শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

‘পালিয়ে যাওয়া’ দুই কৃষি কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ৩১ মে ২০২৩, ০১:৪১ পিএম

শেয়ার করুন:

‘পালিয়ে যাওয়া’ দুই কৃষি কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি

কর্মক্ষেত্রে ‘অসদাচরণ' ও 'পলায়নে’র অভিযোগে কৃষি ক্যাডারের দুই কর্মকতাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়।

দুই কর্মকর্তার একজন মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের প্রধান কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সিকদার মোহাম্মদ মার্নেস রাসেল (গ্রেডেশন নম্বর ২৯)। অন্যজন হলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মকর্তা সুলতানা রাজিয়া (পরিচিতি নম্বর ২০৩৪)।


বিজ্ঞাপন


বুধবার (৩১ মে) কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে এতে সই করেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ওয়াহিদা আক্তার।

সরকারি চাকরি থেকে অব্যাহতি পাওয়া এই দুই কর্মকর্তা বিশ্বের দুটি দেশে দীর্ঘদিন ধরে অবস্থান করছেন বলে ঢাকা মেইলকে নিশ্চিত করেছেন একাধিক কর্মকর্তা। এর মধ্যে ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সিকদার মোহাম্মদ মার্নেস রাসেল আছেন অস্ট্রেলিয়ায়। আর সুলতানা রাজিয়া অবস্থান করেছেন নেদারল্যান্ডে।

মন্ত্রণালয়ের সম্প্রসারণ-৪ অধিশাখা থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বিসিএস (কৃষি) ক্যাডারভুক্ত মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের প্রধান কার্যালয়েরে ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সিকদার মোহাম্মদ মার্নেস রাসেল (গ্রেডেশন নম্বর ২৯) ২০১৮ সালের ১ মার্চ থেকে অদ্যাবধি বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। কর্মস্থলে যোগদান না করার অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি ৩ (খ) ও ৩ (গ) বিধি মোতাবেক যথাক্রমে 'অসদাচরণ' ও 'পলায়ন' এর অভিযোগে রুজুকৃত ০৪/২০১৮ নম্বর বিভাগীয় মামলায় ২০১৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর অভিযোগনামা ও অভিযোগ বিবরণী জারি করে তাকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ প্রদান করা হয়।

Dhaka


বিজ্ঞাপন


অভিযুক্ত কর্মকর্তা সিকদার মোহাম্মদ মার্নেস রাসেল কারণ দর্শানো নোটিশের কোনো জবাব দেননি। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কোনোরূপ যোগাযোগ না করায় সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি ৭ (২) (ঘ) মোতাবেক অভিযোগটি তদন্ত করার জন্য তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়।

তদন্তকারী কর্মকর্তা ২০২১ সালের ৩১ মে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা,২০১৮ এর বিধি ৩ (খ) ও ৩ (গ) অনুযায়ী যথাক্রমে ‘অসদাচরণ’ ও ‘পলায়নে’র অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে মর্মে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।

প্রতিবেদন ও সংশ্লিষ্ট কাগজপত্রাদি পর্যালোচনা বিধিমালার ৭ (৮) বিধি মোতাবেক অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে গুরুদণ্ড প্রদানের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় এবং একই বিধিমালার ৭ (৯) বিধি মোতাবেক কৃষি মন্ত্রণালয় ২০২১ সালে ২৪ আগস্ট দ্বিতীয়বার কারণ দর্শানো নোটিশ জারি করে।

দ্বিতীয় কারণ দর্শানো নোটিশ প্রাপ্তির ৭ (সাত) কার্যদিবসের মধ্যে জবাব দাখিল করার জন্য নির্দেশনা থাকলেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সিকদার মোহাম্মদ মার্নেস জবাব দাখিল করেননি। পরে তদন্ত প্রতিবেদনসহ সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে তাকে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি ৪ (৩) (ঘ) অনুযায়ী ‘চাকরি হতে বরখাস্ত’ নামীয় গুরুদণ্ড প্রদান করতে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের পরামর্শ চাওয়া হয়। কমিশন প্রস্তাবিত গুরুদণ্ড প্রদানের সিদ্ধান্তের সঙ্গে ঐকমত্য পোষণ করে।

সিকদার মোহাম্মদ মার্নেস রাসেলের বিরুদ্ধে রুজু করা বিভাগীয় মামলায় সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা) ও আপিল) বিধিমালা,২০১৮ এর বিধি ৩ (খ) ও ৩ (গ) অনুযায়ী যথাক্রমে ‘অসদাচরণ’ ও ‘পলায়নের’ অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় এবং বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন প্রস্তাবিত দণ্ডের সঙ্গে ঐকমত্য পোষণ করায় একই বিধিমালার ৪ (৩) (ঘ) অনুযায়ী তাকে 'চাকরি হতে বরখাস্ত' করে গুরুদণ্ড প্রদানের বিষয়ে রাষ্ট্রপতি সদয় সম্মতি দেন। প্রজ্ঞাপনে ২০১৮ সালের ১ মার্চ থেকে তাকে 'চাকরি হতে বরখাস্ত' কার্যকর হিসেবে দেখানো হয়েছে।

অন্য প্রজ্ঞাপনে সুলতানা রাজিয়ার (পরিচিতি নম্বর ২০৩৪) বিষয়ে বলা হয়েছে, বিসিএস (কৃষি) ক্যাডারভুক্ত কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মকর্তা (প্রাক্তন কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা, উপজেলা কৃষি অফিস, নাটোর সদর) ২০০৮ সালে ৮ মে হতে অদ্যাবধি বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। কর্মস্থলে যোগদান না করার অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি ৩ (খ) ও ৩ (গ) বিধি মোতাবেক যথাক্রমে ‘অসদাচরণ’ ও পলায়নে’র অভিযোগে রুজুকৃত ০১/২০২১ নম্বর বিভাগীয় মামলায় ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি অভিযোগনামা ও অভিযোগ বিবরণী জারি করে কারণ দর্শানোর নির্দেশ প্রদান করা হয়।

অভিযুক্ত কর্মকর্তা সুলতানা রাজিয়া কারণ দর্শানো নোটিশের কোনো জবাব প্রদান করেননি। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কোনোরূপ যোগাযোগ না করায় সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা মোতাবেক অভিযোগটি তদন্ত করার জন্য তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়।

তদন্তকারী কর্মকর্তা ২০২১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সুলতানা রাজিয়ার বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি ৩ (খ) ও ৩ (গ) অনুযায়ী যথাক্রমে ‘অসদাচরণ’ ও ‘পলায়ন’ এর অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে মর্মে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। তদন্ত প্রতিবেদন ও সংশ্লিষ্ট কাগজপত্রাদি পর্যালোচনা করে অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে গুরুদণ্ড প্রদানের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় এবং একই বিধিমালার ৭(৯) বিধি মোতাবেক কৃষি মন্ত্রণালয় ওই বছরের ০১ নভেম্বর দ্বিতীয় কারণ দর্শানো নোটিশ জারি করে।

দ্বিতীয় কারণ দর্শানো নোটিশ প্রাপ্তির ৭ (সাত) কার্যদিবসের মধ্যে জবাব দাখিল করার জন্য নির্দেশনা থাকলেও নির্ধারিত সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পরও তিনি জবাব দাখিল করেননি। তাই তদন্ত প্রতিবেদনসহ সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে তাকে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি ৪ (৩) (ঘ) অনুযায়ী ‘চাকরি হতে বরখাস্ত’ গুরুদণ্ড প্রদানের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের পরামর্শ চাওয়া হয়। কমিশন প্রস্তাবিত গুরুদণ্ড প্রদানের সিদ্ধান্তের সঙ্গে ঐকমত্য পোষণ করে।

কৃষি ক্যাডারর সুলতানা রাজিয়া বিরুদ্ধে রুজুকৃত এ বিভাগীয় মামলায় সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা,২০১৮ এর বিধি ৩ (খ) ও ৩ (গ) অনুযায়ী ‘অসদাচরণ’ ও ‘পলায়ন’ এর অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এবং বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন প্রস্তাবিত দণ্ডের সঙ্গে একমত পোষণ করায় একই বিধিমালার ৪(৩) (ঘ) অনুযায়ী তাকে ‘চাকরি হতে বরখাস্ত’ নামীয় গুরুদণ্ড প্রদানের বিষয়ে রাষ্ট্রপতি সদয় সম্মতি জ্ঞাপন করেন। যা পলায়নের তারিখ ২০০৮ সালের ৮ মে থেকে কার্যকর হবে বলে জানানো হয় প্রজ্ঞাপনে।

ডব্লিউএইচ/এমআর

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর