অবৈধভাবে পাথর উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে সরকার। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানিয়েছেন, সিলেট অঞ্চলে যারা বেআইনিভাবে পাথর তুলছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শনিবার (১৪ জুন) বিকেলে সিলেট সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। এ সময় তিনি জানান, বেআইনিভাবে প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণকে সরকার বরদাস্ত করবে না। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করবে।
বিজ্ঞাপন
রিজওয়ানা হাসান বলেন, সরকার পাথর কোয়ারি থেকে যে রাজস্ব পায়, তার চেয়ে বেশি ক্ষতি হচ্ছে অতিরিক্ত ওজনের ট্রাক চলাচলে। অথচ দেশের চাহিদার মাত্র ৬ শতাংশ পাথরই আসে স্থানীয় উৎস থেকে। এই সামান্য প্রয়োজন মেটাতে আমরা আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদ ধ্বংস করতে পারি না।
এর আগে, তিনি পরিবেশ অধিদফতর, বন বিভাগ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে নদী, হাওর ও বন রক্ষা এবং পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনার নানা দিক নিয়ে আলোচনা হয়।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, সিলেটের প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য রক্ষা করতে হলে সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। তিনি পাহাড়-টিলা সংরক্ষণ, বালু ব্যবস্থাপনা এবং বিভিন্ন দপ্তরের মধ্যে তথ্য বিনিময় ও সমন্বয়ের ওপর গুরুত্ব দেন।
পরিবেশ উপদেষ্টা সরকারি অফিসে সিঙ্গেল-ইউজ প্লাস্টিক বন্ধে নির্দেশনা দেন। পাশাপাশি পাহাড়-টিলা কাটার বিরুদ্ধে জনসচেতনতা তৈরি করতে ‘না’ বোঝানো সাইনবোর্ড লাগানোর নির্দেশ দেন।
বিজ্ঞাপন
বন্যা প্রতিরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেন তিনি। একইসঙ্গে আকাশমণি গাছ কেটে স্থানীয় প্রজাতির গাছ লাগানোর নির্দেশ দেন বন বিভাগের কর্মকর্তাদের।
এছাড়া অবৈধভাবে স্থাপন করা স্টোন ক্রাশিং মেশিনে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধের বিষয়েও সংশ্লিষ্টদের পদক্ষেপ নিতে বলেন তিনি।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। বক্তব্য রাখেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব মো. সাইফুল ইসলাম, বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা-উন-নবী, জেলা প্রশাসক মো. শের মাহবুব মুরাদ, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির এবং পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালক ফেরদৌস আনোয়ার।
এর আগে, উপদেষ্টারা জাফলংয়ের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন এবং ইকো-ট্যুরিজম উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে মতবিনিময় করেন। পরে জাফলং স্টোন মিউজিয়াম ও হরিপুর রেস্ট হাউসে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতেও অংশ নেন।
এসএইচ/এইউ