images

সারাদেশ

রাজবাড়ীতে একই পরিবারের ৩ জন বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত

জেলা প্রতিনিধি

১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:২৮ পিএম

রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দির জঙ্গল ইউনিয়নের সমাধীনগর গ্রামের এক পরিবারে একসঙ্গে তিনজন ৪৮তম বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন।

তারা হলেন ডা. শিবাজী প্রসাদ বিশ্বাস, তার ছোট ভাই ডা. গৌরব বিশ্বাস এবং শিবাজীর স্ত্রী ডা. ইন্দ্রানী সাহা। শিবাজী ও গৌরব ছিলেন প্রয়াত সমাধীনগর আর্য্য সংঘ বিদ্যামন্দির মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিনয় কৃঞ্চ বিশ্বাস ও সাধুখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নীলিমা রানী বিশ্বাসের সন্তান। অন্যদিকে ইন্দ্রানী সাহা শিবাজীর স্ত্রী, তিনি বরিশালের অজয় সাহা ও লিপিকা সাহার কন্যা।

জানা গেছে, শিবাজী প্রসাদ বিশ্বাস ২০১২ সালে সমাধীনগর আর্য্য সংঘ বিদ্যামন্দির মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ২০১৪ সালে যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এইচএসসি পাস করেন। এরপর ভর্তি হন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে। বর্তমানে শিবাজী ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে এফসিপিএস (মেডিসিন) পার্ট-২ কোর্স করছেন।

তার ছোট ভাই গৌরব বিশ্বাস ২০১৪ সালে সমাধীনগর আর্য্য সংঘ বিদ্যামন্দির মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ২০১৬ সালে দ্বারিয়াপুর ডিগ্রী কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এইচএসসি পাস করেন। এরপর ভর্তি হন ঢাকা মেডিকেল কলেজে। বর্তমানে গৌরব বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে এমডি (ইন্টারনাল মেডিসিন) কোর্স করছেন রেসিডেন্ট হিসেবে।

অন্যদিকে শিবাজীর স্ত্রী ইন্দ্রানী সাহা ২০১৫ সালে বরিশাল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ২০১৭ সালে বরিশাল সরকারি মহিলা কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এইচএসসি পাস করেন। এরপর ভর্তি হন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে। বর্তমানে ইন্দ্রানী সাহা ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে এফসিপিএস (গাইনি ও অবস) পার্ট-২ কোর্স করছেন।

শিবাজী প্রসাদ বিশ্বাস জানান, তাদের বাবার খুব ইচ্ছা ছিল, তার দুই সন্তানের অন্তত একজন হলেও চিকিৎসক হোক এবং দেশের মানুষের সেবায় নিবেদিত থাকুক। তাদের বাবা ২০১৪ সালে মারা যান। বাবার মৃত্যুর পর তারা হতাশ হয়ে পড়েন। তাদের মা তাদের আগলে রাখেন। বাবার ইচ্ছার কথা স্মরণে রেখে দুই ভাই পড়াশোনা চালিয়ে যান। এক পর্যায়ে তারা দুজনই মেডিকেলে ভর্তি হন।

তিনি বলেন, যদিও তাদের বাবা আর বেঁচে নেই, বাবার সেই স্বপ্ন তারা লালন করছেন। দেশের মানুষের সেবায় তারা নিজেদের নিয়োজিত রাখবেন। শিবাজী আরও বলেন, তাদের ইচ্ছা ছিল যেকোন এক ভাই দেশের বাইরে চলে যাক, কিন্তু তাদের বাবা সেটি পছন্দ করতেন না। বাবার দেশপ্রেমকে তারা সম্মান জানাচ্ছেন। দুই ভাইসহ ইন্দ্রানী দেশের মানুষের সেবায় জীবন কাটাবেন এবং বাবাকে স্মরণ করবেন। তারা সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।

প্রতিবেশি অমিয় প্রসাদ রায় বলেন, একই পরিবারের তিনজন বিসিএসে উত্তীর্ণ হওয়ায় শুধু পরিবার নয়, পুরো এলাকায় আনন্দের ছড়াছড়ি।

সুপারিশপ্রাপ্ত তিনজনের মা নীলিমা রানী বিশ্বাস আবেগে আপ্লুত হয়ে জানান, আজও তাদের বাবা বেঁচে থাকলে খুব খুশি হতেন। জীবনকালে তিনি সন্তানদের সফলতা দেখতে পাননি। এটি তাদের পরিবারের জন্য কষ্টের বিষয়। তবে তার একমাত্র চাওয়া, সন্তানরা দেশের মানুষের সেবার মাধ্যমে বাবার স্বপ্ন পূরণ করুক।

এআর