আন্তর্জাতিক ডেস্ক
০৪ নভেম্বর ২০২৫, ১১:০১ পিএম
ভিসা জালিয়াতি রোধে ভারতীয় ও বাংলাদেশি অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ভিসা গণহারে বাতিলের ক্ষমতা চায় কানাডার সরকার।
গোপন অভ্যন্তরীণ নথির বরাতে কানাডীয় সংবাদমাধ্যম সিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, কানাডার অভিবাসন, শরণার্থী এবং নাগরিকত্ব বিভাগ (আইআরসিসি) এবং কানাডা বর্ডার সার্ভিসেস এজেন্সি (সিবিএসএ) একাধিক মার্কিন সংস্থা সঙ্গে একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ তৈরি করেছে। এই গ্রুপের লক্ষ্য হচ্ছে- ভিসার আবেদনকারীদের মধ্যে যারা জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছে, তাদের শনাক্ত করা এবং আবেদন বাতিল করা।
অভ্যন্তরীণ সরকারি নথি অনুযায়ী প্রস্তাবিত গ্রুপটি সব দেশের আবেদনকারীদের আবেদন ও নথিপত্র যাচাই করবে, তবে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হবে ভারত ও বাংলাদেশি আবেদনকারীদের প্রতি। এ দুই দেশকে ‘কান্ট্রি-স্পেসিফিক চ্যালেঞ্জেস’ বা ‘নির্দিষ্ট চ্যালেঞ্জিং দেশ’ হিসেবে ক্যাটাগরিভুক্ত করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, কানাডার সাংবিধান অনুযায়ী: যুদ্ধ ও মহামারিসহ বৈশ্বিক জরুরি পরিস্থিতিতে গণহারে ভিসা বাতিলের ক্ষমতা পায় দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। দেশটির ইমিগ্রেশনমন্ত্রী লেনা দিয়াবও এই ক্ষমতা চাওয়ার কারণ হিসেবে মহামারি বা যুদ্ধের কথা বলেছেন। এমকি নির্দিষ্ট কোনো দেশের কথা উল্লেখ করেননি তিনি।
এদিকে এই ক্ষমতা পেতে বিল সি–১২ নামে একটি প্রস্তাব পার্লামেন্টে তোলা হয়েছে। সরকার দ্রুত এটি পাস করার আশা করছে।
অন্যদিকে মাইগ্র্যান্ট রাইটস নেটওয়ার্কসহ কানাডার ৩০০টির বেশি সংগঠন এই আইন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সংগঠনগুলোর আশঙ্কা, বিলটি পাস হলে কানাডার সরকার একটি ‘গণ-ফেরত পাঠানোর মেশিন’-এ পরিণত হবে।
দেশটির অভিবাসন আইনজীবীরা ধারণা করছেন, ক্রমবর্ধমান ভিসার আবেদন জট কমাতে গণহারে আবেদন বাতিলের ক্ষমতা চাইতে পারে সরকার।
এদিকে কানাডা সরকারের নথিতে অনুযায়ী, ভারতীয় আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। ২০২৩ সালের মে মাস পর্যন্ত প্রতি মাসে গড়ে ৫০০ জনের কম ভারতীয় আশ্রয় আবেদন করতেন, যা ২০২৪ সালের জুলাই নাগাদ প্রায় ২ হাজারে পৌঁছেছে। এতে অতিরিক্ত আবেদন যাচাই করার কারণে আবেদন প্রক্রিয়া ধীর হয়ে যায়।
২০২৩ সালের জুলাই মাসের শেষে প্রক্রিয়াকরণের সময় লাগত গড়ে ৩০ দিন। তবে ২০২৪ সালে এই সময় বেড়ে ৫৪ দিনে দাঁড়িয়েছে। এর ফলে ভিসা অনুমোদনও কমতে শুরু করে। তবে নথিতে বাংলাদেশকে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে—সিবিসি নিউজের এই প্রশ্নের সরাসরি কোনো উত্তর দেয়নি কর্তৃপক্ষ।
সূত্র: সিবিএস, এনডিটিভি
এমএইচআর