আন্তর্জাতিক ডেস্ক
৩১ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:১৯ পিএম
পূর্ব আফ্রিকার দেশ তানজানিয়ায় গত সপ্তাহের বিতর্কিত নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে শুরু হওয়া আন্দোলনে প্রায় ৭০০ জন নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে দেশটির বিরোধী দল চাদেমা পার্টি।
শুক্রবার চাদেমা পার্টির মুখপাত্র জন কিতোকা বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘দার-এস-সালামে প্রায় ৩৫০ জন এবং এমওয়ানজাতে ২০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। যদি অন্যান্য জায়গার নিহতের সংখ্যা যোগ করলে এটি প্রায় ৭০০ জন হবে।’
তিনি জানান, দলের সদস্যরা সারা দেশের হাসপাতালগুলোতে পরিদর্শন করে এই সংখ্যা নিশ্চিত করেছে।
এএফপি জানিয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনীর একটি সূত্র নিহতের অনুরুপ সংখ্যা জানিয়েছে। তবে চাদেমা পার্টি ও নিরাপত্তা সূত্রের সঙ্গে জাতিসংঘের দেওয়া তথ্যের কোনো মিল নেই।
শুক্রবার এক ব্রিফিংয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার মুখপাত্র সাইফ মাগাঙ্গো জেনেভায় সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিশ্বাসযোগ্য সূত্র থেকে জানা গেছে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ১০ জন নিহত হয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা তানজানিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীকে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে অপ্রয়োজনীয় বা অসামঞ্জস্যপূর্ণ বলপ্রয়োগ, প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার থেকে বিরত থাকার এবং উত্তেজনা কমানোর জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বান জানাচ্ছি।’
তানজানিয়ায় গত সপ্তাহে নির্বাচন হয়। এতে প্রধান দুটি বিরোধী দলকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে দেওয়া হয়নি। এরপর মঙ্গলবার থেকে বাণিজ্যিক রাজধানী দার-এস-সালামে ব্যাপক আন্দোলন শুরু হয়। বিরোধী দলের ওপর দমন-নিপীড়ন এবং নির্বাচনে ব্যাপক বিধিনিষেধের প্রতিবাদে সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে আসেন। তারা অসংখ্য গাড়ি, পেট্রোল স্টেশন এবং থানায় আগুন দিয়েছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার দের-এস সালামের এমবাগালা, গোঙ্গো লা এমবোতো, কিলুভইয়া এলাকায় কারফিউ ভঙ্গ করে রাস্তায় নামেন মানুষ। এ সময় তাদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয়। এছাড়া সেখানে গোলাগুলির শব্দও শোনা যায়।
আজ শুক্রবার তৃতীয়দিনে গড়িয়েছে আন্দোলন। তারা দাবি করছে, নির্বাচন কমিশন যেন ফলাফল ঘোষণা বন্ধ করে দেয়। এমন পরিস্থিতিতে বর্তমান সরকার রাস্তায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করেছে। এছাড়া দেশের বেশিরভাগ জায়গায় ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৯৬১ সালে স্বাধীনতার পর থেকেই তানজানিয়ার ক্ষমতায় রয়েছে চামা চা মাপিনদুজি (সিসিএম) দল। নতুন নির্বাচনের মাধ্যমে নিজেদের ক্ষমতার মেয়াদ আরও বাড়ানোর চেষ্টা করছে। এরই অংশ হিসেবে গত বুধবার যে নির্বাচন হয় সেখানে বর্তমান প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসান তার প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বীকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখেন। এতে করে সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন।
সূত্র: আলজাজিরা
এমএইচআর