images

হেলথ

সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল চালুসহ তিন দাবিতে চিকিৎসকদের মানববন্ধন

নিজস্ব প্রতিবেদক

০৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:১১ পিএম

রাজধানীর বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক, মেডিকেল অফিসার নিয়োগ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল পূর্ণরুপে চালু করাসহ তিন দফা দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন চিকিৎসকরা।

বুধবার (৫ নভেম্বর) সকাল ১১টার দিকে বিএমইউ ক্যাম্পাসে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন তারা।

মানববন্ধনে চিকিৎসকরা বলেন, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর দেশের অবস্থা পরিবর্তন হয়। সব জায়গায় লাগে ব্যাপক পরিবর্তনের ছোঁয়া, তবে বিএমইউতে সেভাবে পরিবর্তন হয়নি। আশা করি, বিএমইউর অবস্থা আরও পরিবর্তন হবে। দেশের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ করবে চিকিৎসাসেবা ও গবেষণার মাধ্যমে।

তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ও এর অধীনস্থ হাসপাতালগুলোতে বহু শিক্ষক ও মেডিকেল অফিসারের পদ দীর্ঘদিন যাবৎ শূন্য রয়েছে। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে কোনো নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। এই নভেম্বরের মধ্যে নিয়োগের প্রজ্ঞাপন দিতে হবে এবং ২০২৫ সালের মধ্যে এই নিয়ে প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে।

চিকিৎসকরা বলেন, কয়েক হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল করা হয়েছে, দক্ষ জনবলের অভাবে এখনও পুরোপুরিভাবে চালু করা হয়নি। দ্রুত চিকিৎসকসহ অন্যান্য পদে নিয়োগ দিয়ে হাসপাতাল পূর্ণাঙ্গরুপে চালু করা হোক।

চিকিৎসকরা আরও বলেন, বিএমইউর হাজার হাজার রেসিডেন্ট, তাদের থাকার জন্য কোনো হল নেই। চিকিৎসকদেরকে থাকতে হয় বাইরে। হল সুবিধা না থাকার কারণে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় কষ্ট করে থাকতে হয় এবং যাতায়াতের অসুবিধা হয়। এতে সেবায় বিঘ্ন ঘটে।

বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অফথালমোলজি বিভাগের রেসিডেন্ট ডা. মো. নাজমুল হাসান বলেন, বাংলাদেশে চিকিৎসকরা যথেষ্ট দক্ষ, কিন্তু দক্ষতা দেখানোর সুযোগ পাচ্ছে না। তাদেরকে পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা দেওয়া হোক। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক হাজার রেসিডেন্ট, যারা পড়াশোনা করেন এবং রোগীদের সেবা প্রদান করেন। তাদের জন্য নেই কোনো ছাত্রাবাস। নামকাওয়াস্তে একটি ভবন রয়েছে, যেখানে থাকার অযোগ্য।

2

ডা. আবু ইউসুফ আব্দুল্লাহ বলেন, ৫ আগস্টের পর সব জায়গায় সংস্কার হচ্ছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়কে এখনো ঠিক মতো সংস্কার করা হয়নি। নানাভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে। কোরিয়ার অর্থায়নে সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল করা হয়েছে, এখনো পুরোপুরি সুফল পাচ্ছে না দেশের জনগণ। চিকিৎসক, নার্স, টেকনোলজিস্ট-ওয়ার্ড বয়সহ সব পদে নিয়োগ করে পুরোপুরিভাবে হাসপাতাল চালু করা হোক। 

যে তিন দাবি করেছেন চিকিৎসকরা

১। বিশ্ববিদ্যালয় ও এর অধীনস্থ হাসপাতালগুলোতে বহু শিক্ষক ও মেডিকেল অফিসারের পদ দীর্ঘদিন যাবৎ শূন্য রয়েছে। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে কোনো নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। এর ফলে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা উভয়ই বিঘ্নিত হচ্ছে। অবিলম্বে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে শূন্য পদে নিয়োগ কার্যক্রম শুরু এবং প্রয়োজনে নতুন পদ সৃজন করতে হবে।

২। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও কর্মীর অভাবে পূর্ণমাত্রায় কার্যকর নয়। এতে রোগীরা মানসম্মত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এবং শিক্ষানবিশ ডাক্তাররা প্রয়োজনীয় ক্লিনিক্যাল অভিজ্ঞতা পাচ্ছেন না। জাতীয় স্বার্থে হাসপাতালটি সম্পূর্ণভাবে চালু করে সর্বোচ্চ মানের স্বাস্থ্যসেবা ও প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে।

৩। বর্তমানে রেসিডেন্ট ও ট্রেইনি ডাক্তারদের জন্য নির্দিষ্ট কোনো হোস্টেল সুবিধা নেই, ফলে তারা নিরাপদ ও উপযুক্ত আবাসন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়ে আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন লাইব্রেরি ও একাডেমিক সাপোর্ট সিস্টেমেরও অভাব রয়েছে। দ্রুত সময়ে পূর্ণাঙ্গ হোস্টেল নির্মাণ এবং আধুনিক লাইব্রেরি স্থাপনসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়ন করতে হবে

চিকিৎসকরা বলেন, এই সমস্যাগুলোর দ্রুত সমাধান হলে বাংলাদেশের চিকিৎসা শিক্ষা, গবেষণা এবং স্বাস্থ্যসেবা আরও মানসম্মত, দক্ষ ও আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হবে বলে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।

এসময় বিএমইউর মনোরোগ বিদ্যা বিভাগের ডা. আবু রায়হান রাজি, বিএমইউর ডা. মাহমুদুর রহমান মাজেদ ও ডা. আবুল বাশারসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

এসএইচ/এএইচ