লাইফস্টাইল ডেস্ক
০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০১:০৭ পিএম
হেঁচকি ওঠা একটি সাধারণ ঘটনা। সাধারণত এটি কয়েক মিনিট স্থায়ী হয়। হেঁচকি হলে কোনো শারীরিক ক্ষতি হয় না। তবে ঘন ঘন হেঁচকি উঠলে তা বেশ অস্বস্তিকর হয়ে উঠতে পারে। কেন হেঁচকি ওঠে? এটি দ্রুত থামানোর উপায়ই বা কী? উত্তর জানুন এই প্রতিবেদনে-
হেঁচকি ওঠার মূল কারণ হলো ডায়াফ্রাম (Diaphragm)-এর অনৈচ্ছিক সংকোচন বা খিঁচুনি। ডায়াফ্রাম হলো বুক ও পেটের মাঝখানে থাকা একটি বড় পেশী, যা আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাসে সাহায্য করে।

যখন ডায়াফ্রাম হঠাৎ করে সংকুচিত হয়, তখন দ্রুত ফুসফুসের ভেতরে বাতাস প্রবেশ করে। এসময় স্বরযন্ত্রের ঠিক ওপরে থাকা ভোকাল কর্ড (Vocal Cords) বা স্বরতন্ত্র হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়। এই আকস্মিক বন্ধ হওয়ার কারণেই হিক বা হেঁচকি ওঠে।
ডায়াফ্রামের এই সংকোচন শুরু হয় মূলত ভেগাস নার্ভ (Vagus Nerve) অথবা ফ্রেণিক নার্ভ (Phrenic Nerve)-এর কোনো জ্বালা বা উদ্দীপনার ফলে। এই নার্ভগুলো ডায়াফ্রামের সঙ্গে মস্তিষ্ককে যুক্ত করে।


হেঁচকি বন্ধ করার বেশিরভাগ কৌশলই মূলত ভেগাস নার্ভকে উদ্দীপিত করে বা ডায়াফ্রামকে অন্য কাজে ব্যস্ত রেখে তার স্প্যাজম বা খিঁচুনি বন্ধ করার ওপর নির্ভরশীল। হেঁচকি বন্ধ করার কিছু উপায় হলো-
গভীরভাবে শ্বাস নিন। যত লম্বা সময় সম্ভব শ্বাস ধরে রাখুন। শরীরে কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে ডায়াফ্রামের স্প্যাজম বন্ধ হতে পারে। একটি ছোট কাগজের ব্যাগের মধ্যে মুখ ও নাক রেখে কয়েকবার শ্বাস-প্রশ্বাস নিন। এটিও রক্তে কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে।
![]()
বরফ ঠান্ডা পানি দ্রুত পান করুন। এটি গলা ও খাদ্যনালীর ভেগাস নার্ভকে চমকে দিয়ে স্প্যাজম বন্ধ করে দিতে পারে।
হেঁচকি বন্ধ করতে চিনিও খেতে পারেন। এক চামচ চিনি বা মধু সরাসরি জিভের পেছনে রাখুন এবং গিলে ফেলুন। এই মিষ্টি স্বাদ ভেগাস নার্ভকে অতিরিক্ত উদ্দীপিত করে হেঁচকি বন্ধ করতে পারে।

আলতো করে জিহ্বাটিকে বাইরের দিকে টানুন। এটি গলার পেছনের নার্ভগুলোকে উদ্দীপিত করে। হেঁচকি বন্ধ করতে এটিও কার্যকর ভূমিকা রাখে।
এছাড়াও মুখ ভর্তি পানি নিয়ে ৩০ সেকেন্ড ধরে গার্গল করুন। এটিও হেঁচকি বন্ধ করতে সাহায্য করে।

চেয়ার বা মেঝেতে বসে বুককে হাঁটুর সঙ্গে চেপে ধরে থাকুন প্রায় এক মিনিট। এতে ডায়াফ্রামের ওপর চাপ পড়ে স্প্যাজম বন্ধ হতে পারে।
সাধারণত, হেঁচকি অল্প সময়ের মধ্যেই থেমে যায়। তবে এটি যদি ৪৮ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলতে থাকে (দীর্ঘস্থায়ী হেঁচকি), তাহলে এটি অন্য কোনো গুরুতর অন্তর্নিহিত সমস্যার (যেমন গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স, স্নায়ুতন্ত্রের সমস্যা বা কোনো ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া) লক্ষণ হতে পারে। এমনটা হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
এনএম