images

আন্তর্জাতিক

ফিলিপাইনে ঘূর্ণিঝড় কালমেইগির তাণ্ডবে নিহত বেড়ে ১০০

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

০৫ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৩৯ পিএম

ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় অঞ্চলে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় কালমেইগির তাণ্ডবে মৃতের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে গেছে। আহত হয়েছেন আরও বহু মানুষ এবং এখনও প্রায় ২৬ জন নিখোঁজ রয়েছেন। শক্তিশালী এই ঘূণিঝড়ে দেশেটির সেবু প্রদেশে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ এবং প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। 

বুধবার (৫ নভেম্বর) সেবু প্রদেশে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব স্পষ্ট হয়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে মৃতের সংখ্যাও বেড়ে চলছে। একদিন আগেই নজিরবিহীন বন্যার পানি প্রদেশটির কেন্দ্রীয় শহর ও আশপাশের এলাকায় গাড়ি, ঘরবাড়ি, এমনকি বিশাল জাহাজের কন্টেইনার ভাসিয়ে নিয়ে যায়।

সেবুর প্রদেশের সরকারি মুখপাত্র রোন রামোস বলেন, প্রাদেশিক রাজধানীর মেট্রো এলাকার অংশ লিলোয়ান শহরের বন্যা কবলিত এলাকা থেকে ৩৫টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে প্রদেশটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭৬ জনে দাঁড়িয়েছে।

p2

স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা স্টিফেন পোলিনার বলেন, টানা বৃষ্টিপাতের ফলে নেগ্রোস দ্বীপে কমপক্ষে ১২ জন নিহত এবং আরও ১২ জন নিখোঁজ রয়েছে। ক্যানলাওন শহরের বাড়িঘর মাটিচাপা পড়ে গেছে।

তিনি আরও জানান, গত বছর থেকে কানলাওন আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ফলে এর ওপরের অংশে আগ্নেয়গিরির উপাদান জমা হয়েছিল। বৃষ্টিপাতের সময় সেগুলো পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে।

অপরদিকে সরকারি পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় ত্রাণ অভিযান চালাতে গিয়ে একটি সামরিক হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে ছয়জন ক্রু সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন।  

সেবুর সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার এক বাসিন্দা ৫৩ বছর বয়সী রেনাল্ডো ভার্গারা বার্তা সংস্খা এএফপিকে বলেন, ‘ভোর ৪টা বা ৫টার দিকে, বৃষ্টি পানি এত তীব্র ছিল যে বাইরে যাওয়া যাচ্ছিল না।  এরকম কিছু আগে কখনো ঘটেনি। পানি প্রচণ্ড উত্তাল ছিল।’ এই বৃষ্টিপাতের ফলে কাছের একটি নদী উপচে পড়ে সৃষ্ট বন্যায় তার ছোট্ট দোকানের সবকিছুই নষ্ট হয়ে গেছে বলেও জানান তিনি।

২৬ বছর বয়সী রেজি ম্যালোর্কা নামে একজন জানান, বন্যায় তার বাড়ি সম্পূর্ণরুপে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি মেরামত করতে অনেক সময় লাগবে কারণ আমার কাছে এখন টাকা নেই। কয়েক মাস সময় লাগবে। 

দেশটির আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ চারমাগনে ভারিলা বলেন, কালমেইগির আঘাত হানার ২৪ ঘণ্টা আগে সেবু সিটির আশেপাশের এলাকা ১৮৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতে প্লাবিত হয়, যদিও শহরটির মাসিক গড়ের ১৩১ মিলিমিটার।

ফিলিপাইনের সরকার বলছে ঝড়ের প্রভাবে প্রায় ৮ লাখ মানুষকে তাদের বাড়ি থেকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। ফলে ব্যাপক হতাহত এড়ানো সম্ভব হয়েছে। 

উল্লেখ্য, ফিলিপাইন প্রতি বছরে গড়ে প্রায় ২০টি ঝড় ও ঘূর্ণিঝড়ের মুখোমুখি হয়। চলতি বছর এই ঝড়গুলো সুপার টাইফুন রাগাসা (নানডো) এবং টাইফুন বুয়ালই (ওপং)-এর পর এসেছে। আগের মাসে কেন্দ্রীয় ফিলিপাইনে ৬.৯ মাত্রার ভূমিকম্পে বহু মানুষ নিহত ও আহত হয়, যার মধ্যে সেবুই সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। 

সূত্র: এএফপি

এমএইচআর