‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস’ উপলক্ষে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের পাশে ৫ জুন থেকে শুরু হচ্ছে জাতীয় পরিবেশ ও বৃক্ষমেলা ২০২৩।
৫ জুন সকাল সাড়ে নয়টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন। শেরে বাংলা নগরে অনুষ্ঠিতব্য পরিবেশ মেলা চলবে ৫ জুন থেকে ১১ জুন পর্যন্ত।
বিজ্ঞাপন
২৭ থেকে ৩০ জুন ঈদুল আজহার সরকারি ছুটি থাকায় ঈদের আগে বৃক্ষমেলা চলবে ৫ থেকে ২৬ জুন। ঈদের পর চলবে ১ থেকে ১২ জুলাই পর্যন্ত। প্রতিদিন মেলা চলবে সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত।
বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও পরিবেশ মেলা ২০২৩ এবং জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা ২০২৩ উপলক্ষ্যে রোববার (৪ জুন) সকালে সচিবালয়ে তথ্য অধিদফতরের সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পরিবেশমন্ত্রী এসব কথা জানান।
শাহাব উদ্দিন বলেন, জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচির ঘোষণা মোতাবেক ‘প্লাস্টিক দূষণ সমাধানে সামিল হই সকলে’ প্রতিপাদ্যে এবং ‘সবাই মিলে করি পণ, বন্ধ হবে প্লাস্টিক দূষণ’ শ্লোগানে এবার বাংলাদেশে বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালন করা হবে।
পরিবেশমন্ত্রী জানান, বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ৫ জুন সকাল ১১টায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ড. হাছান মাহ্মুদ। অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু এওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন ২০২২, জাতীয় পরিবেশ পদক ২০২২, বৃক্ষরোপণে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার ২০২১ এবং সামাজিক বনায়নের উপকারভোগীদের মাঝে লভ্যাংশের চেক বিতরণ করা হবে।
বিজ্ঞাপন
শাহাব উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ অন্যান্য গণমাধ্যমে পরিবেশ দিবসের তাৎপর্যভিত্তিক অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে জাতীয় সংবাদপত্রে ক্রোড়পত্র এবং পরিবেশ অধিদফতর থেকে স্মরণিকা ও বুকলেট প্রকাশ করা হবে। দেশের সকল জেলা ও উপজেলায় এবং ঢাকা মহানগরীর ১০০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদ্যাপন করা হবে।
পরিবেশ দিবস উপলক্ষ্যে শিশু চিত্রাঙ্কন, বিতর্ক ও স্লোগান প্রতিযোগিতা, পরিবেশ বিষয়ক সেমিনার এবং শিল্প প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তাদের জন্য সচেতনতামূলক সেমিনার আয়োজন করা হচ্ছে। এছাড়া রোপিত বৃক্ষের যত্ন বৃদ্ধির জন্য এবারের জাতীয় বৃক্ষমেলার প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘গাছ লাগিয়ে যত্ন করি, সুস্থ প্রজন্মের দেশ গড়ি’।
প্রতি বছরের মতো এবারও জাতীয়, বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বৃক্ষমেলার আয়োজনে করা হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বৃক্ষের চারা বিতরণ করা হবে। মোবাইল ফোন অপারেটরদের মাধ্যমে খুদে বার্তা প্রেরণ করা হবে।
মন্ত্রী জানান, প্লাস্টিক দূষণ রোধে দশ বছর মেয়াদী কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক বন্ধে তিন বছর মেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। নিষিদ্ধকৃত পলিথিন শপিং ব্যাগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের অংশ হিসেবে জানুয়ারি ২০১৯ তারিখ থেকে এপ্রিল ২০২৩ তারিখ পর্যন্ত মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ৩ হাজার ৬৯২টি মামলা দায়ের, ৫ কোটি ৪৭ লক্ষ টাকা জরিমানা আদায়, ১ হাজার ৭৬৩ টন পলিথিন জব্দ এবং ১৬৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও, সুন্দরবনসহ অন্যান্য বনভূমিতে যাতে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক দ্বারা কোনো দূষণ না হয় সে বিষয়ে কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
পরিবেশমন্ত্রী বলেন, সুষ্ঠুভাবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধিমালা ২০২১ প্রণয়ন করা হয়েছে। এছাড়াও, সম্প্রতি পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা ২০২৩ প্রণয়ন করা হয়েছে।
শাহাব উদ্দিন বলেন, পরিবেশ সংরক্ষণ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে দেশে ব্যাপকহারে বৃক্ষরোপণ করা হচ্ছে। আগামী ২০৩০ সাল নাগাদ দেশের বৃক্ষাচ্ছাদন মোট ভূমির ২২ দশমিক ৩৭ শতাংশ হতে ২৫ শতাংশে এবং বনভূমির পরিমাণ ১৪ দশমিক ১ শতাংশ হতে ১৬ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এলক্ষ্যে সরকার বনায়ন ও বন সংরক্ষণ, অবক্ষয়িত বন পুনরুদ্ধার এবং টেকসই বন ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। বন সম্প্রসারণ এবং বন উজাড় ও অবক্ষয় রোধে ২০০৯-২০১০ হতে ২০২১-২২ আর্থিক সাল পর্যন্ত মোট ১ লক্ষ ৯৩ হাজার ৪৫৩ হেক্টর ব্লক এবং ২৮ হাজার ৫৫১ সিডলিং কিমি স্ট্রিপ বাগান সৃজন এবং ১০ কোটি ৮৬ লক্ষ চারা বিতরণ ও রোপণ করা হয়েছে।
ডব্লিউএইচ/এমআর