জেলা প্রতিনিধি
০৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:৩৪ পিএম
শরীয়তপুরের গোসাইরহাটে পুকুরে মাছ ধরতে গিয়ে বৈদ্যুতিক মোটরের সংস্পর্শে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দুই বন্ধুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) সকালে উপজেলার কোদালপুর ইউনিয়নের বকাউলপাড়া এলাকায় ঘটে এ হৃদয়বিদারক দুর্ঘটনা।
নিহতরা হলেন— একই ইউনিয়নের দেওয়ানপাড়া গ্রামের হানিফা মোল্লার ছেলে নূরে আলম মোল্লা (৪০) ও মো. আলমগীর (৫২)। দুজনেই দীর্ঘদিনের বন্ধু। জীবিকার প্রয়োজনে একজন ট্রাক্টর চালাতেন, অন্যজন কৃষি কাজ করতেন। সুযোগ পেলেই একসঙ্গে মাছ ধরতে যেতেন তারা। আর সেই প্রিয় শখই কাল হয়ে দাঁড়ায় তাদের জীবনে।
স্থানীয়রা জানান, সোমবার দিনগত রাতে নূরে আলম ও আলমগীর পাশের বকাউলপাড়া এলাকার একটি পুকুরে মাছ ধরার প্রস্তুতি নেন। বৈদ্যুতিক মোটরের সাহায্যে পানি সেচ দেওয়ার পর মঙ্গলবার ভোরে পুকুরে নামেন মাছ ধরতে। এসময় অসাবধানতাবশত বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে দুজনেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন।
চিৎকার শুনে স্থানীয়রা ছুটে এসে তাদের উদ্ধার করে গোসাইরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক নূরে আলম ও আলমগীরকে মৃত ঘোষণা করেন।
নূরে আলমের ছেলে নিরব কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, রাতে বাবা আলমগীর কাকার সঙ্গে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন। ভোরে গিয়ে দেখি দুজনেই মাটিতে পড়ে আছেন। দৌড়ে গিয়ে মেইন সুইচ বন্ধ করি, কিন্তু তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে।
অন্যদিকে নিহত আলমগীরের স্ত্রী সালমা বেগম বলেন, ভোরে স্বামী বাড়ি ফেরেননি দেখে খোঁজ নিতে বের হই। কিছুক্ষণ পরেই শুনি, উনি আর ফিরবেন না— বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মারা গেছেন।
গোসাইরহাট সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শামসুল আরেফীন বলেন, বৈদ্যুতিক মোটরের সংস্পর্শে এসে দুই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। নিহতদের পরিবার থেকে অভিযোগ পাওয়া যায়নি। প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দুই বন্ধুর এমন একসঙ্গে মৃত্যুতে গোটা এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। সকালের নরম আলোয় বিলের ধারে এখনও জমে আছে শোকার্ত স্বজনদের কান্না, যেখানে কিছুক্ষণ আগেও ছিল দুই বন্ধুর হাসি আর জীবনের স্বপ্ন।
প্রতিনিধি/এসএস