রোববার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

শৈত্যপ্রবাহে ঢাকায় নেই সূর্যের দেখা, কমছে তাপমাত্রা, বাড়ছে দুর্ভোগ

মাহফুজুর রহমান
প্রকাশিত: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:৫৯ পিএম

শেয়ার করুন:

শৈত্যপ্রবাহে ঢাকায় নেই সূর্যের দেখা, কমছে তাপমাত্রা, বাড়ছে দুর্ভোগ

শৈত্যপ্রবাহের প্রভাবে রাজধানী ঢাকায় সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সূর্যের দেখা নেই, তাপমাত্রা নেমে যাওয়ায় নিম্নবিত্ত ও ছিন্নমূল মানুষের জীবনযাপন হয়ে উঠেছে চরম কষ্টকর। এছাড়াও সাধারণ মানুষ যারা কাজে ঘরের বাইরে বেরিয়েছেন তারাও পরেছে বিপাকে।

রোববার (২৮ ডিসেম্বর) সকাল পেরিয়ে দুপুর হলেও আকাশে সূর্যের দেখা মেলেনি। ঘন মেঘ আর কুয়াশায় ঢেকে থাকা রাজধানীর বাতাসে শীতের তীব্রতা স্পষ্ট। দিনের আলো থাকলেও উষ্ণতা নেই, বরং সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ঠান্ডা যেন আরও হাড়ে বসছে। এই শৈত্যপ্রবাহে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্নবিত্ত ও ছিন্নমূল মানুষ, যাদের কাছে শীত মানে শুধু আবহাওয়ার পরিবর্তন নয়, টিকে থাকার আরেকটি কঠিন অধ্যায়।


বিজ্ঞাপন


picture

সকাল থেকেই ঢাকার ফুটপাত, বাসস্ট্যান্ড, রেলস্টেশন ও উড়ালসড়কের নিচে দেখা গেছে শীতে কাঁপতে থাকা মানুষ। কেউ পুরনো কম্বল, কেউ বস্তা বা পলিথিন গায়ে জড়িয়ে বসে আছেন। অনেক জায়গায় ছোট ছোট আগুন জ্বালিয়ে শরীর গরম রাখার চেষ্টা চলছে। আগুনের চারপাশে জড়ো হওয়া মানুষগুলোর চোখেমুখে ক্লান্তি, ঠান্ডা আর অনিশ্চয়তার ছাপ।

শীতের এই কষ্ট শুধু ছিন্নমূলদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। রাজধানীর বস্তি এলাকাগুলোতেও একই চিত্র। টিনের ঘর, ভাঙা দেয়াল আর স্যাঁতসেঁতে মেঝে ঠান্ডা আটকে রাখতে পারছে না। অনেক পরিবার রাতে একসঙ্গে গাদাগাদি করে ঘুমানোর চেষ্টা করছে, যাতে শরীরের তাপ কিছুটা হলেও ভাগাভাগি করা যায়।

 


বিজ্ঞাপন


দিনমজুর, হকার ও রিকশাচালকদের জন্য শীত মানে দ্বিগুণ সংকট। একদিকে তীব্র ঠান্ডা, অন্যদিকে কাজ কমে যাওয়া। অনেকেই শীতজনিত অসুস্থতায় ভুগছেন, ফলে আয়ের পথ আরও সংকুচিত হচ্ছে। চিকিৎসা নেওয়ার সামর্থ্য না থাকায় অসুস্থতাও দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে।

গুলিস্তান এলাকায় থাকা বৃদ্ধা মরিয়ম বলেন, “শীত এলেই আমাদের কষ্ট আরও বেড়ে যায়। কেউ কেউ কম্বল দেয়, কিন্তু সবাই তো আর আসে না।” তার কথায় ফুটে ওঠে দীর্ঘদিনের অবহেলার অনুভূতি শীতের সঙ্গে সঙ্গে যেন সমাজের প্রান্তিক মানুষগুলো আরও আড়ালে চলে যায়।

picture

সূর্যহীন এই দিনে ঢাকা শহরের দুই বাস্তবতা আরও স্পষ্ট। একদিকে উঁচু ভবনের ভেতরে মানুষ গরম কাপড় আর গরম পানীয়তে স্বস্তি খুঁজে নিচ্ছে, অন্যদিকে সেই ভবনের নিচেই ফুটপাতে কেউ শীতের সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে থাকার চেষ্টা করছে। শৈত্যপ্রবাহে কমতে থাকা তাপমাত্রার সঙ্গে সঙ্গে এই ব্যবধানও যেন আরও বেড়ে যাচ্ছে।

এই শীতে একটি কম্বল, একটি গরম জামা বা সামান্য সহায়তাই নিম্নবিত্ত ও ছিন্নমূল মানুষের জন্য বড় আশ্রয় হয়ে উঠতে পারে। সূর্যহীন এই ধূসর দিনে তাদের অপেক্ষা কবে একটু উষ্ণতার হাত বাড়বে।

এম/এআর

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর