নিজস্ব প্রতিবেদক
০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০০ পিএম
আগামী ১২ ডিসেম্বর (শুক্রবার) আয়োজন করা হবে ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ও বিডিএসের ভর্তি পরীক্ষা। এরমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতর। এখন শুধুমাত্র পরীক্ষার দিনের অপেক্ষায় রয়েছে সংস্থাটি। সারাদেশে একযোগে ১৭টি কেন্দ্রে সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত একই দিনে মেডিকেল ও ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
জানা গেছে, এ বছর এমবিবিএস ও বিডিএস ভর্তি পরীক্ষায় আবেদন করেছেন এক লাখ ২২ হাজার ৫২৫ শিক্ষার্থী। সরকারি ৩৭টি মেডিকেল কলেজে মোট আসন পাঁচ হাজার ১০০টি। আর সরকারি ডেন্টাল কলেজ ও মেডিকেল কলেজের ডেন্টাল ইউনিটে আসন সংখ্যা ৫৪৫টি। এই হিসাবে প্রতিটি আসনের বিপরীতে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ২২ জন।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. রুবীনা ইয়াসমিন ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘ভর্তি পরীক্ষার প্রায় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। যেহেতু আগামী শুক্রবার পরীক্ষা। এখন আমরা একদম শেষ পর্যায়ে আছি। মন্ত্রণালয় থেকে সব স্টকহোল্ডারদের সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে। পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে অনলাইনে মিটিং করা হয়েছে। সবাইকে নির্দেশনা দেওয়া আছে। আশা করছি, গতবারের মতো এবারও সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।’
এ বছর মুক্তিযোদ্ধা কোটা থাকবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা কোটার বিষয়ে গত বছরই গেজেট হয়েছে এ বছর থেকে থাকবে না।’
এর আগে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। বিভিন্ন মেডিকেলে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। কেননা, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৪০.৭ নম্বর পেয়েও ভর্তির সুযোগ পেয়েছিলেন একজন। এ ছাড়া মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৪১, ৪৬, ৫৬ নম্বর পেয়েও কেউ কেউ সরকারি মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। আবার অনেক শিক্ষার্থী ৭৩ নম্বরের বেশি পেয়েও সরকারি মেডিকেলে সুযোগ পাননি।
কোটা নিয়ে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডা. নাজমুল হোসাইন বলেন, ‘৪০, ৪৬, ৫৬ পেয়েও কোটার কারণে মেডিকেলে চান্স পেয়েছে, যেগুলো আদতে পাস নম্বরও না। কিন্তু ৭৩/৭৪.৫ পেয়েও চান্স হচ্ছে না। অথচ নম্বরের পার্থক্য কত বেশি, এগুলো কি অবিচার না? কোন বৈষম্যের বিরুদ্ধে এতগুলো মানুষের জীবন গেল? সরকার কোটা বন্ধ করে গেজেট দিয়েছে, প্রকৃত মেধাবীরাই মেডিকেলে চান্স পাবে।’
রাজশাহী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী মাহমুদ রায়হান বলেন, ‘৫৮ হাজারের বেশি সিরিয়ালে থেকে সরকারি মেডিকেলে চান্স পায় কীভাবে, যেখানে সরকারি মেডিকেলের সিট ৫ হাজারের কিছু বেশি। চান্স পেতে অন্যদের যেখানে ৭৪ লাগছে। আর অন্যদিকে নাতি-নাতনীদের টেনেটুনে পাস নম্বর তুললেই চান্স, কিছু বলার ভাষা নেই। সরকার কোটা বন্ধ করেছে এজন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানাই।’
মান বণ্টন ও প্রশ্ন পদ্ধতি
এদিকে অধিদফতর জানিয়েছে, এ বছর সাধারণ জ্ঞান, মানবিক গুণাবলি, ব্যক্তিত্বমূলক দিক ও বিশ্লেষণী ক্ষমতা— এই চারটি মিলে ১৫ নম্বর থাকবে। তবে ফিজিক্সে নম্বর ২০ থেকে কমিয়ে ১৫ করা হবে। অর্থাৎ এ বছরের নতুন নম্বর বণ্টন হবে বায়োলজিতে ৩০, কেমিস্ট্রিতে ২৫, ফিজিক্সে ১৫, ইংরেজিতে ১৫ এবং সাধারণ জ্ঞান, মানবিক মূল্যবোধ ও বিশ্লেষণী দক্ষতায় ১৫ নম্বর থাকবে। প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য ০.২৫ নম্বর কাটা হবে। পরীক্ষার সময়কাল ১ ঘণ্টা ১৫ মিনিট, পাশ নম্বর ৪০।
মেধা তালিকা নির্ধারণ
এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার জিপিএ মিলিয়ে মোট ১০০ নম্বর নির্ধারণ করা হবে। এসএসসি জিপিএ × ৮ = ৪০ নম্বর। এইচএসসি জিপিএ × ১২ = ৬০ নম্বর। লিখিত পরীক্ষার প্রাপ্ত নম্বরের সঙ্গে এই দুইয়ের যোগফলেই মেধাতালিকা চূড়ান্ত হবে। ২০২৪ সালের পরীক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে মোট নম্বর থেকে ৩ নম্বর এবং গত শিক্ষাবর্ষে কোনো সরকারি মেডিকেল বা ডেন্টাল কলেজে ভর্তি থাকা প্রার্থীর ক্ষেত্রে ৫ নম্বর কর্তন করা হবে।
এসএইচ/এফএ