শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

তামাকে বছরে দেশে ১ লাখ ৬০ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৫ জানুয়ারি ২০২৩, ০৩:০৪ পিএম

শেয়ার করুন:

তামাকে বছরে দেশে ১ লাখ ৬০ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু

বাংলাদেশে বছরে ১ লক্ষ ৬০ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যুর জন্য তামাক কোম্পানি দায়ী বলে মন্তব্য করেছেন ‍দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান। তিনি বলেছেন, ‘তামাক সেবন মানে মৃত্যুর দিকে ক্রমশ এগিয়ে যাওয়া। তামাক ব্যবহারজনিত মৃত্যু, অসুস্থতা এবং তামাকের অন্যান্য বিধ্বংসী প্রভাব নিশ্চিতভাবে প্রমাণিত হলেও তামাক কোম্পানিগুলো সুচতুরভাবে তাদের এই চরিত্র আড়াল করার চেষ্টা করছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘তামাক চাষ, তামাকজাত দ্রব্য উৎপাদন ও ব্যবহার করার আর্থিক ও স্বাস্থ্যগত ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে ভালো করে জানা সত্ত্বেও তামাক কোম্পানিসমূহ তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারছে, এটা দুঃখজনক।


বিজ্ঞাপন


বুধবার (২৫ জানুয়ারি) ঢাকায় সিরডাপ মিলনায়তনে ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন অব দি রুরাল পুয়র আয়োজিত "মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ২০৪০ সালের পূর্বেই তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে নীতিনির্ধারকের কাছে প্রত্যাশা" শীর্ষক জাতীয় সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

ডর্পের নির্বাহী উপদেষ্টা ও সাবেক সচিব মো. আজহার আলী তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এমপি, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) কাজী জেবুন্নেসা বেগম, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের সমন্বয়কারী (অতিরিক্ত সচিব) হোসেন আলী খোন্দকার এবং বিসিআইসি'র সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান। অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্য দেন ডর্পের প্রতিষ্ঠাতা সিইও এএইচএম নোমান ।

এনামুর রহমান বলেন, প্রায় ৩ কোটি ৭৮ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করেন। ধোঁয়াবিহীন তামাক ব্যবহার করেন ২ কোটি ২০ লাখ এবং ধূমপায়ী ১ কোটি ৯২ লাখ। কর্মক্ষেত্রসহ পাবলিক প্লেস ও পরিবহনে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হন ৩ কোটি ৮৪ লাখ। তামাক ব্যবহারের অর্থনৈতিক ক্ষতির (চিকিৎসা ব্যয় এবং উৎপাদনশীলতা হারানো) পরিমাণ বছরে ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা। দৈনিক তামাকের প্রভাবে মৃত্যুবরণ করে ৪৪২ জন। 

এই প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়া প্রস্তুত ও প্রয়োজন মাফিক তার সংশোধন করেছে। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়া সংশোধনীতে যেসব প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এগুলো হলো, সব পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে ‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান’ রাখার বিধান বিলুপ্ত করা, বিক্রির স্থানে তামাকজাত দ্রব্যের প্রদর্শন বন্ধ করা, তামাক কোম্পানিগুলোর সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচি (সিএসআর) বন্ধ করা, বিড়ি-সিগারেটের খুচরা শলাকা বিক্রি বন্ধ করা, ই-সিগারেট আমদানি বাজারজাত বন্ধ করা এবং তামাকজাত পণ্যের মোড়কে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণীর আকার বাড়ানো। 


বিজ্ঞাপন


প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি এই আইনে তামাকের প্রসার রোধে যুক্তিসংগত প্রস্তাবগুলো অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে এবং আজকের আলোচনা থেকে এটা পরিষ্কার যে দ্রুত আইনটি পাস হলে তামাকজাত পণ্য সেবনের হার অনেকাংশে কমে আসবে।

এনামুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছেন ২০৪০ সালের পূর্বেই বাংলাদেশ থেকে তামাকের ব্যবহার সম্পূর্ণ নির্মূল করতে হবে। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে তিনি যে সকল বিষয়গুলোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন তার মধ্যে অন্যতম হলো তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নের জন্য সব ধরনের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং এসডিজি বাস্তবায়নের অগ্রাধিকারের সঙ্গে মিল রেখে আইনগুলোকে এফটিসিটি’র সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা। 

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় তামাকের বিরুদ্ধে আন্দোলনের অংশ হিসেবে অবদান রাখছে। দুর্যোগকালীন আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থানরত জনগোষ্ঠীর কাছে তামাকের নেতিবাচক দিক তুলে ধরা হয়। এতে করে জনগণ বিশেষ করে নারী ও শিশুরা পরোক্ষ ধুমপানের স্বীকার হয় না এবং তামাকজাত পণ্য সেবনে নিরুতসাহিত হয়।

সংশোধিত খসড়া তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটি সংসদে দ্রুত অনুমোদন পেলে জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতকল্পে সরকারের যে অঙ্গীকার তার বাস্তবায়নের পথে আমরা আরেক ধাপ এগিয়ে যাব। সর্বোপরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী ২০৪০ সালের পূর্বেই তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে এই আইনটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে।

ডিএইচডি/ডব্লিউএইচ/এমআর

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর