মৌসুমের সর্বোচ্চ ৪০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়। শুধু চুয়াডাঙ্গাই নয়, উত্তরাঞ্চলসহ দেশের একটি বড় অংশজুড়ে বিরাজ করছে তাপপ্রবাহ। এতে গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা। এর মধ্যেই আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আপাতত বৃষ্টির কোনো আভাস নেই। গরমের এই তীব্রতা অব্যাহত থাকবে।
দেশে আগামী ১১ এপ্রিল ঈদুল ফিতর হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। ওই দিন আবহাওয়া কেমন থাকতে পারে সেই আভাস দিয়েছেন আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ আব্দুর রহমান। শনিবার (৬ এপ্রিল) দুপুরে তিনি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ওইদিন বৃষ্টির সম্ভাবনা খুবই কম। তাপমাত্রার ঊর্ধ্বগতি অব্যাহত থাকবে। সেদিনও তীব্র গরম অনুভূত হতে পারে।
বিজ্ঞাপন
এই আবহাওয়াবিদ জানান, রোববার থেকে তাপমাত্রা কিছুটা কমতে থাকবে। দুই দিন একটু কমের দিকে থাকবে। এরপর আবার বাড়তে থাকবে তাপমাত্রা।
আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকাসহ দেশের চারটি বিভাগের বিভিন্ন জেলার ওপর দিয়েই মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বইছে। এসব এলাকায় তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা বা ‘হিট অ্যালার্ট’ জারি করা হয়েছে।
আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আবহাওয়ার এই অবস্থা আরও এক সপ্তাহ চলবে। তবে এপ্রিলজুড়েই সারাদেশে তাপপ্রবাহ থাকবে। এতে গরমের দাপট কমার সম্ভাবনা কম।
বিজ্ঞাপন
আজ আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়, শনিবার সকাল ৬টায় ঢাকায় বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৮৭ শতাংশ। আজ সারাদেশে দিনের তাপামাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। এছাড়া, কুষ্টিয়া ও চুয়াডাঙ্গা জেলাসহ রাজশাহী বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের যে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে- তা অব্যাহত থাকতে পারে। পাশাপাশি জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি অব্যাহত থাকতে পারে বলে আজ সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে।
আগামীকালের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসাথে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
আবহাওয়া চিত্রের সংক্ষিপ্তসারে জানানো হয়েছে, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, বাংলাদেশে প্রায় প্রতি বছরই এপ্রিল মাসে গড়ে সাধারণত দুই-তিনটি মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ ও এক-দুটি তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যায়। তবে তারা আশঙ্কা করছেন, এ বছরের তাপপ্রবাহের ব্যাপ্তিকাল বিগত বছরগুলোকে ছাড়িয়ে যাবে।
আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক জানিয়েছেন, বিদ্যমান তাপপ্রবাহের কারণে বাতাসে এখন জলীয়বাষ্পের আধিক্য থাকবে। এতে করে মানুষের শরীরে অস্বস্তিবোধ বৃদ্ধি হতে পারে। এপ্রিল উষ্ণতম মাস, এ সময় তাপমাত্রা এমনিতেও বেশি থাকে। কিন্তু এটিকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়া দরকার। যখন ঝড় হয়, তখন ভারী বৃষ্টি হয়। বৃষ্টি হলে তাপমাত্রা আর বাড়ে না। কিন্তু আপাতত ভারী বৃষ্টি হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
জেবি