বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

আকাশছোঁয়া ইটের দাম, গাড়িতে বেড়েছে ৮ হাজার

সাকিব আবদুল্লাহ
প্রকাশিত: ০৬ মার্চ ২০২২, ১২:৪৪ পিএম

শেয়ার করুন:

আকাশছোঁয়া ইটের দাম, গাড়িতে বেড়েছে ৮ হাজার

ঢাকায় এক বছরের ব্যবধানে ট্রাকপ্রতি ইটের দাম বেড়েছে অন্তত ছয় থেকে আট হাজার টাকা। এক ট্রাকে ইট বিক্রি হয় দুই থেকে তিন হাজার পিস। গতবছর ইটভাটাগুলোতে এই সময়ে সর্বোচ্চ মানের এক ট্রাক ইটের দাম ছিল ২০-২২ হাজার। বর্তমানে তা বিক্রি হচ্ছে ২৭-২৮ হাজারে। কখনো কখনো উঠে যাচ্ছে ত্রিশ হাজারেও।

ঢাকার বাইরে ইটের দাম বৃদ্ধির পরিমাণ আরও বেশি। সেখানে দুই হাজার ইটই বিক্রি হচ্ছে ২১-২২ হাজারে। আবার মাঘ মাসের হঠাৎ বৃষ্টিতে বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ভাটা মালিকরা।


বিজ্ঞাপন


আমিনবাজার-সাভার এলাকার ভাটাগুলো ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় সব জায়গাতেই বৃষ্টিতে লাখ লাখ টাকার কাঁচা ইট নষ্ট হয়েছে। মোট ক্ষতির হিসাব কারও কাছে পাওয়া যায়নি। শুধু এই এলাকায় আড়াই শতাধিক ইটভাটা রয়েছে।

ভাটা মালিকরা অনুমান করে বলছেন, তাদের মোট ক্ষতির পরিমাণ কয়েক কোটি টাকা ছাড়াবে। ইটের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে কয়লার দামও। কয়লার কারণেই ইটের দাম বাড়ছে বলে জানিয়েছেন ভাটা মালিকরা। আগে যে কয়লা টনপ্রতি আট থেকে নয় হাজারে পাওয়া যেত, তার দাম এখন টনপ্রতি ২০-২২ হাজার টাকা।

কয়লা আমদানিকারকরা বলছেন, বিশ্ববাজারে কয়লার দাম বেশি। তারাও বেশি মূল্যে আমদানি করছেন, তাই দেশের বাজারেও দাম বেড়েছে। তারা বলছেন, লোকসান পোষাতে বাধ্য হয়েই দাম বাড়িয়েছেন ভাটা মালিকরা। এদিকে উচ্চমূল্যের কারণে তাদের ক্রেতা কমছে বলে ইট ভাটার মালিকরা ঢাকা মেইলকে জানিয়েছেন। 

গতবছর তুলনামূলক কম মানের ইট বিক্রি হচ্ছিল ট্রাকপ্রতি ১২-১৩ হাজারে। সেই ইটও এখন ১৮ হাজারের নিচে পাওয়া যাচ্ছে না। সব মিলিয়ে স্থাপনা নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোও বিপদে পড়েছে।


বিজ্ঞাপন


রিয়েল এস্টেট এন্ড হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (রিহ্যাব) সহ সভাপতি কামাল মাহমুদ ঢাকা মেইলকে বলেন, শুধু ইট না, সব 
নির্মাণসামগ্রীর দামই আকাশছোঁয়া। এতে স্থাপনা নির্মাণের খরচ অনেক বেড়ে গেছে। এগুলোর দাম কমাতে হলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে এগিয়ে আসতে হবে। 
জানা গেছে, বর্তমানে বাংলাদেশে কয়লা বাণিজ্যে ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন করসহ ২৫ শতাংশ পর্যন্ত কর ও শুল্ক পরিশোধ করতে হয়।

বাংলাদেশ কয়লা আমদানিকারক সমিতির সভাপতি সৈয়দ আতিকুল হাসান ঢাকা মেইলকে বলেন, বিশ্ব বাজারে কয়লার দাম বেড়েছে। আমরা টনপ্রতি ৬২ ডলারে যে কয়লা কিনতাম তা বেড়ে ১৬০ ডলারের আশপাশে আছে। এর ওপর আছে ট্যাক্স। দাম তো বাড়বেই।

আমিনবাজারের রনি ব্রিকসের তপন মন্ডল ঢাকা মেইলকে বলেন, কদিনের বৃষ্টিতে ২/৩ লাখ টাকার ইট নষ্ট হয়ে গেছে। কয়লার দামও বেশি, মানও ভালো না। আগের চেয়ে বেশি কয়লা লাগছে ইট পোড়াতে। দাম বৃদ্ধির কারণে কাস্টমারও কমে গেছে।

Brick kiln

তপন মন্ডলের হাহাকার প্রতিধ্বনিত হলো সাভারের ডিবিএস ব্রিকফিল্ডের ম্যানেজার মো. মোকলেসুর রহমানের কন্ঠেও। তিনি ঢাকা মেইলকে বলেন, এক টন কয়লা ছিল সাত হাজার টাকা। তা বেড়ে এখন হয়েছে ২০ হাজার টাকা। আমার তো কাঁচা ইট মজুদ আছে, যেভাবেই হোক সিজন শেষের আগে পোড়াতে হবে। তাই বেশি দামে কয়লা না কিনে উপায় নেই।

নেত্রকোনা জেলার অন্যতম বড় ইটভাটা শাপলা ব্রিকসের মালিক দেলোয়ার হোসেন দুলাল ঢাকা মেইলকে বলেন, বৃষ্টির ক্ষতি যেমন তেমন, কয়লার দাম দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। আমরা দুই হাজার ইট বিক্রি করছি ২০-২১ হাজারে। একটু কম মানের ইটও বিক্রি করছি ১৮-১৯ হাজার টাকায়।

এসএ/এমআর/ একেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর