images

জাতীয়

গুলশানে সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজি, মামলার এজাহারে কী আছে?

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

২৭ জুলাই ২০২৫, ১২:৪৫ পিএম

রাজধানীর গুলশানে সাবেক নারী এমপি সাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদাবাজির ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলাটি করেন তার স্বামী সিদ্দিক আবু জাফর। এ ঘটনায় পাঁচজনকে আটকের পর গ্রেফতার দেখিয়েছে পুলিশ। 

শনিবার (২৬ জুলাই) রাতে গুলশান থানায় দায়ের করা মামলায় আটক পাঁচজন ছাড়াও আসামি হিসেবে আরও দশ থেকে বারো জনের নাম উল্লেখ করেছেন তিনি। 

ভুক্তভোগী আবু জাফর মামলার এজাহারে দাবি করেছেন, তার কাছে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়েছিল। তবে ১০ লাখ টাকা নিয়ে গিয়ে আবারও হুমকি দিচ্ছিল তারা।

থানায় জমা দেওয়া লিখিত অভিযোগে তিনি জানান, সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে গত ১৭ জুলাই সকালে রিয়াদ ও অপু আমার বাসায় ঢুকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধমকি দিয়ে পঞ্চাশ লাখ টাকা দাবি করে। আমি টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তারা আমাকে আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে গ্রেফতার করানোর হুমকি দিয়ে টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে। একপর্যায়ে আমি বাধ্য হয়ে আমার নিজের কাছে থাকা পাঁচ লাখ ও আমার ভাইয়ের কাছ থেকে আরও পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে তাদের দিই। এর এক দিন পর গত ১৯ জুলাই রাতে তারা আবার বাসায় ঢুকে আমার ফ্ল্যাটের দরজায় জোরে ধাক্কা মারে। তাৎক্ষণিক আমি বিষয়টি গুলশান থানা পুলিশকে মোবাইল ফোনে জানাই। এটা শুনে তারা চলে যায়। এরপর শনিবার বিকেলে রিয়াদসহ তারা আবার আমার বাসার সামনে এসে আমাকে খুঁজতে থাকে। আমি বাসায় না থাকায় আমার বাসার দারোয়ান মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আমাকে বিষয়টি জানায়। আমার ধারণা, আসামিরা আমাকে আবার ভয়ভীতি দেখিয়ে জোর করে টাকা (চাঁদা) নিতে এসেছে।

এ ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের চাঁদা নেয়ার ভিডিও ভাইরাল হলে বিষয়টি সমালোচনার ঝড় তোলে। ভিডিওতে প্রথম দফায় ভুক্তভোগীর বাড়িতে গিয়ে নগদ ১০ লাখ টাকা নেওয়ার একটি ভিডিওতে সেখানে রিয়াদ এবং গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুসহ আরও কয়েকজনের উপস্থিতি দেখা গেছে। এ বিষয়টি গুলশান জোনের এডিসি জাহাঙ্গীর নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, এ ঘটনার পর চাঁদা নিতে গিয়ে আটক হওয়ার পর আটক পাঁচজনের মধ্য থেকে চারজনকে গতকাল রাতেই নিজ নিজ সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক শাহাদাত হোসেন স্বাক্ষরিক এ-সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাংগঠনিক নীতিমালা ও শৃঙ্খলাপরিপন্থি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা মহানগর শাখার আহ্বায়ক ইব্রাহিম হোসেন মুন্না, সদস্য মো. সাকাদাউন সিয়াম ও সাদাবকে সাংগঠনিক পদ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হলো।

অন্যদিকে, গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের সেল সম্পাদক (দপ্তর) মাহফুজুর রহমান স্বাক্ষরিত আরেক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছে যে কিছু ব্যক্তি সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজি করতে গেলে সেখানে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুর সরাসরি সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে। সংগঠনের ভাবমূর্তি ও শৃঙ্খলাপরিপন্থি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকা এবং চাঁদাবাজির সঙ্গে সরাসরি সংশ্লিষ্টতার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়ায় কেন্দ্রীয় সংসদের আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার ও সদস্য সচিব জাহিদ আহসানের নির্দেশনায় জানে আলম অপুকে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের সব পর্যায়ের দায়িত্ব ও সদস্যপদ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হলো।

তবে মূল অভিযুক্ত রিয়াদের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ।

এমআইকে/এএস