শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

‘বন রক্ষা ছাড়া বন্যপ্রাণী রক্ষা হবে না’

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২ আগস্ট ২০২২, ০৬:৩৮ পিএম

শেয়ার করুন:

‘বন রক্ষা ছাড়া বন্যপ্রাণী রক্ষা হবে না’
ফাইল ছবি

বন্যপ্রাণী রক্ষা করতে হলে আগে বন রক্ষা করতে হবে বলে মনে করেন পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতারা। তারা বলেন, দেশে বন, সংরক্ষিত বনাঞ্চলসহ সবধরনের বন ধ্বংস হচ্ছে বলে প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে হাতিসহ বিভিন্ন প্রাণী। 

শুক্রবার (১২ আগস্ট) বিকেলে ৩৩টি পরিবেশবাদী সংগঠনের জোট ‘বাংলাদেশ প্রকৃতি সংরক্ষণ জোট (বিএনসিএ)’ বিশ্ব হাতি দিবস-২০২২ উপলক্ষে আয়োজিত একটি ওয়েবিনারে পরিবেশকর্মীরা এসব কথা বলেন।


বিজ্ঞাপন


দেশে অবাধে হাতি নিধন চলছে উল্লেখ করে তারা বলেন, গত কয়েক বছরে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক হাতি কমেছে। মানুষের হাতে যেভাবে হাতি নিধন হচ্ছে এবং হাতি সংরক্ষণে কর্তৃপক্ষ যেভাবে উদাসীনতা দেখাচ্ছে, এই ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী কয়েক বছর পর চিড়িয়াখানা ছাড়া দেশের আর কোথাও হাতির অস্তিত্ব থাকবে না।

পরিবেশবাদী সংগঠনের এসব নেতা হাতি সংরক্ষণে এবং হাতি নিধন বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান সংশ্লিষ্টদের প্রতি। হাতির আবাসস্থল রক্ষায় তারা গুরুত্বারোপ করেন। তারা বলেন, হাতিসহ বন্যপ্রাণী রক্ষা করতে হলে আগে বন রক্ষা করতে হবে। 

‘বাংলাদেশ প্রকৃতি সংরক্ষণ জোট (বিএনসিএ)’-এর আহ্বায়ক এবং স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদারের সভাপতিত্বে ওয়েবিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. গুলশান আরা লতিফা।

জোটের যুগ্ম আহ্বায়ক এবং রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টার (আরডিআরসি)-এর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজের পরিচালনায় এই ওয়েবিনারের অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন সেন্টার ফর গ্লোবাল এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (সিজিইডি)-এর নির্বাহী পরিচালক আবদুল ওয়াহাব, নোঙরের চেয়ারম্যান সুমন শামস, পরিবেশ বিজ্ঞানের শিক্ষক ড. মাহমুদা পারভিন, বন্যপ্রাণী গবেষক আদনান আজাদ, ন্যাচার লাভিং পিপল (এনএলপি)-এর সভাপতি এহসানুল হক জসীম, এনভায়রনমেন্ট পিপলের প্রধান নির্বাহী রাশেদুল মজিদ, মেরিন জার্নালিস্ট নেটওয়ার্ক (এমজেএন)-এর সাদিয়া চৌধুরী, আমিনুল মিঠু, শহীদ হাসান খান, নয়ন সরকার, আলমগীর হোসাইন, স্বপন কুমার নাথ প্রমুখ। 


বিজ্ঞাপন


bb

গুলশান আরা লতিফা বলেন, এশিয়ান হাতির একটা বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, তারা সহজে কাউকে আঘাত করেনা। কিন্তু এখন তারা পাশবিক অত্যাচারের শিকার। এক সময় হাতিরঝিল ও পিলখানায় হাতি দেখা যেতো, হাতিরঝিল থেকে পিলখানায় হাতি নেওয়া হতো যত্ন করার জন্য। কিন্তু আজ আর সেই হাতি দেখা যায় না। হাতি কমতে কমতে দেশে হাতির এই সংখ্যা এখন প্রায় ২০০। 

হাতি সংরক্ষণের ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, হাতি রক্ষা করতে হলে হাতির আবাসস্থল সংরক্ষণ করতে হবে। প্রয়োজনে বিশেষ পদক্ষেপ নিয়ে সংরক্ষিত বন তৈরির মাধ্যমে হাতি সংরক্ষণ করতে হবে। 

বন-জঙ্গলের ভেতর দিয়ে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলেও হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হচ্ছে উল্লেখ করে গুলশান আরা লতিফা বলেন, উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নের সময় আমাদেরকে বন ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের বিষয়টির ওপর গুরুত্বারোপ করতে হবে। 

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, হাতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বন্যপ্রাণী। হাতিসহ সবধরনের বন্যপ্রাণী রক্ষা করতে হলে আমাদেরকে আগে বনাঞ্চল রক্ষা করতে হবে। দেশে বন থাকলে হাতি ও অন্যান্য বন্যপ্রাণী থাকবে। 

বন ও বন্যপ্রাণী রক্ষায় সব সময় সোচ্চার ভূমিকা পালন অব্যাহত রাখতে তিনি পরিবেশবিদ, পরিবেশকর্মী ও পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোর প্রতি আহ্বান জানান। 

এসএএস/জেবি

 

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর