শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ঢাকা

বন রক্ষায় স্থানীয় জনগোষ্ঠীর নিবিড় সম্পৃক্ততা অপরিহার্য

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৩ মার্চ ২০২৩, ১১:০০ পিএম

শেয়ার করুন:

বন রক্ষায় স্থানীয় জনগোষ্ঠীর নিবিড় সম্পৃক্ততা অপরিহার্য

বন রক্ষা ও বনজ সম্পদের টেকসই ব্যবহার নিশ্চিত করতে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সম্পৃক্ততা অপরিহার্য। এ জন্য স্থানীয় জনগোষ্ঠী ও সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটিগুলোর (সিএমসি) টেকসই আর্থিক সক্ষমতা নিশ্চিত করাও জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) বিকেলে আরণ্যক ফাউন্ডেশন আয়োজিত সহ-ব্যবস্থাপনা দিবসের আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।


বিজ্ঞাপন


২০০৮ সালের ২৩ মার্চ ভোরে শীলখালী সহ-ব্যবস্থাপনা সংগঠনের কমিউনিটি টহল দলের তরুণ সদস্য রফিকুল ইসলাম কক্সবাজারের টেকনাফ বন্যপ্রাণি অভয়ারণ্যে পাহারারত অবস্থায় বনদস্যুদের হাতে নিহত হন। রক্ষিত এলাকার প্রকৃতি সংরক্ষণে রফিকুল ইসলামের আত্মত্যাগের স্মরণে ২০০৯ সাল থেকে প্রতি বছর এই দিনটিকে বন অধিদফতর, রক্ষিত এলাকার আশেপাশে বসবাসকারী জনগোষ্ঠী, নিসর্গ নেটওয়ার্কের সকল সহ-ব্যবস্থাপনা সংগঠন ও উন্নয়ন সহযোগীরা যৌথভাবে সহ-ব্যবস্থাপনা দিবস পালন করে আসছে।

এ সময় বন্যপ্রাণি ও মানুষের সহাবস্থান নিশ্চিত করতে সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটির আওতায় কমিউনিটি টহল দলগুলোকে আরও সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। 

এ দিন সভায় বিশেষ অতিথি অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. সারোয়ার আলম। নিজ বক্তব্যে তিনি সহ-ব্যবস্থাপনা দিবসকে আরও বড় পরিসের পালনের জন্য ভবিষ্যতে বন বিভাগ থেকে সর্বোচ্চ সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দেন। সেই সঙ্গে সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটির আঞ্চলিক নেটওয়ার্কগুলোকে একযোগে জাতীয় পর্যায়ে সম্মেলন আয়োজনের আহ্বান জানান।


বিজ্ঞাপন


এছাড়া সভাপতির বক্তব্যে আরণ্যক ফাউন্ডেশনের হেড অব প্রোগ্রামস মাসুদ আলম খান বলেন, রফিকুল ইসলামসহ বন সংরক্ষণ করতে গিয়ে সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটির কাপ্তাইয়ের হিরু মিয়া, মেধাকচ্ছপিয়ার আলী আহমদ ও আজগর আলী, রেমা-কালেঙ্গার মো. সাদেক জীবন দিয়েছেন। পাশাপাশি বিভিন্ন সময়ে বনজ সম্পদ রক্ষা করতে এই কমিটির বহু সদস্য আহত হয়েছেন।

নিজ বক্তব্যে বন রক্ষায় এসব সদস্যদের অবদানের স্মৃতিচারণ করেন মাসুদ আলম খান। সেই সঙ্গে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটির গুরুত্ব তুলে ধরে এই কমিটিগুলোকে আরও শক্তিশালী করার তাগিদ দেন।

>> আরও পড়ুন: করোনাকালেও কমেছে বন, বেড়েছে দখল

সভায় অন্যদের মধ্যে আরণ্যক ফাউন্ডেশনের সিনিয়র উপদেষ্টা ড. আব্দুল কুদ্দুস বলেন, সংরক্ষণযোদ্ধাদের অবদানের কারণেই বন রক্ষায় সহ-ব্যবস্থাপনা আইনি ভিত্তি পেয়েছে। তবে এই কমিটিগুলোকে টেকসই করতে আর্থিক সক্ষমতা জোরদার করতে হবে। এ জন্য সরকারি তহবিল বরাদ্দ ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সিএসআর তহবিল এই খাতে ব্যয়ের আহ্বান জানান তিনি। সেই সঙ্গে বন রক্ষায় স্থানীয় টহল দল (সিপিজি)র জন্য স্থায়ী ভাতা কাঠামো প্রতিষ্ঠা ও প্রতি বছর শ্রেষ্ঠ সিপিজি সদস্যকে পুরস্কৃত করারও সুপারিশ করেন।

এছাড়া সভায় অন্য আলোচকরা বলেন, রক্ষিত অঞ্চল বিধিমালা (পিএ রুলস ২০১৭) এর আওতায় পর্যটন থেকে প্রাপ্ত রাজস্বের অর্ধেক অর্থ সিএমসিগুলোকে প্রদানের সুযোগ রয়েছে। এই ব্যবস্থা কার্যকর করা গেলে সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটিগুলোর জন্য টেকসই আর্থিক সক্ষমতা অর্জন সহজ হবে। এ সময় বন রক্ষায় সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যের অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে দিবসটি জাতীয়ভাবে পালনের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান আলোচকরা।

সভায় অন্যদের মধ্যে সিএমও নেটওয়ার্কের কর্মসূচি সমন্বয়কারী এ এইচ এম কামাল, প্রতিবেশ প্রকল্পের বায়োডাইভারসিটি ও ওয়াইল্ডলাইফ বায়োলজি লিড মদিনুল আহসান এবং শ্রীমঙ্গলের ফিল্ড ডিরেক্টর মাজহারুল ইসলাম জাহাংগীর, শাপলাপুর ভিসিএফ’র সভাপতি মো. শাহজাহান, কোডেক কর্মকর্তা শীতল কুমার নাথ, নেকমের শফিকুর রহমান, হিমছড়ি সিএমসি’র সাবেক সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী, খুলনা আঞ্চলিক সিএমসি নেটওয়ার্কের সভাপতি আসাদুজ্জামান মিলন, শ্রীমঙ্গলের আঞ্চলিক সিএমও নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক জনক দেব বর্মন, ইনানী সিএমসির সভাপতি শহীদুল্লাহ কায়সার ও ফাসিয়াখালী সিএমসির কোষাধ্যক্ষ এনামুন্নাহার মুন্নী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

টিএই/আইএইচ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর