images

আন্তর্জাতিক

যে শর্তে অস্ত্র সমর্পণে রাজি হামাস

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২৭ অক্টোবর ২০২৫, ০৫:৪৯ পিএম

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত পরিকল্পনা অনুযায়ী গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র হামাসকে অস্ত্র সমর্পণের জন্য চাপ দিয়ে যাচ্ছে। ট্রাম্প এ ব্যাপারে হামাসের ওপর বল প্রয়োগেরও হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে হামাস জানিয়েছে, তারা অস্ত্র সমর্পনে রাজি আছে। তবে এর জন্য একমাত্র শর্ত হলো- ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি দখলদারিত্বের অবসান হতে হবে। 

রোববার কাতার ভিক্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে হামাসের প্রধান আলোচক খলিল আল-হাইয়া স্পষ্ট জানিয়েছেন, তাদের অস্ত্রভান্ডারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত ইসরায়েলি ‘দখলদারত্ব ও আগ্রাসনের উপস্থিতির সঙ্গে সম্পর্কিত।’

তিনি বলেন, ‘দখলদারিত্বের অবসান হলে এসব অস্ত্র রাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’

তবে আল-হাইয়া কোন রাষ্ট্রের কথা বলেছেন, তা স্পষ্ট নয়। তিনি কি কোনো নতুন বা এখনো গঠিত না হওয়া ফিলিস্তিনি প্রশাসনিক কাঠামোর কথা বোঝাতে চেয়েছেন, সেটিও জানা যায়নি।

khali_al_haya
খলিল আল-হাইয়া

প্রসঙ্গত, ইসরায়েল দুই বছরের যুদ্ধের সমাপ্তি হিসেবে হামাসের নিরস্ত্র হওয়ার দাবি জানিয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবে যে ২০টি পয়েন্ট রয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট হলো হামাসের অস্ত্র সমর্পণ। 

অবশ্য ট্রাম্প এই প্রস্তাব পেশ করার অনেক আগে থেকেই আলোচনায় ছিল হামাসের অস্ত্রসমর্পণের বিষয়টি। আগেও কয়েক বার হামাসকে অস্ত্র সমর্পণের আহ্বান জানানো হয়েছে এবং প্রতিবারই তা প্রত্যাখ্যান করেছে গোষ্ঠীটি।

ইসরায়েলের দাবি, বর্তমান যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় হামাসকে অবশ্যই অস্ত্রসমর্পণ করতে হবে। এখানে কোনো ‘যদি’, ‘কিন্তু’ নেই এবং এটা যত তাড়াতাড়ি ঘটে, ততই ভালো। হামাস অনর্থক সময় নষ্ট করছে।

তবে হোয়াইট হাউস বলছে, হামাস অস্ত্র সমর্পণের ব্যাপারে আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এবং আমরা আশা করি যে তারা এই প্রতিশ্রুতিকে সম্মান করবে।

এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রস্তাবিত টেকনোক্র্যাট কমিটির কাছে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকার শাসনভার হস্তান্তরে সম্মত হয় হামাস। গাজায় সক্রিয় অন্য সংগঠনগুলোও মিসরের কায়রোতে এক বৈঠকের এই সমঝোতার বিষয়ে একমত হয়েছে। 

শুত্রবার হামাসের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, স্বাধীন টেকনোক্র্যাটদের নিয়ে গঠিত অস্থায়ী এই কমিটি আরব দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সহায়তায় কাজ করবে। যুদ্ধবিধ্বস্ত উপত্যকায় যেন প্রশাসনিক কোনো শূন্যতা না থাকে, সে জন্য অবিলম্বে কাজ শুরু করবে তারা।

উল্লেখ্য, গাজায় গত ২৯ সেপ্টেম্বর যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত নতুন পরিকল্পনাটি প্রস্তাব আকারে পেশ করেন ট্রাম্প। ইসরায়েল ও হামাস উভয়ে তাতে সম্মতি জানানোর পর গত ১০ অক্টোবর থেকে যুদ্ধবিরতি শুরু হয় গাজায়।

প্রস্তাবনা অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতির পর গাজাকে সম্পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণ করা হবে এবং সেখানকার সব ‘সামরিক ও সন্ত্রাসী অবকাঠামো’ ধ্বংস করা হবে। গাজার শাসনভার সাময়িকভাবে ফিলিস্তিনি টেকনোক্র্যাটদের একটি অন্তর্বর্তীকালীন কমিটির হাতে দেওয়া হবে। এই কমিটির কার্যক্রম তত্ত্বাবধান করবে একটি 'শান্তি বোর্ড', যার নেতৃত্বে থাকবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

এর আগে হামাসের নেতারা বলেছিলেন, গাজায় প্রস্তাবিত টেকনোক্র্যাট সরকারের অংশ হতে চায় গোষ্ঠীটি এবং সরকারের নিরাপত্তা বিভাগের দায়িত্বে থাকতে চায়। বৃহস্পতিবার মিসরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর সেই অবস্থান থেকে সরে এলো গোষ্ঠীটি।

সূত্র: আনাদোলু, টাইমস অব ইসরায়েল


এমএইচআর