মানুষ-হাতি সংঘাত কমাতে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেছেন, মানুষ-হাতি সংঘাত নিরসনে পরিবেশগত সীমানায় বায়ো-ফেন্সিং নির্মাণের অংশ হিসেবে ১০ কিলোমিটার জীবন্ত কাঁটাযুক্ত উদ্ভিদের বেড়া (বেত, লেবু ও বরই) তৈরি করা হবে।
বুধবার (২০ আগস্ট) বন অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে (বন ভবন) বিশ্ব হাতি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা এসব বলেন।
বিজ্ঞাপন
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, হাতি সংরক্ষণের জন্য তাদের প্রাকৃতিক আবাসস্থল রক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি। হাতিবান্ধব গাছ লাগানো, হাতির করিডোর চিহ্নিত ও সংরক্ষণ, সঠিক হাতির সংখ্যা নির্ধারণে জরিপ পরিচালনা এবং মানুষ-হাতি সংঘাত কমাতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এখন সময়ের দাবি।
উপদেষ্টা আরও বলেন, পোষা হাতির নিয়ন্ত্রণ, গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং হাতির জন্য টেকসই আবাসস্থল নিশ্চিত করা অপরিহার্য। তিনি জানান, হাতি সংরক্ষণের জন্য একটি বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় ৩৫০ হেক্টর হাতির খাদ্যবন এবং ৫০ হেক্টর বাঁশবন সৃজন করা হবে। সেখানে রোপিত উদ্ভিদের পর্যাপ্ত সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, অ্যান্টি-ডিপ্রেডেশন স্কোয়াড (এডিএস), এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিম (ইআরটি) এবং এলিফ্যান্ট রেসকিউ টিম (ইআরটি) হাতি অভয়ারণ্যের কাছে গঠন করা হবে সংরক্ষণ কার্যক্রম জোরদার করার জন্য। হাতির চলাচল পর্যবেক্ষণে ১৬টি গাছের টাওয়ার এবং উদ্ধারকাজের জন্য দুটি হাতি উদ্ধার কেন্দ্র স্থাপন করা হবে— একটি গাজীপুর সাফারি পার্কে এবং অন্যটি কক্সবাজারের দুলাহাজারা সাফারি পার্কে।
উপদেষ্টা জানান, আহত হাতির চিকিৎসার জন্য সিলেট, চট্টগ্রাম, রাঙামাটি ও শেরপুর অঞ্চলে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি করা হবে। পাশাপাশি, মানুষ-হাতি সংঘাতে মানবসৃষ্ট প্রভাব ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মূল্যায়ন করা হবে এবং নৃতাত্ত্বিক জরিপ পরিচালনা করা হবে। চট্টগ্রামের চুনতিতে ১০ একর জমিতে একটি হাতি অভয়ারণ্য স্থাপন করা হবে গৃহপালিত হাতির পুনর্বাসনের জন্য।
বিজ্ঞাপন
বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমির হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন- পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. খায়রুল হাসান, দুবাই সাফারি পার্কের সাবেক প্রধান ও বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ ড. মোহাম্মদ আলী রেজা খান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মনিরুল এইচ. খান, বন অধিদপ্তরের সংরক্ষক (মধ্যাঞ্চল) এ.এস.এম জহির উদ্দিন আকন এবং আরণ্যক ফাউন্ডেশনের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক ও হাতি বিশেষজ্ঞ ড. মোহাম্মদ আব্দুল মুতালেব, বন অধিদপ্তরের সংরক্ষক (বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বৃত্ত) মো. শানাউল্লাহ পাটওয়ারী প্রমুখ।
এএইচ/ক.ম

