বুধবার, ৮ জানুয়ারি, ২০২৫, ঢাকা

দেশের দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলে খরা ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩ নভেম্বর ২০২৩, ০৩:৩৮ পিএম

শেয়ার করুন:

দেশের দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলে খরা ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা
বরেন্দ্র অঞ্চলে দেখা দিচ্ছে খরা। ছবি: ঢাকা মেইল

তাপমাত্রা আরও দুই ডিগ্রি বাড়লে বর্তমানে বাংলাদেশের বরেন্দ্র অঞ্চলে যে খরা হচ্ছে তা ক্রমান্বয়ে দেশের দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এতে খাদ্য নিরাপত্তায় ব্যাপক প্রভাব পড়তে পারে বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. এ.এস.এম মাকসুদ কামাল।

একটি প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আসন্ন কপ২৮ এর সংবাদ গ্রহণের প্রস্তুতির লক্ষ্যে বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এবং প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) আয়োজনে ‘জার্নালিজম ইন দ্যা এজ অব ক্লাইমেট অ্যাকশন: কপ২৮ কাভারেজ স্ট্র্যাটিজিকস অ্যান্ড মেনটরিং’ শীর্ষক দুই দিনের এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়।


বিজ্ঞাপন


শুক্রবার (৩ নভেম্বর) সকাল ৯টা থেকে পিআইবি কনফারেন্স রুমে নয়টি পরিবেশবাদী সংগঠনের সহযোগিতায় শুরু হওয়া কর্মশালাটি চলবে আগামীকাল শনিবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত। এতে প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে কর্মরত সাংবাদিকদের জন্য ১২টি মডিউলে প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

পিআইবির মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয় বিষয়ক সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য রানা মোহাম্মদ সোহেল ও শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন কর্মশালার প্রধান সমন্বয়কারী, ক্যাপস এবং স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার। এতে প্রশিক্ষকদের মধ্যে রয়েছেন পরিবেশ ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত।

অধ্যাপক মাকসুদ কামাল বলেন, লস অ্যান্ড ড্যামেজ নিয়ে বিগত জলবায়ু সম্মেলনগুলোতে (কপ) আলোচনা হলেও ফান্ড নিয়ে তেমন কোনো কথা হয়নি। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তাপমাত্রা বাড়ছে এবং কোথাও কমছে। আর তাপমাত্রা বাড়ার কারণে মানুষের কর্মক্ষমতা কমে যাচ্ছে।

ঢাবির এই শিক্ষক বলেন, বর্তমানে গ্রিন ইন্ডাস্ট্রির ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তার জন্য যে অর্থায়ন প্রয়োজন তা কে দেবে? বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে বিশ্বের সপ্তম ক্ষতিগ্রস্ত দেশ। বিশ্বের তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি রাখতে পারলে দুর্যোগে ক্ষতি কম হবে।


বিজ্ঞাপন


অধ্যাপক মাকসুদ কামাল বলেন, বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দাবিদার দেশটি আমাদের নানাভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে চাচ্ছে। পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তেই আমরা বসবাস করি না কেন ধনি দেশগুলো যদি জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোতে ক্ষতিপূরণ না দেয়, তাহলে কোনো লাভ হবে না। আর এজন্য প্রয়োজন তথ্যপ্রবাহের বিপ্লব।

ঢাবির পরবর্তী ভিসি বলেন, কপে অনেক কথা হলেও ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো ক্ষতিপূরণ পায় না। কেননা ড্যামেজের কোনো নীতিমালা তৈরি হয়নি। কোন দেশের কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে বা হচ্ছে তা নির্ধারণ না হলে কীভাবে অর্থ পাবে?’

TTT
কর্মশালায় বক্তব্য দেন বিশিষ্টজনেরা। ছবি: ঢাকা মেইল

জাফর ওয়াজেদ বলেন, ‘প্যারিসে অনুষ্ঠিত কপ-সহ বিগত জলবায়ু সম্মেলনগুলোতে অনেক কথা বলা হয়েছে কিন্তু ফলাফল শূন্য। আসন্ন দুবাই সম্মেলন যাতে এই অবস্থায় না পড়ে সেটি খেয়াল রাখতে হবে।’

রানা মোহাম্মদ সোহেল বলেন, ‘পরিবেশের ক্ষতির ভুক্তভোগী দেশের তালিকায় বাংলাদেশ শুরুর দিকে। আমরা খুবই ঝুঁকির মধ্যে অবস্থায় আছি।’

কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন ক্লাইমেট পার্লামেন্ট বাংলাদেশের সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এমপি, সিপিআরডির মো. শামসুজ্জোহা প্রমুখ।

আগামীকালের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন, ফ্রান্স দূতাবাস বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ম্যারি মাসদুপুয় এবং সুইডেনের দূতাবাস, বাংলাদেশের ফার্স্ট সেক্রেটারি, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং ডেপুটি হেড, ডেভেলপমেন্ট কোঅপারেশন সেকশনের নাইওকা মার্টিনেজ ব্যাকস্ট্রোম।

প্রশিক্ষণ কর্মশালায় সহযোগী আয়োজক হিসেবে রয়েছে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ (সিথ্রিইআর), সেন্টার ফর পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (সিপিআরডি), চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভ, লিগ্যাল বি, লিগ্যাল ফোরাম বাংলাদেশ, নেচার কনজারভেশন ম্যানেজমেন্ট (ন্যাকম), পরিবেশ উদ্যোগ, সাউথ এশিয়ান ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরাম (এসএসিসিজেএফ) এবং ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস।

ডিএইচডি/জেবি

 

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর