শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

বৃষ্টির মধ্যে ঢাকার বাতাস কতটা দূষিত?

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮ আগস্ট ২০২৫, ০২:২১ পিএম

শেয়ার করুন:

বৃষ্টির মধ্যে ঢাকার বাতাস কতটা দূষিত?

দিনভর গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে, তবুও শ্বাস নেওয়ার জন্য ঢাকার বাতাস নিরাপদ নয়। বৃষ্টি সাধারণত বায়ুদূষণের মাত্রা কমিয়ে আনলেও আজ শুক্রবারও রাজধানীর বাতাসে দূষণের মাত্রা ছিল বেশি।

এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) অনুযায়ী ঢাকার স্কোর দাঁড়িয়েছে ৭৯-এ, যা বাতাসকে ‘মধ্যম’ বা সহনীয় মানদণ্ডে ফেলেছে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) বেঁধে দেওয়া নিরাপদ মাত্রার চেয়ে আজ ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণার (পিএম ২.৫) পরিমাণ প্রায় পাঁচ গুণ বেশি পাওয়া গেছে।


বিজ্ঞাপন


বাতাসের মান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার বেলা ১২টার দিকে বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় ঢাকার অবস্থান ছিল ২২তম। বাতাসের মান তুলনামূলকভাবে ভালো হওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, শহরের বেশ কয়েকটি এলাকায় এখনও অস্বাস্থ্যকর মাত্রায় রয়েছে দূষণ।

ঢাকার সবচেয়ে দূষিত বাতাস আজ রেকর্ড করা হয়েছে পীরেরবাগ রেললাইন এলাকায়, যেখানে একিউআই স্কোর পৌঁছেছে ১০৫-এ। এই মান ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে চিহ্নিত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দূষণ হয়েছে পুরান ঢাকার বেচারাম দেউড়িতে, যেখানে স্কোর ৮৬। পাশাপাশি কল্যাণপুর, মিরপুর ৬-এর শিয়ালবাড়ি সরকারি অফিসার্স কোয়ার্টার এবং ইস্টার্ন হাউজিং এলাকাতেও একিউআই স্কোর ছিল ৮৪, যা ‘মধ্যম’ পর্যায়ের মধ্যে পড়ে।

বিশ্বব্যাপী শহরগুলোর দূষণের তালিকায় আজ শীর্ষে রয়েছে গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের রাজধানী কিনশাসা, যার বাতাস ‘অস্বাস্থ্যকর’ পর্যায়ের মধ্যে পড়েছে। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে উগান্ডার কাম্পালা, এরপর ভারতের কলকাতা, ইন্দোনেশিয়ার বাতাম এবং চিলির সান্তিয়াগো। এই শহরগুলোর বাতাসও ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ বলে চিহ্নিত।

আইকিউএয়ারের সূচক অনুযায়ী, ০–৫০ স্কোর মানে বাতাস ভালো, ৫১–১০০ স্কোরে বাতাস মাঝারি বা সহনীয় ধরা হয়। ১০১–১৫০ স্কোর বাতাসকে সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর করে তোলে। ১৫১–২০০ স্কোরের মধ্যে থাকলে তা সাধারণভাবে অস্বাস্থ্যকর, ২০১–৩০০ হলে খুবই অস্বাস্থ্যকর এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা দুর্যোগপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হয়।


বিজ্ঞাপন


এই মানদণ্ডের আলোকে আজকের বৃষ্টি সত্ত্বেও ঢাকার বাতাসে বিপজ্জনক মাত্রায় পিএম ২.৫-এর উপস্থিতি উদ্বেগজনক।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সড়কে যানজট, নির্মাণকাজ, শিল্পকারখানার ধোঁয়া ও অপরিকল্পিত নগরায়ণের কারণে বৃষ্টির পরেও বাতাসে দূষণের পরিমাণ কমছে না। বরং তা নাগরিকদের শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। এই পরিস্থিতিতে বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ, বিশেষত নগর অবকাঠামোতে পরিবেশবান্ধব নীতিমালা বাস্তবায়ন, জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং নিয়মিত পরিবেশ মনিটরিং অত্যন্ত জরুরি হয়ে উঠেছে।

এমআই/এএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর