শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

দেশে প্রতিবছর সীসা দূষণে ৩১ হাজার মানুষের মৃত্যু ঘটে: গবেষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮ জুন ২০২২, ০৫:৩৩ পিএম

শেয়ার করুন:

দেশে প্রতিবছর সীসা দূষণে ৩১ হাজার মানুষের মৃত্যু ঘটে: গবেষণা
ছবি: ঢাকা মেইল

সীসা বিষক্রিয়ায় মৃত্যুর হারের দিক থেকে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান চতুর্থ। প্রতিবছর সীসা দূষণের কারণে ৩১ হাজার মানুষের মৃত্যু ঘটে। এছাড়া দেশের তিন কোটি ৬০ লাখ শিশুর রক্তে উচ্চ মাত্রার সীসা রয়েছে। এর মধ্যে এক কোটির বেশি শিশুর শরীরে ১০ মাইক্রোগ্রাম পার ডেসিলিটারেরও অধিক সীসা রয়েছে।

বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে বুধবার (৮ জুন) বিকেলে রাজধানীর শেরে বাংলা নগরস্থ পরিবেশ অধিদফতরে আয়োজিত এক সেমিনারে ২০২০ সালের ইউনিসেফ ও পিওর আর্থ এক গবেষণার বরাত দিয়ে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।  


বিজ্ঞাপন


সেমিনারে বলা হয়, সীসা দূষণের কারণে ঝুঁকিতে আছে শিশুরা। সীসা একটি শক্তিশালী নিউরোটক্সিন যা শিশুদের মস্তিষ্কে অপূরণীয় ক্ষতি করে। এটি বিশেষ ফিরে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য ধ্বংসাত্মক পরিণতি বয়ে আনে।

এতে আরও বলা হয়, দেশের ৬০ শতাংশ শিশু সীসা বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত। এছাড়া প্রায় তিন কোটি ৬০ লাখ শিশুর রক্তে রয়েছে উচ্চ মাত্রার সীসার উপস্থিতি। এর মধ্যে এক কোটি শিশুর রক্তে রয়েছে ১০ মাইক্রোগ্রাম পার ডেসিলিটারেরও অধিক সীসা।

সেমিনারে সীসা দূষণ রোধে ১৮টি সুপারিশ করে পরিবেশ সম্পর্কিত সংগঠন ‘পিওর আর্থ’। সীসা দূষণ ঠেকাতে নীতিনির্ধারক ও প্রকল্প বাস্তবায়নকারীদের উদ্দেশ্যে তুলে ধরা ওই সুপারিশগুলো হলো-

১। সীসা দূষণ রোধে সম্পর্কিত মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে মিলে মাল্টি-স্টেকহোল্ডার পদক্ষেপ নেওয়া এবং এ সংশ্লিষ্ট সরকারি, বেসরকারি ও উন্নয়ন সহযোগীদের উদ্যোগের মধ্যে সমন্বয় নিশ্চিত করা।


বিজ্ঞাপন


২। এ বিষয়ে নির্দিষ্টকালের জন্য কর্মপরিকল্পনা হাতে নেওয়া।

৩। সীসার ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ ও দূষণ রোধে প্রয়োজনীয় নীতিমালা তৈরি করা।

৪। মসলা, খাদ্যদ্রব্য, গয়না, খেলনা ও রান্নার সরঞ্জামে সীসার যথেচ্ছ ব্যবহার বন্ধে আইনের যথাযথ প্রয়োগ বাস্তবায়ন করা।

৫। সীসাযুক্ত যে কোনো উপকরণে অতিরিক্ত শুল্কারোপ করে সীসার আমদানি ও ব্যবহার নিরুৎসাহিত করা।

৬। বিস্তৃত পরিসরে সীসা দূষণের ওপর গবেষণা পরিচালনা করা।

৭। সীসা দূষণের উৎসগুলোর ওপর একটি জাতীয় তালিকা প্রণয়ন করা।

৮। সীসার সংস্পর্শে আসার মতো উৎসগুলো শনাক্ত করতে কার্যকরী পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।

৯। পুরাতন ব্যবহৃত সীসা-অ্যাসিড ব্যাটারি রিসাইক্লিং বা পুনঃচক্রায়ন নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নেওয়া।

১০। নিয়ম বহির্ভূত, অবৈধ ব্যবহৃত/পুরাতন সিসা-অ্যাসিড ব্যাটারি পুনঃচক্রায়নের কারখানাগুলোকে তালিকাভুক্ত করা এবং কারখানাগুলো নিয়মিত নজরদারিতে নিয়ে আসা।

১১। সীসা শিল্পে জড়িত সব পেশার মানুষের স্বাস্থ্য ও ঝুঁকির প্রতি আরও বেশি মনোযোগ দেওয়া।

১২। অবৈধ সীসা কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের বিকল্প জীবিকার ব্যবস্থা করা।

১৩। সব শিল্পখাতে ফলপ্রসূ বর্জ্য-ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা।

১৪। রক্তে সীসার মাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য বিনিয়োগ করা, রক্তে সীসা শনাক্তকরণ কার্যক্রম জাতীয় পর্যায়ে নেওয়া এবং প্রাপ্ত তথ্য DHIS2-এ অন্তর্ভুক্ত
করা।

১৫। সীসার সংস্পর্শে আসা নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্যসেবা এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধি করা।

১৬। সীসা দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে ব্যাপক জনসচেতনতা তৈরি করা।

১৭। সংবাদপত্র এবং টিভি মিডিয়ার মাধ্যমে জনসচেতনতা তৈরি করা।

১৮। স্টেকহোল্ডারদের দক্ষতা এবং জ্ঞান বৃদ্ধিতে সীসা বিষয়ক বিভিন্ন প্রশিক্ষণ এবং ওয়ার্কশপের আয়োজন করা।


কারই/আইএইচ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর