জেলা প্রতিনিধি
০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৩০ পিএম
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণার পর চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে সম্ভাব্য সকল প্রার্থীই মাঠে নেমে পড়েছেন। গণসংযোগ, পথসভা ও দলীয় নেতা-কর্মীদের সংগঠিত করার তৎপরতায় সরগরম হয়ে উঠেছে পুরো আসন।
চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে মূল লড়াই বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী, এমনটাই মনে করছেন সাধারণ ভোটাররা। বিএনপি মনোনয়ন চূড়ান্ত হওয়ার পর থেকেই প্রার্থী গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন এবং তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফা সংস্কার রূপরেখা সক্রিয়ভাবে প্রচার করছেন।
অন্যদিকে, আগে থেকেই প্রার্থী ঘোষণা করায় জামায়াত আরও আগেই সুসংগঠিতভাবে মাঠে অবস্থান তৈরি করেছে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ও জাকের পার্টিও কেন্দ্র ঘোষিত বিভিন্ন কর্মসূচি ও স্থানীয় প্রচারণা চালাচ্ছে। এনসিপি এবং এবি পার্টি কেন্দ্রীয় কর্মসূচির মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, চুয়াডাঙ্গার দুই আসনেই দলীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকলেও আওয়ামী লীগের রয়েছে একটি স্থায়ী ভোট ব্যাংক। তাদের অনেক ভোটই এবার বিএনপি বা জামায়াত প্রার্থীর জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
চুয়াডাঙ্গা-১ (সদর–আলমডাঙ্গা) জাতীয় সংসদের ৭৯ নম্বর আসন আলমডাঙ্গা উপজেলা এবং সদর উপজেলার আলুকদিয়া, মোমিনপুর, কুতুবপুর, শংকরচন্দ্র ও পদ্মবিলা ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত।
ডিসেম্বর ২০২৩ এর হিসাব অনুযায়ী এই আসনের মোট ভোটার ৪,৮৪,৩৮৯ জন, এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২,৪১,৬৮০ জন এবং নারী ভোটার ২,৪২,৭০৫ জন।
হারানো এ আসন পুনরুদ্ধারে দিন-রাত মাঠে ব্যস্ত বিএনপি। এবার দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শরীফুজ্জামান শরীফ। তিনি জানান, ফ্যাসিস্ট সরকারের দমন-পীড়নের সময় আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। শতভাগ স্বচ্ছতার সঙ্গে ইউনিয়ন থেকে জেলা পর্যন্ত কমিটি করেছি। পকেট কমিটি করিনি। নির্বাচিত হলে চুয়াডাঙ্গা শহরে বাইপাস সড়ক, আলমডাঙ্গায় বড় হাসপাতাল, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়ন করব।
তিনি আরও বলেন, চুয়াডাঙ্গা শহরের নাগরিক সুবিধার ঘাটতি দীর্ঘদিনের। মিথ্যা স্বপ্ন দেখাতে আসিনি। ৩১ দফা রূপরেখা এই অঞ্চলের অবকাঠামো, ব্যবসা-বাণিজ্য, শ্রমজীবী ও মধ্যবিত্তদের জন্য একটি গ্যারান্টি। ধানের শীষ বিজয়ী হলে চুয়াডাঙ্গাকে আধুনিক, জনবান্ধব মডেল শহর হিসেবে গড়ে তোলা হবে।
জামায়াতের প্রার্থী হিসেবে ঘোষিত হয়েছেন জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট মাসুদ পারভেজ রাসেল।
তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লবের পর মানুষ সন্ত্রাসমুক্ত, স্বচ্ছ নির্বাচন চায়। কৃষি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা, জনগণের এই তিন প্রত্যাশায় ন্যায়ভিত্তিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে আমরা প্রস্তুত। সুষম উন্নয়নের স্বার্থে নতুন ভোটাররা দাঁড়িপাল্লাকেই বেছে নেবে।
এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব ও দলটির প্রার্থী মোল্লা ফারুক এহসান বলেন, চুয়াডাঙ্গার মানুষের প্রধান চাহিদা উন্নত চিকিৎসাসেবা ও স্থায়ী কর্মসংস্থান। এই জেলার স্বাস্থ্যসেবা দীর্ঘদিন ধরেই নাজুক অবস্থায় রয়েছে, অনেকেই সময়মতো প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সুবিধা পান না। আমি নির্বাচিত হলে চুয়াডাঙ্গার স্বাস্থ্যখাতে ব্যাপক উন্নয়ন ঘটানো হবে। পাশাপাশি এখানে এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোন (ইপিজেড) প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে রপ্তানিমুখী শিল্প গড়ে তোলা ও নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরিতে কাজ করব।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী মাওলানা জহুরুল ইসলাম আজিজী বলেন, আস্থা ও অধিকার সংকটে থাকা মানুষের জন্য একটি বিশ্বাসযোগ্য রাজনৈতিক শক্তি প্রয়োজন। ইসলামী আন্দোলন সেই দায়িত্ব পালন করছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি ও স্থানীয় অর্থনীতির উন্নয়ন এবং মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
প্রতিনিধি/টিবি