কৃষকদের আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা দেওয়া, বীজের জাত, জমি প্রস্তুত প্রণালী থেকে ফসল বাজারজাতকরণ এসব বিষয়ে ধারণা দিতে প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করেছে প্রান্ত এগ্রো রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ।
সোমবার কুমিল্লার মেঘনা উপজেলায় আয়োজিত এই কর্মশালায় প্রধান প্রশিক্ষক ছিলেন মেঘনা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শাহ আলম। প্রান্তিক কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেন গার্ডেন ফ্রেশ বাংলাদেশ গ্রুপের প্রধান ইব্রাহিম মোশারফ।
বিজ্ঞাপন
আধুনিক কৃষির প্রতি প্রান্তিক কৃষকদের উৎসাহিত করার জন্য নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন খুলনা অঞ্চলের শ্রেষ্ঠ কৃষি উদ্যোক্তা শেখ ফয়সাল আহমেদ ও প্রান্ত এগ্রোর রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভের কৃষি কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম। এ সময় অভিজ্ঞ কৃষিবিদ ও উদ্যোক্তারা আধুনিক কৃষি সম্পর্কে আলোচনা করেন।
মেঘনা উপজেলা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা শতাধিক প্রান্তিক কৃষক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশ নেন।
কর্মশালায় আসা কৃষকরা জানান, আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি সম্পর্কে তাদের তেমন ধারণা নেই। জমিতে রোগবালাই লেগেই থাকতো।
প্রান্ত এগ্রোর আধুনিক পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ দেখে হরিপুরের কৃষক ইসমাইল কয়েকবছর আগে চাষ করেছিলেন তরমুজ। কিন্তু লোকসান গুনতে হয়েছে। কর্মশালায় তিনি জানান, এজন্য বাজার থেকে বীজও সংগ্রহ করেন। কিন্তু বীজ থেকে গাছ হলেও আর ফল আসেনি। কর্মশালায় এসে অনেক কিছু শিখলাম। শুধু বীজ কিনলেই হবে না, কোন জাতের বীজ কিনতে হবে সেটাও জানতে হবে।
বিজ্ঞাপন
মমিন ইসলাম নামে এক কৃষক বলেন, আমি আগের নিয়মে চাষাবাদ করি। মরিচ, টমেটো চাষ করতাম। আধুনিক পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা ছিল না। এখানে আধুনিক পদ্ধতির মরিচ আর টমেটো ক্ষেত দেখেছি। দেখলাম মাটিতে প্লাস্টিক বিছিয়ে এসব চাষ করেছে, পোকার আক্রমণও কম। কিন্তু আমাদের ফলনে রোগবালাই লেগেই থাকে।
প্রান্ত এগ্রোর রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ প্রকল্পের জেনারেল ম্যানেজার ফরিদ উদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘আমাদের কাজের মূল লক্ষ্য হলো গবেষণার মাধ্যমে কৃষির উন্নয়ন ঘটানো। নতুন-নতুন জাত বিশেষ করে বিদেশি জাতের উদ্ভাবন করা আমাদের লক্ষ্য, যাতে আমরা এর মধ্য দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করতে পারি। আমরা যে কাজগুলো করছি সেগুলোর সঙ্গে আমাদের কৃষক ভাইদের পরিচয় করে দিতে চাই। তাদেরকে এসবের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে চাই। যাতে তারা প্রথাগত চাষ বাদ দিয়ে আধুনিক চাষাবাদের মাধ্যমে প্রত্যাশিত ফলন পায়।
প্রান্ত এগ্রোর কৃষি কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের কৃষক ভাইয়েরা এখনো তাদের বাপ-দাদার আমলের কৃষি থেকে বের হতে পারেনি। একটা জমিতে যে একাধিক ফলন পাওয়া যায় তারা সেটা জানে না। তারা জানে না কীভাবে একটা জমি থেকে বছরে দুই থেকে তিনটা ফসল পাওয়া যায়। ফলে তারা লাভের মুখ দেখেন না। তাদের আধুনিক কৃষি সম্পর্কে জানানোর জন্যই আমরা এই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি।
এমআর