তিল যেমন উপকারী, তেমন তিলের তেলেরও যথেষ্ট পুষ্টিগুণ রয়েছে। ক্যালশিয়াম, ফসফরাসের মতো খনিজ এবং প্রয়োজনীয় বেশ কয়েকটি অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টেও রয়েছে তিলের মধ্যে। খুব সহজেই এই ফসলের চাষ করে লাভবান হওয়ার সুযোগ আছে। জানুন তিল চাষ সম্পর্কে।
বিজ্ঞাপন
বাংলাদেশে বিভিন্ন জাতের তিল রয়েছে। এর মধ্যে উন্নত ও অধিক ফলনের জন্য অনেকেই চাষ করেন বারি তিল-৪। এই জাতটি সরকারিভাবে উন্নয়ন করা হয়েছে।
তিলের জাত: বারি তিল-৪
অবমূক্তকারী প্রতিষ্ঠানঃ বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট
জীবনকালঃ ৯০-৯৫ দিন দিন
বিজ্ঞাপন
সিরিজ সংখ্যাঃ ৪
উৎপাদন ( সেচ সহ ) / প্রতি হেক্টরঃ ১২৫০-১৫০০ কেজি কেজি
উৎপাদন ( সেচ ছাড়া ) / প্রতি হেক্টরঃ ০ কেজি
তিলের উন্নত জাতের বৈশিষ্ট
১. ৯০-১২০ সে.মি.। কান্ড, শাখা ও প্রশাখা লোমবিহীন।
২. গাড় সবুজ ও অমসৃণ।
৩. ৩-৪টি প্রাথমিক শাখা। শাখাগুলি কান্ডের একটু উপরে জন্মায়। প্রতিটি শাখায় ২-৩ টি প্রশাখা জন্মায়।
৪. পুষ্পের রং হালকা গোলাপি।
৫. প্রতি গাছে শুটির সংখ্যা ৮৫-৯০ টি। চার প্রকোষ্ঠবিশিষ্ট এবং প্রতি শুটিতে বীজের সংখ্যা ৭৫-৭৭টি। শুটিতে বারি তিল-২ এবং বারি তিল-৩ এর তুলনায় শতকরা ২০-২৪ভাগ বীজ বেশি থাকে।
৬. বীজের ত্বক খয়েরী বর্ণের যা বিদ্যমান জাত-দ্বয় টি-৬ ও বারি তিল-২ থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন।
তিল চাষাবাদ পদ্ধতি
১. বপনের সময়
তিল দুই মৌসুমে চাষ করা যায়। খরিফ-১ মৌসুমে অর্থাৎ মাঘ মাসের মাঝামাঝি হতে ফাল্গুন মাস পর্যন্ত (মধ্য ফেব্রুয়ারি হতে মার্চ) এবং খরিফ -২ মৌসুমের অর্থাৎ ভাদ্র মাস (মধ্য আগস্ট হতে মধ্য সেপ্টেম্বর) তিলের বীজ বপনের উত্তম সময়। খরিফ মৌসুমে আগাম বীজ বোনা অত্যন্ত জরুরি কারণ দেরীতে বপন করলে জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় মাসের অতি বৃষ্টি তিল ফসলের ক্ষতি করে থাকে। বাণিজ্যিক ভাবে তিল উৎপাদনের জন্য খরিফ-১ মৌসুমে বপন করা আবশ্যক।
২ . ফসলের পরিপক্কতা ও কর্তনের সময়
বারি তিল-৪ এর আয়ুষ্কাল ৯০-৯৫দিন। তিল গাছের সব শুটি এক সাথে পাকে না, সাধারণত: নিচের দিক থেকে পাকা শুরু করে উপরের দিকে অগ্রসর হয়। উপরের শুটি পাকা পর্যন্ত অপেক্ষা করলে নীচের শুটি ফেটে বীজ মাটিতে পড়ে যাবে ও ফলন কম হবে। তাই অপেক্ষা না করে তিল গাছের পাতা, কান্দ ও শুটির রং হলুদ-ভাব হলে কাছি দিয়ে গাছের গোঁড়া বরাবর কেটে আটি বাধতে হয়। আটিগুলো পেকে যাবে। পরে আটি খুলে গাছগুলো শুটি সহ রোদে ভাল করে শুকিয়ে লাঠি দিয়ে সাবধানে পিটিয়ে মাড়াই করে বীজ আলাদা করতে হবে এবং কুলো দিয়ে ঝেড়ে বীজ আবর্জনা মুক্ত করে ৪-৫ দিন ভাল করে রোদে শুকিয়ে নিতে হবে।
৩ . সারের ব্যবহার
সঠিক সময়ে পরিমিত সার প্রয়োগ করে তিলের ফলন বাড়ানো যায়। কৃষি পরিবেশ অঞ্চল (এইজেড ) অনুসারে সারের মাত্রার তারতম্য হয়। তিলের জন্য হেক্টর প্রতি সারের মাত্রা হলোঃ ইউরিয়াঃ ১০০-১২৫ কেজি, টিএসপিঃ ১৩০-১৫০কেজি, এমপিঃ ৪০-৫০ কেজি, জিপসামঃ ১০০-১১০কেজি, জিংক সালফেটঃ ৫কেজি, বরিক এসিডঃ ১০কেজি
তথ্যসূত্র: কৃষি তথ্য সার্ভিস
এজেড