জলবায়ু সহনশীলতায় নারীর অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলেও তা সমাজে ও নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে প্রায়ই অদৃশ্য থেকে যায়। তারা নারী-সংবেদনশীল কৃষি ও জলবায়ু নীতি প্রণয়ন, ভূমি, অর্থ ও প্রযুক্তিতে সমান প্রবেশাধিকার এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধির আহ্বান জানান।
সেমিনারে বিভিন্ন নীতিনির্ধারক, উন্নয়ন সহযোগী ও দেশের বিভিন্ন এলাকার নারী কৃষকরা অংশ নেন।
এমআর/ক.ম