টেকসই ও কম-কার্বন নির্গমনভিত্তিক ধান উৎপাদনে বিনিয়োগ বাড়াতে নতুন একটি উদ্যোগ চালু করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এবং কনসাল্টেটিভ গ্রুপ অন ইন্টারন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল রিসার্চ (সিজিআইএআর)। গেটস ফাউন্ডেশনের সহায়তায় নেওয়া এ উদ্যোগের লক্ষ্য হলো এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের লাখ লাখ দরিদ্র কৃষকের জীবনমান উন্নয়ন।
সোমবার (৯ জুন) এডিবির প্রধান কার্যালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন জানানো হয়। প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ফিলিপাইন, কম্বোডিয়া এবং চীনে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।
বিজ্ঞাপন
সিজিআইএআর একটি বৈশ্বিক গবেষণা অংশীদারিত্ব প্ল্যাটফর্ম, যা কৃষিতে গবেষণা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে দারিদ্র্য হ্রাস, খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং প্রাকৃতিক সম্পদের সংরক্ষণে কাজ করে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে খাদ্য, ভূমি ও পানিসম্পদ ব্যবস্থার রূপান্তর ঘটানোই এর মূল লক্ষ্য। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার, উন্নয়ন সংস্থা, দাতব্য প্রতিষ্ঠান এবং গবেষণা সংগঠন এই প্ল্যাটফর্মের অংশীদার।
এডিবি জানায়, ধান এ অঞ্চলের মানুষের প্রধান খাদ্য। প্রতিদিনের খাবারের বড় একটি অংশ এবং কোটি গ্রামীণ দরিদ্র মানুষের জীবিকার অন্যতম প্রধান ভিত্তি হলো ধান। তবে উৎপাদন হ্রাস, পানির সরবরাহ কমে যাওয়া এবং গ্রিনহাউজ গ্যাসের নির্গমন বৃদ্ধির কারণে ধানচাষ এখন নানা ধরনের সংকটের মুখে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা না করা গেলে খাদ্য নিরাপত্তা ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়বে।
এডিবির ভাইস প্রেসিডেন্ট (সেক্টর ও থিম) ফাতিমা ইয়াসমিন বলেন, “চাল এশিয়ার খাদ্য নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি পুরো অঞ্চলের ক্যালরির এক-চতুর্থাংশ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অর্ধেকেরও বেশি জোগান দেয়। কোটি কোটি কৃষকের জন্য চাল শুধু খাদ্য নয়, এটি তাদের জীবিকা। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশগত অবনতির কারণে এই জীবিকাই আজ হুমকির মুখে। নতুন এ উদ্যোগের মাধ্যমে সহনশীল, উচ্চ ফলনশীল ও স্বল্প-নির্গমন প্রযুক্তির প্রসার, টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা, অন্তর্ভুক্তিমূলক মূল্য শৃঙ্খল এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পুষ্টির উন্নয়নে গতি আসবে।’
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ২০২৫ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে এই কর্মসূচিতে সর্বোচ্চ ১৫০ কোটি ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা) বিনিয়োগ করবে এডিবি। এর উদ্দেশ্য হলো টেকসইভাবে ধান উৎপাদন বৃদ্ধি, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা এবং পানি ও কার্বনের ওপর চাপ কমানো। এই প্রকল্প এডিবির ঘোষিত ২০৩০ সালের মধ্যে খাদ্য ব্যবস্থার রূপান্তরের জন্য নির্ধারিত ৪০০০ কোটি ডলারের বৃহৎ অঙ্গীকারেরই অংশ।
বিজ্ঞাপন
টিএই/জেবি